বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহুতল ভবনের সংজ্ঞা সুস্পষ্ট করা জরুরী বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। একই সাথে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি অনতিবিলম্বে গঠন করাও জরুরি। গতকাল সোমবার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের বর্ষপূর্তির সময়ই গুলশান এলাকার বহুতল আবাসিক ভবনের ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যা নগর এলাকায় অগ্নিদুর্যোগে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কার বিপরীতে আমাদের ভবনসমূহের অভ্যন্তরীণ অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার সীমাহীন দুর্বলতা ও নগর সংস্থার সার্বিক পরিকল্পনা, প্রস্তুতি, নজরদারি ও আইনের প্রয়োগের দুর্বলতার বিষয়টি আবার ও সামনে নিয়ে এসেছে।
তুরস্ক-সিরিয়ার সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্প দুর্যোগে ব্যাপক প্রাণহানির কারণে আমাদের নগরসমূহের ভূমিকম্পসহ সার্বিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতির ব্যাপক ঘাটতির বিষয়গুলো সাম্প্রতিক সময়ে জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকাসহ সারা দেশের নগর এলাকায় ব্যবসায়িক লাভকে বাড়ানোর অসদুদ্দেশ্য বিকল্প সিঁড়ি ও নির্গমন পথ, ফায়ার লিফট, ফায়ার ডোর, ফায়ার ডিটেক্টর, ফায়ার স্প্রিংক্লার, ফায়ার সাপ্রেশন সিস্টেম প্রভৃতি অগ্নি নির্বাপণ সিস্টেমের যথাযথ ব্যবস্থা না করেই বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো ধরনের অকুপেন্সি সনদ ছাড়াই এই ভবনগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকাতেই অত্যন্ত সরু রাস্তার পাশেই ১০-১২ তলা বা ততোধিক উচ্চতার বহুতল ভবন নির্মাণ মানদণ্ড বা অগ্নি নিরাপত্তা ব্যতিরেকেই গড়ে উঠছে। এমনকি সম্প্রতি ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েও ছোট রাস্তার পাশে, যেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে অক্ষম, সেসব রাস্তায় বহুতল ভবনের নির্মাণ অনুমোদনের দাবিতে অনেক গোষ্ঠী ও মহলকে সরকারের ওপর প্রবল চাপ তৈরি করতে দেখা গেছে।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিশ্বাস করে, মানুষের জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে বহুতল ভবনসহ নগরে অগ্নি ও দুর্যোগজনিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডেভেলপার ও ভবন মালিকদের দায়বদ্ধতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সকল নগর সংস্থাগুলোকে জবাবদিহিতায় আনা প্রয়োজন। পাশাপাশি বহুতল ভবনের সংজ্ঞায়নে অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত ফায়ার সার্ভিসের আইনকে প্রাধান্য দিয়ে ইমারত ও নির্মাণ সংক্রান্ত বিধিমালার প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা দরকার।
বিজনেস আওয়ার/২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এমএজেড