ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লোকসানে ডুবেছে আরামিট সিমেন্ট, পরিচালন হুমকিতে

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 67

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরামিট সিমেন্ট লোকসানে ডুবেছে। লোকসান পরিমান এতো বেশি যে, কোম্পানিটির সুষ্ঠভাবে পরিচালন ব্যয় জোগান নিয়ে হুমকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা।

তারা বলছেন, কোম্পানিটি সর্বশেষ দুই প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ২য় প্রান্তিকে বা ৩ মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়ায় ১৭ কোটি টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া কোম্পানিটিকে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের লোনের বোঝা। সবমিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছে কোম্পানিটি। এমন অবস্থায় কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় জোগাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান তারা।

এদিকে আরামিট সিমেন্টের দ্বিতীয় প্রান্তিক বা শেষ তিন মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১৩৫ শতাংশ। আর দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাস (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ৮৭ শতাংশ। কোম্পানিটি দুই প্রান্তিকেই লোকসান বেশি গুনতে হয়েছে। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২১ সাল) লোকসান কম ছিল।

কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

আরামিট সিমেন্টের চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ৪ দশমিক ১১ টাকা। এ হিসাবে লোকসান বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৮ টাকা বা ৮৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

এই কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ২য় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ২ দশমিক ১৫ টাকা। এ হিসাবে লোকসান পরিমান বেড়েছে ২ দশমিক ৯০ টাকা বা ১৩৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৯৩ টাকায়।

লোকসান প্রসঙ্গে আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামান বলেন, ডলারের রেট অস্বাভাবিক বেড়েছে। আবার দীর্ঘদিন আমাদের এলসি বন্ধ ছিল। এসব কারনে সিমেন্ট উৎপাদনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনা যায়নি। এর ফলে গত বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কোম্পানির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। যা চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) ১৫ তারিখে উৎপাদন শুরু হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেলে ধস নামে। ফলে মুনাফা বদলে লোকসান গুনতে হয়েছে।

কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু সমস্যা হবে। তবে, অনেক জটিলতা কাঁটিয়ে আরামিট সিমেন্ট উৎপাদনে নেমেছে। এরপরও কিছু সমস্যা রয়েছে, তাও দূর হবে। সামনে কোম্পানিটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লোকসানে ডুবেছে আরামিট সিমেন্ট, পরিচালন হুমকিতে

পোস্ট হয়েছে : ১২:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরামিট সিমেন্ট লোকসানে ডুবেছে। লোকসান পরিমান এতো বেশি যে, কোম্পানিটির সুষ্ঠভাবে পরিচালন ব্যয় জোগান নিয়ে হুমকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা।

তারা বলছেন, কোম্পানিটি সর্বশেষ দুই প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ২য় প্রান্তিকে বা ৩ মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়ায় ১৭ কোটি টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া কোম্পানিটিকে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের লোনের বোঝা। সবমিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছে কোম্পানিটি। এমন অবস্থায় কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় জোগাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান তারা।

এদিকে আরামিট সিমেন্টের দ্বিতীয় প্রান্তিক বা শেষ তিন মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১৩৫ শতাংশ। আর দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাস (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ৮৭ শতাংশ। কোম্পানিটি দুই প্রান্তিকেই লোকসান বেশি গুনতে হয়েছে। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২১ সাল) লোকসান কম ছিল।

কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

আরামিট সিমেন্টের চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ৪ দশমিক ১১ টাকা। এ হিসাবে লোকসান বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৮ টাকা বা ৮৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

এই কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ২য় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৫ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ২ দশমিক ১৫ টাকা। এ হিসাবে লোকসান পরিমান বেড়েছে ২ দশমিক ৯০ টাকা বা ১৩৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৯৩ টাকায়।

লোকসান প্রসঙ্গে আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামান বলেন, ডলারের রেট অস্বাভাবিক বেড়েছে। আবার দীর্ঘদিন আমাদের এলসি বন্ধ ছিল। এসব কারনে সিমেন্ট উৎপাদনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনা যায়নি। এর ফলে গত বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কোম্পানির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। যা চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) ১৫ তারিখে উৎপাদন শুরু হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেলে ধস নামে। ফলে মুনাফা বদলে লোকসান গুনতে হয়েছে।

কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু সমস্যা হবে। তবে, অনেক জটিলতা কাঁটিয়ে আরামিট সিমেন্ট উৎপাদনে নেমেছে। এরপরও কিছু সমস্যা রয়েছে, তাও দূর হবে। সামনে কোম্পানিটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: