ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপারেশন থিয়েটার থেকে নবজাতক গায়েব, চিকিৎসকের দাবি ভৌতিক গর্ভধারণ!

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 56

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক :পাবনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক নারীর অপারেশনের (সিজার) পর নবজাতক নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নবজাতক চুরি করে গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজন। তবে ডাক্তার বলছেন এটা ভৌতিক গর্ভধারণ।

গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পাবনার হাসপাতাল রোডের শাপলা প্লাস্টিক মোড়ের মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার একদিন পর ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারলে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

এদিন রাত ১০টার দিকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. শাহীন ফেরদৌস শানুর তত্ত্বাবধায়নে রোগীর অপারেশন সম্পন্ন হয়। অ্যানেসথেসিয়া হিসেবে ডা. শানুর স্বামী আরিফুল ইসলাম ও সহকারী ডা. শরীফুল ইসলাম সহযোগিতা করেন।

ভুক্তভোগী রোগী আকলিমা খাতুন আঁখি পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের মাসুমদিয়া ইউনিয়নের রতনগঞ্জের নজরুল ইসলাম গাছীর স্ত্রী ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের গোবিন্দপুরের আব্দুল মাজেদের মেয়ে।

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার রোগীকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি সহ সকল ডাক্তারি রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সিজার করার পর ডাক্তার বলছেন যে রোগীর গর্ভে কোন বাচ্চা ছিল না। এই কথা শোনার পর পরিবারের সদস্যরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। এমনটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে!

এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের রিপোর্ট রেখে সম্প্রতি করা রোগী সকল রিপোর্ট গায়েব করে দেন।

তারা আরও বলেন, অপারেশনের সময় একবার বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনা গেছে। হয়তো বাচ্চাটি তাদের ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে। নয়তোবা চুরি করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক সেলিম উদ্দিন বলেন, সিজারের রোগী হিসেবেই ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু রোগীর কোন বাচ্চা ছিল না। অন্য কোনো সমস্যা ছিল। যেটা ডাক্তারটা অপারেশনের মাধ্যমে সমাধান করেছেন। কিন্তু এখন রোগীর স্বজনরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

ডা. শাহীন ফেরদৌস শানু বলেন, সিজারের রোগী হিসেবেই অপারেশন করতে গিয়ে দেখি তাদের ২০১৭ সালের কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু আমার আগের রোগী হওয়ায় এবং রোগীর অবস্থা বিবেচনায় অপারেশন করি। কিন্তু কোনো বাচ্চা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অলৌকিক দাবি করে এই চিকিৎসক আরও বলেন, এটা ভৌতিক গর্ভধারণ ছিল। এই ধরনের গর্ভপাতকে আমরা ভৌতিক গর্ভপাত বলে থাকি। এটা এক ধরনের রোগ।

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা বা চুরির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এটা বলা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে সকল কাগজপত্র দেখে ও তদন্ত সাপেক্ষে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অপারেশন থিয়েটার থেকে নবজাতক গায়েব, চিকিৎসকের দাবি ভৌতিক গর্ভধারণ!

পোস্ট হয়েছে : ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক :পাবনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক নারীর অপারেশনের (সিজার) পর নবজাতক নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নবজাতক চুরি করে গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজন। তবে ডাক্তার বলছেন এটা ভৌতিক গর্ভধারণ।

গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পাবনার হাসপাতাল রোডের শাপলা প্লাস্টিক মোড়ের মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার একদিন পর ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারলে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

এদিন রাত ১০টার দিকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. শাহীন ফেরদৌস শানুর তত্ত্বাবধায়নে রোগীর অপারেশন সম্পন্ন হয়। অ্যানেসথেসিয়া হিসেবে ডা. শানুর স্বামী আরিফুল ইসলাম ও সহকারী ডা. শরীফুল ইসলাম সহযোগিতা করেন।

ভুক্তভোগী রোগী আকলিমা খাতুন আঁখি পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের মাসুমদিয়া ইউনিয়নের রতনগঞ্জের নজরুল ইসলাম গাছীর স্ত্রী ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের গোবিন্দপুরের আব্দুল মাজেদের মেয়ে।

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার রোগীকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি সহ সকল ডাক্তারি রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সিজার করার পর ডাক্তার বলছেন যে রোগীর গর্ভে কোন বাচ্চা ছিল না। এই কথা শোনার পর পরিবারের সদস্যরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। এমনটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে!

এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের রিপোর্ট রেখে সম্প্রতি করা রোগী সকল রিপোর্ট গায়েব করে দেন।

তারা আরও বলেন, অপারেশনের সময় একবার বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনা গেছে। হয়তো বাচ্চাটি তাদের ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে। নয়তোবা চুরি করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক সেলিম উদ্দিন বলেন, সিজারের রোগী হিসেবেই ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু রোগীর কোন বাচ্চা ছিল না। অন্য কোনো সমস্যা ছিল। যেটা ডাক্তারটা অপারেশনের মাধ্যমে সমাধান করেছেন। কিন্তু এখন রোগীর স্বজনরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

ডা. শাহীন ফেরদৌস শানু বলেন, সিজারের রোগী হিসেবেই অপারেশন করতে গিয়ে দেখি তাদের ২০১৭ সালের কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু আমার আগের রোগী হওয়ায় এবং রোগীর অবস্থা বিবেচনায় অপারেশন করি। কিন্তু কোনো বাচ্চা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অলৌকিক দাবি করে এই চিকিৎসক আরও বলেন, এটা ভৌতিক গর্ভধারণ ছিল। এই ধরনের গর্ভপাতকে আমরা ভৌতিক গর্ভপাত বলে থাকি। এটা এক ধরনের রোগ।

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা বা চুরির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এটা বলা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে সকল কাগজপত্র দেখে ও তদন্ত সাপেক্ষে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: