ঢাকা , বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্রুত জাতীয় দলে নেওয়া হয়েছে তৌহিদ হৃদয়কে: মাশরাফি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 13

ক্রীড়া ডেস্ক: বিপিএলের ফাইনাল চলাকালীন জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। বিপিএলে তার টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং পারফরম্যান্সকে মূল্যায়ন করে নেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াডে। শোনা যাচ্ছে, তামিম ইকবালের আগ্রহেই যুব বিশ্বকাপজয়ী এ ক্রিকেটারকে ওয়ানডে দলের ১৪ জনের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।

তরুণ ক্রিকেটারকে খুব কাছ থেকে বিপিএলে দেখেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি মনে করছেন, একটু দ্রুতই তৌহিদ হৃদয়কে জাতীয় দলে ডাকা হলো। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ওপর পূর্ণ আস্থা থাকলেও মাশরাফি মনে করছেন, আরেকটু সময় নেওয়া উচিত ছিল।

বিপিএলের শুরু থেকে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তৌহিদ। শুরুর তিন ম্যাচেই তার ব্যাট থেকে আসে বিস্ফোরক তিন ফিফটি। এরপর ইনজুরিতে ছন্দপতন। ফিরে এসে থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন। এরপর আবার দ্যূতি ছড়ান। যদিও শেষটা হয়েছে বিবর্ণ। তবুও রান তোলায় তিনে আছেন সিলেটের এ ক্রিকেটার। ১৩ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ৪০৩ রানে মৌসুম শেষ করেছেন। প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার শেষ এক বছর ধারাবাহিক পারফর্ম করে আসছিলেন। বিপিএলের পারফরম্যান্সের সুবাদে লাইমলাইটে আসেন। এবার সেখান থেকে সরাসরি জাতীয় দলে।

বিপিএলে তার পারফরম্যান্স তুলে আনতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন মাশরাফি। পূর্ণ স্বাধীনতা, আক্রমণাত্মক খেলার লাইসেন্স এবং ধারাবাহিক সুযোগ দিয়ে হৃদয়কে পারফর্ম করার উন্মুক্ত মঞ্চ দিয়েছিলেন। দুহাত ভরে সেই সুযোগ দিয়ে হৃদয় উড়েছেন আপন ছন্দে। ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন। তাতে খুলে গেছে জাতীয় দলের দুয়ার। তবে মাশরাফি আরেকটু সময় নিয়ে তাকে জাতীয় দলে খেলানোর পক্ষে।

‘তৌহিদ হৃদয় ইজ ভেরি আর্লি স্টেজ। আমাকে যদি বলেন…আমি হয়তো আরেকটু সময় নিতাম ওর ক্ষেত্রে। ভেরি আর্লি স্টেজ।’

কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন মাশরাফি,‘জাতীয় দলে গিয়ে একটা দেশের সেরা পাঁচজন বোলার থাকবে। আমি আশা করি না ও এসেই…ভালো খেললে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশায় একটু লাগাম থাকা উচিত তৌহিদ হৃদয়ের কাছ থেকে। ছেলেটাকে খুবই তাড়াতাড়ি নেওয়া হয়েছে। এটা আমার কাছে মনে হয়, আমার মতামত দিচ্ছি। এমন না হয় নিয়ে আবার রান না করলে ফেলে দেওয়া হয়।’

মাশরাফি উদাহরণ দিয়েছেন লিটন ও শান্তর,‘লিটনকে যেভাবে সেট করেছেন, শান্তকে যেভাবে করছেন। দেখেন, প্রচুর চাপ কিন্তু ওরাই নেয়। আপনারাও লেখেন, আমরাও বাইরে থেকে বিভিন্ন কথা বলি। কিন্তু চাপটা শেষ অবধি কিন্তু ওই খেলোয়াড়ের ওপর চলে আসে। খেলোয়াড়তে তৈরি করতে হলে তাকে তো ওই পরিমাণ সুযোগ বা বিভিন্ন জায়গায় খেলিয়ে খেলিয়ে প্রস্তুত করতেই হবে। আল্টিমেটলি জাতীয় দলে গিয়ে বারবার একটা প্লেয়ারকে সেট করা দলের জন্যও যেমন কঠিন হয়ে যায়, ওই খেলোয়াড়ের জন্যও কঠিন হয়ে যায়।’

তবে তৌহিদ হৃদয়ের উপর পূর্ণ আস্থা আছে সে কথা বলতে পিছপা হননি মাশরাফি, ‘আমি তৌহিদ হৃদয়ের কথা একটু বলবো, ফ্যান্টাসটিক প্লেয়ার, এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছে। আমি তাকে শুভকামনা জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে আমার ক্ষেত্রে বলবো যদি তিনটা-চারটা, পাঁচটা ম্যাচ রান না করে আমি অবাক হবো না। কারণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ সহজ নয়। ওখানে অনেক রকম চাপ থাকবে, আমি আশা করবো যে ও চাপমুক্ত খেলুক।’

‘আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম চার-পাঁচ ম্যাচ, সাত ম্যাচ কিন্তু পারফর্ম করা সহজ নতুন খেলোয়াড়ের জন্য জাতীয় দলে। কিন্তু আপনি যখন ধারাবাহিকভাবে খেলা শুরু করবেন। দিন যত যাবে, তত কঠিন হবে। কারণ কম্পিউটার অ্যানালিস্ট থাকে, আপনার দুর্বল জায়গা চার্জ করবে। আমি আশা করি ও মানিয়ে নিতে পারবে। দারুণ প্লেয়ার তবে একটু আর্লি…।’

বিজনেস আওয়ার/১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দ্রুত জাতীয় দলে নেওয়া হয়েছে তৌহিদ হৃদয়কে: মাশরাফি

পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক: বিপিএলের ফাইনাল চলাকালীন জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। বিপিএলে তার টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং পারফরম্যান্সকে মূল্যায়ন করে নেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াডে। শোনা যাচ্ছে, তামিম ইকবালের আগ্রহেই যুব বিশ্বকাপজয়ী এ ক্রিকেটারকে ওয়ানডে দলের ১৪ জনের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।

তরুণ ক্রিকেটারকে খুব কাছ থেকে বিপিএলে দেখেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি মনে করছেন, একটু দ্রুতই তৌহিদ হৃদয়কে জাতীয় দলে ডাকা হলো। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ওপর পূর্ণ আস্থা থাকলেও মাশরাফি মনে করছেন, আরেকটু সময় নেওয়া উচিত ছিল।

বিপিএলের শুরু থেকে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তৌহিদ। শুরুর তিন ম্যাচেই তার ব্যাট থেকে আসে বিস্ফোরক তিন ফিফটি। এরপর ইনজুরিতে ছন্দপতন। ফিরে এসে থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন। এরপর আবার দ্যূতি ছড়ান। যদিও শেষটা হয়েছে বিবর্ণ। তবুও রান তোলায় তিনে আছেন সিলেটের এ ক্রিকেটার। ১৩ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ৪০৩ রানে মৌসুম শেষ করেছেন। প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার শেষ এক বছর ধারাবাহিক পারফর্ম করে আসছিলেন। বিপিএলের পারফরম্যান্সের সুবাদে লাইমলাইটে আসেন। এবার সেখান থেকে সরাসরি জাতীয় দলে।

বিপিএলে তার পারফরম্যান্স তুলে আনতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন মাশরাফি। পূর্ণ স্বাধীনতা, আক্রমণাত্মক খেলার লাইসেন্স এবং ধারাবাহিক সুযোগ দিয়ে হৃদয়কে পারফর্ম করার উন্মুক্ত মঞ্চ দিয়েছিলেন। দুহাত ভরে সেই সুযোগ দিয়ে হৃদয় উড়েছেন আপন ছন্দে। ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন। তাতে খুলে গেছে জাতীয় দলের দুয়ার। তবে মাশরাফি আরেকটু সময় নিয়ে তাকে জাতীয় দলে খেলানোর পক্ষে।

‘তৌহিদ হৃদয় ইজ ভেরি আর্লি স্টেজ। আমাকে যদি বলেন…আমি হয়তো আরেকটু সময় নিতাম ওর ক্ষেত্রে। ভেরি আর্লি স্টেজ।’

কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন মাশরাফি,‘জাতীয় দলে গিয়ে একটা দেশের সেরা পাঁচজন বোলার থাকবে। আমি আশা করি না ও এসেই…ভালো খেললে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশায় একটু লাগাম থাকা উচিত তৌহিদ হৃদয়ের কাছ থেকে। ছেলেটাকে খুবই তাড়াতাড়ি নেওয়া হয়েছে। এটা আমার কাছে মনে হয়, আমার মতামত দিচ্ছি। এমন না হয় নিয়ে আবার রান না করলে ফেলে দেওয়া হয়।’

মাশরাফি উদাহরণ দিয়েছেন লিটন ও শান্তর,‘লিটনকে যেভাবে সেট করেছেন, শান্তকে যেভাবে করছেন। দেখেন, প্রচুর চাপ কিন্তু ওরাই নেয়। আপনারাও লেখেন, আমরাও বাইরে থেকে বিভিন্ন কথা বলি। কিন্তু চাপটা শেষ অবধি কিন্তু ওই খেলোয়াড়ের ওপর চলে আসে। খেলোয়াড়তে তৈরি করতে হলে তাকে তো ওই পরিমাণ সুযোগ বা বিভিন্ন জায়গায় খেলিয়ে খেলিয়ে প্রস্তুত করতেই হবে। আল্টিমেটলি জাতীয় দলে গিয়ে বারবার একটা প্লেয়ারকে সেট করা দলের জন্যও যেমন কঠিন হয়ে যায়, ওই খেলোয়াড়ের জন্যও কঠিন হয়ে যায়।’

তবে তৌহিদ হৃদয়ের উপর পূর্ণ আস্থা আছে সে কথা বলতে পিছপা হননি মাশরাফি, ‘আমি তৌহিদ হৃদয়ের কথা একটু বলবো, ফ্যান্টাসটিক প্লেয়ার, এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছে। আমি তাকে শুভকামনা জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে আমার ক্ষেত্রে বলবো যদি তিনটা-চারটা, পাঁচটা ম্যাচ রান না করে আমি অবাক হবো না। কারণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ সহজ নয়। ওখানে অনেক রকম চাপ থাকবে, আমি আশা করবো যে ও চাপমুক্ত খেলুক।’

‘আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম চার-পাঁচ ম্যাচ, সাত ম্যাচ কিন্তু পারফর্ম করা সহজ নতুন খেলোয়াড়ের জন্য জাতীয় দলে। কিন্তু আপনি যখন ধারাবাহিকভাবে খেলা শুরু করবেন। দিন যত যাবে, তত কঠিন হবে। কারণ কম্পিউটার অ্যানালিস্ট থাকে, আপনার দুর্বল জায়গা চার্জ করবে। আমি আশা করি ও মানিয়ে নিতে পারবে। দারুণ প্লেয়ার তবে একটু আর্লি…।’

বিজনেস আওয়ার/১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: