শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সর্বশেষ ৯ বছরে শতাধিক সংস্কার করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সদ্য বিদায়ি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে এই সংস্কার করা হয়েছে। এরমধ্যে নতুন আইন করা, বিদ্যমান আইনের সংশোধনী, বিধিমালা তৈরী ও সংশোধনসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা সংস্কার করা হয়েছে।
শেয়ারবাজারে ২০১০ সালের ধসে বিএসইসি ঢেলে সাজানো হয়। এর আলোকে ২০১১ সালের ১৫ মে বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। এছাড়া একইসময়ে নতুন ৪ কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের কারন অনুসন্ধানে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির বিএসইসিকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শের আলোকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার ৩ বছরের জন্য খায়রুল হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যা শেষ হওয়ার আগেই পূণ:নিয়োগ পান তিনি। তবে এক্ষেত্রে তিনি ৪ বছরের জন্য পূণ:নিয়োগ পান। কারণ এরইমধ্যে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ ৩ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৪ বছর করা হয়। এরপরে আরেক দফায় ২ বছরের জন্য পূণ:নিয়োগ দেয়। তার এই ৩ দফায় নিয়োগের ৯ বছর পূর্ণ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (১৪ মে)।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের গত ৯ বছরে ১০৩টি সংস্কারের বিস্তারিত তুলে ধরা হল-
আইন প্রণয়ন/সংশোধন :
গত ৯ বছরে ২টি আইন সংশোধন ও ১টি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ সংশোধন করা হয়েছে। আর এক্সচেঞ্জসমূহের ডিমউচুয়ালাইজেশনের জন্য এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
নতুন বিধি প্রণয়ন :
৪. ডেট সিকিউরিটিজ ইস্যু করার জন্য Securities and Exchange Commission (Private Placement of Debt Securities) Rules, ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ অক্টোবরের পূর্বে ডেট সিকিউরিটিজ ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের জন্য আলাদা কোন বিধিমালা ছিল না এবং বেশিরভাগ ইস্যুয়ারেরই দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য ব্যাংকে যেতে হতো। দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য পূঁজিবাজার হতে ইস্যুয়ার কোম্পানী কর্তৃক মূলধন সংগ্রহের নিমিত্ত এই বিধিমালাটি এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। উল্লেখ্য, এই বিধিমালা প্রণয়নের পর কোম্পানীসমূহ ডেট সিকিউরিটিজ ইস্যুর মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছে।
৫. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Research Analysis) Rules, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। পুঁজিবাজার এর উপর গবেষণাকে একটি আইনী কাঠামোতে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা করার জন্য এই বিধিমালা জরুরি। এটি গবেষকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং তাদেরকে শৃঙ্খলায় আনতে সহায়তা করে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষণ বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগের আগেই কোনও সিকিউরিটির অন্তর্নিহিত মূল্য নির্ণয়ে এবং বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
৬. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Alternative Investment) Rules, ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই বিধিমিালা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড, প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ড এবং ইমপ্যাক্ট ফান্ডসহ বিকল্প বিনিয়োগের নিবন্ধন এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযোজ্য। নিবন্ধিত তহবিল ব্যবস্থাপক এই বিধিমালার অধীনে ট্রাস্ট ফর্মে তহবিল গঠন করে স্টার্ট-আপ (start-up) ও ছোট মূলধনী কোম্পানীতে এই তহবিল বিনিয়োগ করছেন। ব্যাংক বা এনবিএফআই হতে কোনও র্স্টাট-আপ কোম্পানী এবং এসএমই কর্তৃক প্রাথমিক মূলধন বা তহবিল সংগ্রহ করা খুব কঠিন। বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল থেকে স্টার্ট-আপ এবং ছোট মূলধনী কোম্পানি কর্তৃক মূলধন বা তহবিল উত্তোলনের লক্ষ্যে এই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
৭. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Exchange Traded Fund) Rules, ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে। ইটিএফ-এর গঠন, নিবন্ধন, সাবস্ক্রিপশন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে বিধান অন্তর্ভুক্ত করে এই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই বিধিমালা প্রণয়নের ফলে বিনিয়োগকারীদের স্বল্প মূল্যে স্টক আকারে বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটির দ্রুত মালিকানা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হলো। এটি বাজারে নিয়োগকারীদেরকে নির্দিষ্ট এক্সপোজারের জন্য সহায়তা করবে।
৮. বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) বিধিমালা, ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর পূর্বে ২০১১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে “জেনে ও বুঝে বিনিয়োগ করুন” স্লোগান চালু করার জন্য কমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই বিধিমালা বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বাড়াতে বিস্তারিত নির্দেশিকা এবং কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করে। বিনিয়োগ শিক্ষা হল অর্থের ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জ্ঞান। এটি একই সংগে আর্থিক জালিয়াতি থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি আর্থিক সুরক্ষার জন্য পরিকল্পনার সুবিধা দেয়। গ্রাহকদেরকে আর্থিক বাজারের বিভিন্ন পণ্য এবং বিনিয়োগের উপযুক্ততা মূল্যায়নের জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং দক্ষতা দেয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার জন্য, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার এবং সম্মেলনের মাধ্যমে আর্থিক পরিকল্পনা, বিনিয়োগের মূল বিষয়গুলি এবং সাধারণ জ্ঞানের আলোকপাত এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগ শিক্ষা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
৯. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট) বিধিমালা, ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। এক্সচেঞ্জ হতে ক্লিয়ারিং ও সেটল্মেন্ট কার্যক্রম পৃথক করার জন্য একটি স্বতন্ত্র সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) কোম্পানী প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, ইহা সেটল্মেন্ট ঝুঁকি হ্রাস করবে। সিসিবিএল প্রধানত প্রতিটি বিক্রেতার কাছে ক্রেতা এবং প্রতিটি ক্রেতার কাছে বিক্রেতা হয়ে কাজ করে। এর ভিত্তিতে সিসিবিএল এর কোনও সদস্য খেলাপি থাকলেও সিসিবিএল অন্য সদস্যদের নির্ধারিত দায় নিষ্পত্তির নিশ্চয়তা দেয়। কাউন্টারপার্টি হতে কাউন্টারপার্টি খেলাপি হওয়ার বিস্তার হতে পারে এরূপ ঝুঁকি হ্রাস করার মাধ্যমে একটি দক্ষ ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা পদ্ধতিগত ঝুঁকি হ্রাস করে।
১০. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Investment Sukuk) Rules, ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। সুকুক পণ্য ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন উত্তোলনের জন্য এই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদেরকে ইসলামী ফিন্যান্সের বিপুল সুযোগে আকৃষ্ট করা এবং তহবিল সংগ্রহের নিমিত্ত ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে এ বিধিমালা বিরাট সুযোগ প্রদান করবে। এই উদ্যোগটি পরিবেশবান্ধব প্রকল্পগুলির অর্থায়নে ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার ব্যবহারসহ পরিবেশ দূষন প্রশমন সংক্রান্ত প্রচেষ্টার সমর্থনে ভুমিকা রাখবে। এটি পরিবেশ পরিবর্তনের ঋণাত্মক ঝুকি মোকাবেলায় ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার টেকসই ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক উপাদানগুলিও অনুসন্ধান করবে।
১১. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Exchange Traded Derivatives) Rues, ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বাজারে ইনডেক্স ও বিভিন্ন সিকিউরিটিজের ডেরিভেটিভস প্রোডাক্ট আসলে বিনিয়োগ ঝুঁকি মোকাবিলায় Hedging পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে।
১২. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Short-Sale) Rules, ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ বিধিমালায় শর্ট সেল কাঠামো ও প্রক্রিয়া তথা নিষ্পত্তির ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কে স্টক ডিলার এবং স্টক ব্রোকারদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। শর্ট সেল-এ একজন বিনিয়োগকারী কোনও ব্রোকারের কাছ থেকে কোনো সিকিউরিটি ধার করে এই সমঝোতার মাধ্যমে যে, পরবর্তী সময়ে এই সিকিউরিটি কেনা হবে এবং ব্রোকারের কাছে ফেরত প্রদান করা হবে। শেয়ারটির মূল্য কমে গেলে বিনিয়োগকারী তা কম দামে ক্রয় করে ধারকৃত শেয়ার ফেরত দেয়ার মাধ্যমে লেনদেন করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।
১৩. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Risk Based Capital Adequacy) Rules, ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তাদের বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকদের সুরক্ষার পাশাপাশি একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য ন্যূনতম রেগুলেটরী ও সার্বক্ষনিক মূলধনের প্রয়োজনীয়তা আরোপ করতে এই বিধিমালা প্রণীত হয়েছে।
বিদ্যমান বিধি-বিধান সংশোধন :
১৪. বিশেষ অডিট অন্তর্ভুক্ত করে Securities and Exchange Rules, ১৯৮৭ সংশোধন করা হয়েছে, যা নিরীক্ষকের প্রতিবেদনের মান এবং নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর উপর আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।
১৫. সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বিধিমালা, ১৯৯৬ এর সংশোধন করা হয়েছে।
১৬. সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ সংশোধন করা হয়েছে।
১৭. সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ সংশোধন করা হয়েছে।
১৮. Securities and Exchange Commission (Over-the-Counter) Rules, ২০০১ সংশোধন করা হয়েছে।
১৯. Securities and Exchange Commission (Issue of Capital) Rules, ২০০১ সংশোধন করা হয়েছে।
২০. ডিপজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩ সংশোধন করা হয়েছে।
২১. Securities and exchange Commission (Rights Issue) Rules, ২০০৬ এর সংশোধন করা হয়েছে, যাতে অন্যান্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে, পূর্ববর্তী বছরে লাভের রেকর্ড, কোনও ইস্যুয়ার কোম্পানী যদি বাণিজ্যিক পরিচালনায় না থাকে এবং রাইট ইস্যুর পূর্ববর্তী তিন বছরে মুনাফা করতে না পারে তবে এই কোম্পানী অভিহিত মূল্যের বেশী মূল্যে রাইট শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না, প্রিমিয়ামে রাইট অফারের জন্য ইস্যুয়ারের ক্রেডিট রেটিং প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক সংক্ষিপ্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং পাঁচ বছর বা প্রযোজ্য সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য লভ্যাংশ প্রদান করা সম্পর্কে নিরীক্ষকের প্রশংসাপত্র প্রয়োজন হবে।
২২. এসআরও নং ২৬-আইন/২০১৪ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকুরী বিধিমালা, ২০১৪ শিরোনামে পূর্বের সংশ্লিষ্ট প্রবিধানমালা বাতিল করে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ১৬ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখের পত্র নং- ৫৩.০০.০০০০.২৮.০০১.১৯-১৬৫ এর মাধ্যমে বিএসইসি‘তে ১৮০টি নতুন কর্মচারির পদ সৃষ্টি এবং কয়েকটি পদের বেতন গ্রেড উন্নীত করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর পত্র নং – ৫৩.০০.০০০০.৪২১.২৮.০০১-১৯- ১৮৬ এর মাধ্যমে বিএসইসি‘তে অফিস সহায়কদের ২৫টি (পঁচিশ) পদ সৃষ্টি করেছে।
২৩. ভাল মৌল ভিত্তিসম্পন্ন সিকিউরিটিজের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য, Bangladesh Securities and Exchange Commission (Public Issue) Rules, ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতি, বুক-বিল্ডিং পদ্ধতি, দরখাস্ত জমা ও প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি, বুক-বিল্ডিং পদ্ধতির আওতায় কাট-অফ প্রাইস (cut off price) নির্ধারণে ইলেকট্রনিক বিডিং এর মাধ্যমে ডাচ অকশন, আন্ডার রাইটিং, অফারযোগ্য সিকিউরিটিজের বন্টনের কোটা, শেয়ারের লক-ইন, প্রসপেক্টাসে প্রকাশের বিষয়সমূহ এবং অনুমোদন ও জারিকরণ প্রক্রিয়া পরির্বতন বা সংযোজন করে এই বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে।
২৪. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বাজার সৃষ্টিকারী) বিধিমালা, ২০১৭ শিরোনামে পূর্বের সংশ্লিষ্ট বিধিমালার পরিবর্তে সম্পূর্ণ নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
২৫. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার অর্জন, অধিগ্রহণ ও কর্তৃত্বগ্রহণ) বিধিমালা, ২০১৮ শিরোনামে পূর্বের সংশ্লিষ্ট বিধিমালা এর পরিবর্তে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
২৬. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Qualified Investor Offer by Small Capital Companies) Rules, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। স্বল্প পুঁজির কোম্পানি যার পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা হতে ৩০ কোটি টাকার মধ্যে, তা এই বিধিমালার আওতায় স্থির মূল্যে বা বুক-বিল্ডিং পদ্ধতির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। স্বল্প মূলধনি কোম্পানিসমূহ সিকিউরিটি ইস্যু করে স্মল ক্যাপ প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত ও ব্যবসায়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে তারল্য ঘাটতিপূরণ করতে পারে|
২৭. Dhaka Stock Exchange (Listing) Regulations, ২০১৫ শিরোনামে পূর্বের সংশ্লিষ্ট Regulations এর পরিবর্তে নতুন Regulations প্রণয়ন করা হয়েছে।
২৮. Chittagong Stock Exchange (Listing) Regulations, ২০১৫ শিরোনামে পূর্বের সংশ্লিষ্ট Regulations এর পরিবর্তে নতুন Regulations প্রণয়ন করা হয়েছে।
অন্যান্য সংস্কার/অগ্রগতি :
২৯. ২০১১ সালের মে মাসে নতুন কমিশন গঠিত হবার পরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পুঁজিবাজারের অংশীজনদের নিয়ে একটি সভা আহবান করেন, যেখানে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯০০ কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষনা করেন। আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০% কোটাসহ প্রেণোদনা প্যাকেজটি ২০১৩ সালের ১৯ই আগষ্ট হতে বাস্তবায়িত হয়ে আসছে।
৩০. ২০১১ সালের ২৭ জুলাই, কোন ইস্যুয়ার কোম্পানি কর্তৃক কোন র্চার্টাড একাউন্টেন্ট ফার্মকে ধারাবাহিকভাবে ০৩ (তিন) বছরের বেশি নিরীক্ষক হিসাবে নিয়োগ না করার বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। নিরীক্ষক এর গ্রাহক কোম্পানি হতে স্বতন্ত্র হবে, যাতে নিরীক্ষার মতামত তাদের মধ্যে কোনও সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত না হয়। আর্থিক বিবরণী সম্পর্কে শেয়ারহোল্ডারদের নিকট নিরপেক্ষ ও সৎ পেশাদারী মতামত দেয়ার ক্ষেত্রে নিরীক্ষকগণের জন্য এটি নিয়ামক হিসাবে কাজ করবে।
৩১. কমিশনের নির্দেশনা ও তদারকিতে স্টক এক্সচেঞ্জসমূহ কর্তৃক জুলাই ২০১১-তে Corporate Finance বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা তালিকাভুক্ত কোম্পানীর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং পরিচালনা পদ্ধতির উন্নতি করবে ও সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করবে।
৩২. আইপিও‘র পূর্বে, কোন কোম্পানি জনগণের পরিবর্তে কিছু নির্বাচিত বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রি করতো। এমন কতজন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে এর কোনও সীমা ছিল না এবং এতে প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ারের বিক্রয় মূল্য অভিহিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হতো এবং এর ফলে একটি কার্ব মার্কেট তৈরি হয়েছিল। ওই শেয়ারগুলিতে বিনিয়োগকারীগণ সরল বিশ্বাসে বিনিয়োগ করে সেকেন্ডারি মার্কেটে ভাল মুনাফা প্রত্যাশা করছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কিছু কোম্পানি কখনও আইপিও এর জন্যে কমিশনে আবেদন করেনি বা নিয়ণ্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পায়নি। ইহা কিছু বিনিয়োগকারীর ফুলে ফেপে উঠা বা নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ২ অক্টোবর ২০১১ তারিখের নোটিফিকেশন অনুযায়ী, আইপিও‘র পূর্বে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারগণ ব্যতীত কর শনাক্তকরণ নম্বর থাকা অনধিক একশত (১০০) বিনিয়োগকারীর (ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা উভয়) নামে শেয়ার ইস্যু করা যেতে পারে। শেয়ার অফার করার জন্যে কোনো কোম্পানিকে অফার ডকুমেন্ট/ইনফরমেশন মেমোরেন্ডাম (আইএম) সহ মার্চেন্ট ব্যাংকারের মাধ্যমে কমিশনে আবেদন করতে হবে।
সেই হিসাবে, কমিশন ১৯ জুন ২০১৯ পর্যন্ত কোনও প্রিমিয়াম বিবেচনা না করে সমান বা অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যু করার সম্মতি দিয়েছে। এই নোটিফিকেশনটি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্টের অধীনে শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত ইস্যুয়ার কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম বন্ধ করেছে। পরবর্তী সময়ে, মূলধন উত্তোলন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য এবং বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন তালিকাভুক্ত ইক্যুইটি সিকিউরিটি ইস্যুয়ার ব্যতীত সকল ইস্যুয়ার বা কোম্পানিকে ইক্যুইটি সিকিউরিটি ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন উত্তোলনের ক্ষেত্রে Securities and Exchange Ordinance, ১৯৬৯ এর ধারা 2A(2)(a) এর বিধান হতে অব্যাহতি দেয়।
৩৩. ২২ নভেম্বর ২০১১ তারিখের নোটিফিকেশন অনুযায়ি, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির সকল উদ্যোক্তা/ প্রোমোটার এবং পরিচালকগণ সর্বদা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৩০% (ত্রিশ শতাংশ) শেয়ার ধারণ করবেন। ৩০% এর কম শেয়ার ধারণকারী উদ্যোক্তা/ প্রোমোটার এবং পরিচালকগণ এই নোটিফিকেশন প্রদানের ৬(ছয়) মাসের মধ্যে বাকী পরিমাণ শেয়ার অর্জন করতে পারবেন এবং কোন কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত অন্য পরিচালক পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২% (দুই শতাংশ) শেয়ারধারণ করবেন, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট পরিচালকের পদে নৈমিত্তিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এর ফলে শেয়ারহোল্ডিং বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও পরিচালকগণের কোম্পানির প্রতি দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারে শেয়ারের ফ্রি ফ্লোট সংখ্যা কমেছে যা চাহিদার তুলনায় সরবরাহকে হ্রাস করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করছে।
৩৪. ২৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও সাবসিডিয়ারীসমূহের তহবিল সর্বনিম্ন ৫১% প্যারেন্ট কোম্পানি থেকে এবং অবশিষ্ট অংশ অন্য যে কোন তহবিল থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।
৩৫. ২৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, বৈদেশিক প্রাতিষ্ঠানিক এবং অ-নিবাসী বাংলাদেশিদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে অর্জিত লাভের উপর আরোপিত ১০% Capital Gain Tax প্রত্যাহার করা হয়।
৩৬. কমিশনের সুপারিশক্রমে ২৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, শেয়ার ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যাংক এর কোন সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে উক্ত ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত মূলধন ঐ ব্যাংকের ‘exposure to capital market’ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গণ্য না করার বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে।
৩৭. ২৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখে সিদ্ধান্ত অনুযায়ি, পুঁজিবাজারে ব্যাংক এর বিনিয়োগ উদ্ভুত কোন ক্ষতির জন্যে প্রভিশন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে gain/loss net off করে provision সংরক্ষণ করা যাবে। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে পূর্বে শুধু net loss কে বিবেচনায় নেয়া হত।
৩৮. কমিশনের সুপারিশক্রমে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়কারি ব্রোকারেজ কমিশন হিসেবে লেনদেন মূল্যের উপর উৎসে আয়কর কর্তনের হার ০.১০% থেকে হ্রাস করে ০.০৫% নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩৯. ৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখ হতে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অভিহিত মূল্য ১০.০০ (দশ) টাকায় রূপান্তর করা হয়েছে। ইহা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে করতে কোম্পানিসমূহের আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণ এবং তুলনা করতে সহায়ক হয়েছে। অধিকন্ত, শেয়ারের সংখ্যা বাড়লেও ইপিএস না বাড়ার ফলে একটি নির্দিষ্ট তারিখে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলির অভিন্ন অভিহিত মূল্য থাকার কারণে বাজার হতে অতিরিক্ত সুবিধা অর্জন রোধ হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সিকিউরিটিজ স্প্লিট (split) করার ফলে বিনিয়োগকারীগণ বিষয়টি সঠিকভাবে অনুধাবন করতে ব্যর্থ হতেন ফলে সিকিউরিটিজের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হতো। বেশি অভিহিত মুল্যের সিকিউরিটিজের তুলনায় কম অভিহিত মুল্যের সিকিউরিটিজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা এর ফলে হ্রাস পেয়েছে।
৪০. বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইহা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।
৪১. পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে ২৬ নভেম্বর ২০১২ তারিখে ১০ বছরের (২০১২-২০২২) মাস্টার প্ল্যান (Master Plan) প্রণয়ন করা হয়েছে। একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের বিকাশের জন্য, এবং পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দক্ষতা অর্জন এবং নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এই ১০ বছরের মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করে। এই মাস্টার প্ল্যানে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে-
(ক) বিএসইসি‘র কাজের ও আর্থিক স্বাধীনতা, সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ, কর্মচারিদের সংখ্যা ও গুণগতমান উন্নীতকরণ এবং এর পদ্ধতিগুলিকে (তথ্য এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ) শক্তিশালীকরণ।
(খ) পুঁজিবাজার সম্পর্কিত বিধি বিধান শক্তিশালীকরণ।
(গ) আর্থিক বাজারের অবকাঠামো উন্নীতকরণ।
(ঘ) বাজারে নতুন পণ্যের (উদাহরণ: কর্পোরেট বন্ড, সম্পদ ভিত্তিক সিকিউরিটিজ এবং ডেরিভেটিভস ইত্যাদি) সুশৃঙ্খল ও টেকসই অন্তর্ভুক্তির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।
(ঙ) পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (উদাহরণ: মিউচুয়াল ফান্ড, বীমা কোম্পানি, পেনশন তহবিল) সুশৃঙ্খল ও টেকসই অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা।
পুঁজিবাজারের স্বার্থে আইনী ও নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম, বন্ড মার্কেট, আর্থিক বাজার অবকাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ডেরিভেটিভস, সিকিউরিটাইজেশন এবং কর ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মাস্টার প্ল্যান অনুসারে বেশকিছু নীতিগত কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছে।
৪২. সিকিউরিটিজ বাজারে আস্থা নিশ্চিতকরা এবং আপত্তিজনক, কারসাজিমূলক বা অবৈধ লেনদেন সম্পর্কে সুষ্ঠুভাবে নজরদারির লক্ষ্যে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আধুনিক সমন্বিত সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর স্থাপন করেছে। সতর্কতা প্রদানের মাধ্যমে এবং লেনদেনে কারসাজি সনাক্ত করে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম জোরদার করে বাজারে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে। ফলে ক্রেতা এবং বিক্রেতারা লেনদেনের স্বচ্ছতার প্রতি আস্থা রেখে ব্যবসা করছে।
৪৩. Non-Discretionary Portfolio Management-এর ক্ষেত্রে অমনিবাস হিসাব থেকে গ্রাহকের পৃথক বিও হিসাব-এ রূপান্তরের নিমিত্ত ৩০ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
৪৪. আইপিও প্রক্রিয়াতে সময় এবং ঝামেলা হ্রাস করার জন্য, ব্যাংকের পরিবর্তে বাজার মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আইপিও আবেদনের প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।
৪৫. বিএসইসি‘র নির্দেশে স্টক এক্সচেঞ্জসমূহে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক মানের সূচকপ্রবর্তন করা হয়েছে, যা সিকিউরিটির মূল্য পরিবর্তনের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটায়। ডিএসই‘তে ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে এবং সিএসই‘তে ১২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে পূর্বের Index এর অসংগতি দুরীকরণের লক্ষ্যে নতুন Index প্রবর্তন করা হয়েছে।
৪৬. মে ২ ,২০১৩ তারিখে প্রণীত এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এর ভিত্তিতে ২১ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে স্টক এক্সচেঞ্জসমূহ ডিমিউচ্যুয়ালাইজড হয়েছে।
৪৭. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর নিজস্ব অর্থায়নে শের-ই-বাংলা নগরে কমিশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে উক্ত ভবনের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন এবং ৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে উদ্বোধন করেন।
৪৮. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ১৯৯৫ সাল থেকে সিকিউরিটিজ মার্কেটসমূহের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান International Organization of Securities Commissions (IOSCO) এর সাধারণ সদস্য ছিল। পরবর্তীতে IOSCO এর সকল শর্তাদি পরিপালন করে ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন IOSCO এর পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভ করত Appendix B হতে Appendix A তে উন্নীত হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য সকল উন্নত বাজার অন্তর্ভুক্ত আছে। এর ফলে বিএসইসি IOSCO এর নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা র্অজন করেছে;
৪৯. কমিশনের অনুরোধক্রমে, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকার ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ এ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ইহা সিকিউরিটিজ আইন প্রয়োগ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান করেছে, যথা- সাধারণ আদালতের ডকেটে প্রচুর মামলা থাকে, ফলে মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর মামলাগুলির শুনানি হয় না।
৫০. বিএসইসি, IOSCO এর ‘B‘ হতে‘A‘ ক্যাটাগরীতে উন্নীত হওয়ার কারণে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিএসইসি‘কে সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান করেন।
৫১. তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের রেজিস্টার্ড অফিস যে শহরে বা এলাকায় অবস্থিত সে স্থানে উহাদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে মর্মে ১৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৫২. কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ আইওএসকো’র সাথে বিএসইসির সমঝোতা স্বাক্ষরের পরে আইওএসকো এর এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন এ্যাডভাইজর হিসেবে সেকেন্ডমেন্ট পলিসি এর আওতায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তিনি আইওএসকো এর হেডকোয়ার্টার স্পেনের মাদ্রিদে তিন বছরের জন্য (১৯ জানুয়ারি, ২০১৫ হতে ১৮ জানুয়ারি ২০১৮) পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থায় একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে পারা বিএসইসির জন্য অনেক বড় সম্মানের, যা খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং যেখানে শক্তিশালী পেশাগত দক্ষতা ও অঙ্গীকারের প্রয়োজন।
৫৩. সরকারের সাথে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অবিরাম চেষ্টার ফলে জাতীয় সংসদ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন (এফআরএ) পাস করে এবং এই আইনের অধীনে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) গঠন করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য, পক্ষপাতমুক্ত এবং ভুল তথ্যবিহীন আর্থিক বিবরণীর উপস্থাপনা করা| অন্য আরেকটি উদ্দেশ্য হল আর্থিক বিবরণীর উপর নিরপেক্ষ ও সৎ পেশাদারি মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরীক্ষকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সুরক্ষা করা। আর্থিক প্রতিবেদন ব্যবহারকারীদের মধ্যে নিরীক্ষণ, আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক আস্থা আনতে এবং নিরীক্ষণ কার্যের বিশ্বস্ততা এবং নিরীক্ষণ প্রতিবেদনের মান উন্নত করতে ইহা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৫৪. ০৮ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
৫৫. পুঁজিবাজার সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে বিএসইসি‘তে ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে উহার নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
৫৬. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে ২২ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
৫৭. গ্রামীন ওয়ান এর ফাষ্ট স্কীম গ্রামীন মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এবং এইমস ফাষ্ট গ্যারান্টিড মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর মেয়াদ শেষে অবসায়ন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করা হয়েছে।
৫৮. প্রথম আইসিবি থেকে অষ্টম আইসিবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড মোট ৮টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর মেয়াদ শেষে কনভারশন এর মাধ্যমে মেয়াদী থেকে বে-মেয়াদী ফান্ডে রূপান্তর সম্পন্ন হয়েছে।
৫৯. নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদাভাবে ইনভেষ্টরস এডুকেশন প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।
৬০. মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ সম্পর্কে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে, যা ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। এই আদেশ অনুসারে, সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানি কোন মূল্য সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণের বা এরূপ তথ্য জানার আধা ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে বিএসইসি এবং এক্সচেঞ্জগুলিকে জানাবে এবং তদনুযায়ি একটি বহুল প্রচারিত বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় এবং একটি ওয়েব পোর্টালে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশ করবে।
৬১. পূর্বে এক্সচেঞ্জ একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল এবং ডিমুচুয়ালাইজেশনের পর ইহা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। ফলে এক্সচেঞ্জ বেশিরভাগ ব্রোকার সদস্য দ্বারা মালিকানাধীন একটি সত্তা থেকে শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানাধীন একটি লাভজনক কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয় এবং উহার মালিকানার অধিকার হতে লেনদেনের অধিকার পৃথক হয়। এ কারণে নতুন শেয়ারহোল্ডারদের নিকট এক্সচেঞ্জকে লাভজনক এবং আকর্ষণীয় করে তোলা দরকার। ডিমুচুয়ালাইজেশনের প্রাথমিক পর্যায়ে মুনাফা অর্জন করা দুরহ বিধায় একটি শুভ সূচনা করার জন্যে এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে এক্সচেঞ্জ কর মওকুফ চায়। এ লক্ষ্যে, এক্সচেঞ্জ কমিশনের মাধ্যমে সরকারের নিকট পাঁচ বছরের কর মওকুফের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানায়। ফলে, এনবিআর কর্তৃক জারিকৃত ২৬ জুন ২০১৪ তারিখের এসআরও নং-১৫৭-আইন/আয়কর/২০১৪ অনুযায়ি, ১ জুলাই ২০১৪ থেকে এক্সচেঞ্জকে ক্রমহ্রাসমান হারে পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অধিকন্তু, এনবিআর ২১ এপ্রিল ২০১৬ তারিখের এসআরও নং ১০৯-আইন/আয়কর/২০১৬ অনুযায়ি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য কর অব্যাহতির হারকে ৮০% থেকে ১০০% এ সংশোধন করেছে।
৬২. বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে ডেবিট/ক্রেডিট হলে বিনা ফি‘তে তাৎক্ষণিকভাবে এসএমএস বার্তা প্রেরণ চালু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিডিবিএল সুবিধাভোগী মালিক (বিও) হিসাবধারীকে তার হিসাবে সংঘটিত দৈনিক ডেবিট-ক্রেডিট লেনদেনের বিশদ বিবরণ সম্বলিত এসএমএস সতর্কতা সরবরাহ করে। জালিয়াতির মাধ্যমে সিকিউরিটির স্থানান্তর হ্রাস করতে ইহা সহায়ক হয়েছে।
৬৩. প্রধানমন্ত্রী ৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে বিএসইসি দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, কেননা বিনিয়োগ সংক্রান্ত সঠিক জ্ঞানই একজন বিনিয়োগকারীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুঁজি।
৬৪. দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য বিএসইসি‘তে ফাইন্যানসিয়াল লিটারেসি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
৬৫. গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট হিসাবে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) ৫ই মে ২০১৯ তারিখে নিবন্ধিত হয়েছে। বিএএসএমের মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কর্মচারি ও বাজার মধ্যস্থতাকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং বিভিন্ন নির্ধারিত শ্রেণীর জন্য দেশব্যাপী আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়া।
৬৬. ১৪ মে ২০১৮তারিখের চুক্তি অনুসারে, চীনা কনসোর্টিয়াম (শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ সমন্বিত) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫% শেয়ার ক্রয় করেছে। এই কনসোর্টিয়ামটি ডিএসইর উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে।
৬৭. ডিমুচুয়ালাইজেশন স্কিম, ২০১৩ অনুসারে এক্সচেঞ্জের ২৫% শেয়ারবিক্রি করা উহার ব্যবস্থাপনার জন্যে বাধ্যতামূলক ছিল। এ প্রেক্ষিতে, কৌশলগত বিনিয়োগকারী চীনা কনসোর্টিয়ামের নিকট হতে ২৫% শেয়ার বিক্রি বাবদ ডিএসই ৯৪৭ কোটি টাকা পায় এবং উহার ২৩৭ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে। এক্ষেত্রে, কমিশনের অভিমত ছিল যে ইহা বাজারে নগদ অর্থ প্রবাহ বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারকে আরও বেশি কর আদায় করতে সহায়তা করবে। পরবর্তীতে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিক্রয় আয়ে মূলধন লাভের উপর কর কমাতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ডিএসই‘র বেশির ভাগ শেয়ারহোল্ডার কমিশনকে অনুরোধ করেন। ফলে, কমিশন সরকারকে এ অনুরোধ করে। কমিশনের অনুরোধে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরামর্শক্রমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই মর্মে এসআরও জারি করে যে, ডিএসই‘র ২৫% শেয়ার বিক্রির বিপরীতে চীনা কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সর্বনিম্ন তিন বছরের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হলে আয়কর ১৫% এর পরিবর্তে ৫% হবে।
৬৮. সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স গাইডলাইনস, ২০১২ সংশোধন করে নতুন কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড, ২০১৮ জারি করা হয়েছে। কোম্পানির বোর্ড গঠন ও উন্নয়ন, পারিশ্রমিক, জবাবদিহিতা, অডিট এবং শেয়ারহোল্ডারদের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড মান নির্ধারণ করে। কর্পোরেট গভর্নেন্স কোডের মূল লক্ষ্য হ’ল তালিকাভুক্ত কোম্পানীতে সুশাসন নিশ্চিত করে শেয়ারহোল্ডারদের অধিকারকে শক্তিশালী করা এবং শেয়ারহোল্ডারদেরকে ইনসাইডার যেমন ম্যানেজার বা প্রভাবশালী শেয়ারহোল্ডারগণ কর্তৃক অভ্যন্তরীণ শোষণ থেকে রক্ষা করা।
৬৯. আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতি ও উহা প্রকাশের শর্তাবলী সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন ২০ জুন ২০১৮ তারিখে জারি করা হয়েছে।
৭০. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর ২৫ বছর পুর্তি উপলক্ষে ১২-১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রজতজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৭১. International Organization of Securities Commissions (IOSCO) কর্তৃক নির্ধারিত “বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ, ২০১৭“, ০২-০৮ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে। বিনিয়োগকারী এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচীসহ বিএসইসি সপ্তাহটি উদযাপন করে। এ সময় থেকে প্রতিবছর বিএসইসি এই সপ্তাহ পালন করছে।
৭২. মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ড (Close-end Mutual Fund) এর মেয়াদ পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে।
৭৩. সরকারি দপ্তরের চাহিদা অনুযায়ী পুঁজিবাজার সম্পর্কিত তথ্যের বিনিময় ত্বরান্বিত করতে বিএসইসি External Data Request Processing (EDRP) চালু করেছে।
৭৪. কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচাwiদের প্রভিডেন্ট ফান্ড কোন মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উদ্যোক্তা হতে পারবে না মর্মে ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে আদেশ জারি করা হয়েছে।
৭৫. ৮ মে ২০১৮ তারিখের নির্দেশ অনুসারে, শেয়ার লক-ইন করার বিধানটি প্রসপেক্টাস জারির তারিখের পরিবর্তে পুঁজিবাজারে প্রথম ট্রেডিং দিন থেকে গণনা করা হবে। কোনও কোম্পানির নতুন ইস্যু করা পাবলিক শেয়ারের লক-ইন এর এই সময় বাজারে তালিকাভুক্তির পর শেয়ারের দাম স্থিতিশীল করতে সহায়তা করছে।
৭৬. ১৫ মে ২০১৯ তারিখে সিডিবিএলের Central Depository সিস্টেমের জন্য ব্লক মডিউল চালু করা হয়েছে। এই নির্দেশনার ফলে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি উহার উদ্যোক্তা, পরিচালক, প্লেসমেন্ট শেয়ার হোল্ডারদের এবং সম্পদ ব্যাবস্থাপক কোম্পানি উহার অধীন পরিচালিত মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উদ্যোক্তাদের ও প্লেসমেন্ট হোল্ডারদের ইউনিট, CDBL এর ব্লক মডিউল ব্যবহার করে ব্লক করে রাখবে. এই মডিউলটি লক-ইন সময়ের মধ্যে লক সিকিউরিটির কোনও হস্তান্তর বন্ধ করতে সহায়ক হয়েছে।
৭৭. উদ্যোক্তা ও পরিচালকগণের কোম্পানির প্রতি দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে, তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত অন্যান্য পরিচালকগণের ২% শেয়ার ধারণ এবং পরিচালক ও উদ্যোক্তাগণ সম্মিলিতভাবে ৩০% শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত পূর্বের আদেশকে আরও স্পষ্ট করে এবং নতুন শর্তাদি সংযোজন করে ২১ মে ২০১৯ তারিখে নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে;
৭৮. তালিকাভুক্ত কোম্পানি কোন যৌক্তিক কারণ (যেমন: কোম্পানীর Balancing, Modernization, Rehabilitation and Expansion) ব্যতিত বোনাস শেয়ার ঘোষণা করতে পারবে না এবং ঘোষণার সময় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে উক্ত কারণ প্রকাশ করতে হবে মর্মে ২৩ মে ২০১৯ তারিখে নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে| অধিকন্তু, বোনাস শেয়ার মূলধন রিজার্ভ বা revaluation রিজার্ভ বা কোনও অবাস্তব লাভ বা কোম্পানির তালিকাভুক্ত হওয়ার পূর্বে অর্জিত লাভ বা ঘোষিত মূলধন হ্রাস করার মাধ্যমে বা কোনও অন্য উপায়ে ঘোষণা করা হয় না যাতে ডিভিডেন্ড পরবর্তী রক্ষিত আয় নেতিবাচক হয়ে যায়।
৭৯. মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের বিপরীতে লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে পুন:বিনিয়োগ (Re-investment) পদ্ধতি বাতিল করে ১৬ জুলাই ২০১৯ তারিখে আদেশ জারি করা হয়েছে। লভ্যাংশ, আয়ের উৎস হিসাবে বা উহা আরও শেয়ার কেনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী সাধারণত নগদ লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ক্রয় করে থাকেন এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পূন:বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীগণ নগদ লভ্যাংশ পেতে আগ্রহী হন। এই আদেশ বিনিয়োগকারীদেরকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে।
৮০. কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য পুনরায় ৮৫৬ কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন ফান্ড গঠন করেছে, যা বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবি এর যৌথ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, এ লক্ষ্যে সরকার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করেছিল।
৮১. আইপিও এবং তালিকাভুক্ত ব্যতিত অন্য সকল কোম্পানি কর্তৃক ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন উত্তোলনের ক্ষেত্রে কমিশনের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে ২০ জুন ২০১৯ তারিখে আদেশ জারি করা হয়েছে। এর ফলে প্রাইভেট অফারের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ সহজ হয়েছে ও জটিলতা হ্রাস পেয়েছে এবং ইহা বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।
৮২. আইপিও এবং রাইটস ইস্যুর কতিপয় শর্তাদি সম্পর্কিত নোটিফিকেশন ২০ জুন ২০১৯ তারিখে জারি করা হয়েছে। এই নোটিফিকেশনের ফলে, তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে প্রাপ্ত তহবিলের ১/৩ (এক তৃতীয়াংশ) এর বেশি ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না। অন্যদিকে, তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি আইপিও‘র প্রসপেক্টাস প্রকাশের তারিখ থেকে ২ (দুই) বছরের মধ্যে এবং আইপিও বা পূর্ববর্তী রাইটস ইস্যু বা রিপিট পাবলিক অফারের মাধ্যমে প্রাপ্ত তহবিলের পূর্ণ ব্যবহারের পূর্বে রাইটস শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। অধিকন্তু, কোনও স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত এবং /অথবা ওভার-দ্য কাউন্টার (ওটিসি) এর মাধ্যমে লেনদেন করা কোনও সিকিউরিটি ইস্যুয়ার পুনরায় তালিকাভুক্তির পরে ০৩ (তিন) আর্থিক বছর শেষ হওয়ার পূর্বে রাইটস শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।
৮৩. APEC Financial Regulators Training Initiative এর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক যৌথভাবে ৮-১০ জুলাই ২০১৯ সময়ে বিনিয়োগ শিক্ষা এবং বিনিয়োগকারী সুরক্ষা সম্পর্কিত একটি আঞ্চলিক সেমিনার এর আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৮৪. পুঁজিবাজার সম্পর্কিত কতিপয় আইন, বিধি-বিধান সঠিকভাবে বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিপালন করছে কিনা, তা তত্বাবধানের উদ্দেশ্যে জুলাই ২০১৯ হতে কমিশনের Online Report Submission Platform (ORSP) এর মাধ্যমে প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ফলে সময় এবং কাগজ সাশ্রয়ের পাশাপাশি জটিলতা হ্রাস পেয়েছে।
৮৫. বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং সহজেই অভিযোগ জমা দেওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অনলাইনে ভিত্তিক Customer Complain Address Module (CCAM) চালু করেছে। সিসিএএম হ’ল একটি অনলাইন অভিযোগ পরিচালনা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূল ও সময় সাশ্রয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সমস্যার সমাধান করা হয়। সিসিএএম হ’ল গ্রাহকদের অভিযোগের মূল্যায়ন, বিশ্লেষণ ও সমাধানের একটি কৌশল।
৮৬. যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তারল্য সরবরাহের জন্য উভয় এক্সচেঞ্জে পৃথক এসএমই প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের কোম্পানি এবং সম্ভাব্য উচ্চ প্রবৃদ্ধির স্টার্ট-আপ কোম্পানিকে তহবিল সংগ্রহের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এক্সচেঞ্জের এসএমই প্ল্যাটফর্ম এসএমইদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে যার ইস্যু পরবর্তী পরিশোধিত মূলধন ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা বা এর কম।
৮৭. স্টক এক্সচেঞ্জে সিকিউরিটির মূল্যের উপর সার্কিট ব্রেকার সম্পর্কিত আদেশ ১৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে জারি করা হয়েছে। এই আদেশ অনুসারে, কোন সিকিউরিটির ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী মূল্য পরিবর্তনের সীমা হইবে উহার রেফারেন্স মূল্য বা পূর্ববর্তী দিন শেষে মূল্যের ৩.৭৫% থেকে ১০% পর্যন্ত। অধিকন্তু, কোনও নতুন তালিকাভুক্ত সিকিউরিটির সার্কিট ব্রেকার প্রথম দুই ট্রেডিং দিবসের জন্য ৫০% এবং পরে নিয়মিত হার প্রযোজ্য হবে। এর ফলে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটির মূল্য পরিবর্তনে অস্বাভাবিকতা হ্রাস পেয়েছে এবং বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর শেয়ারের দাম স্থিতিশীল হতে সহায়ক হয়েছে।
৮৮. Ease of Doing Busines এর চাহিদা অনুযায়ি ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে তিনটি নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে, ইহা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।
৮৯. ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে নিরীক্ষকগণের একটি প্যানেল অনুমোদন করা হয়েছে। তালিকাভূক্ত সিকিউরিটিজের ইস্যুয়ার কোম্পানিসমূহের তহবিল যথাযথভাবে ব্যবহার সম্পর্কে বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতাদের আস্থা সৃষ্টিতে ইহা সহায়তা করবে। আর্থিক বিবরণী এবং নথিপত্র কোম্পানির সত্যিকারের আর্থিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে কিনা তা, আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা করে এবং হিসাবের নথিপত্র পরীক্ষা করে নিরীক্ষকগণ নির্ধারণ করতে পারেন।
৯০. অ-তালিকাভুক্ত ইক্যুইটি এবং ডেট (debt)সিকিউরিটির বিনিয়োগকারীদের তারল্য সরবরাহের জন্য, বিএসইসি এবং এক্সচেঞ্জগুলি ওটিসি মার্কেটের পরিবর্তে বিকল্প ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দেশের শেয়ার বাজারে অ-তালিকাভুক্ত সিকিউরিটি, বন্ড, ডিবেঞ্চার, সুকুক এবং ওপেন-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের মতো নতুন পণ্য অন্তর্ভুক্তির সুবিধার্থে Alternative Trading System Rules এর অনুমোদন করেছে।
৯১. বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং আস্থা বাড়াতে বিএসইসি কর্তৃক কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২০ সালের শুরু থেকেই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের মূল্য পরিবর্তনে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারল্য সংকটসহ নানাবিধ সমস্যার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কিত উদ্বেগের কারণে অন্যান্য বৈশ্বিক বাজারগুলির মতো বাংলাদেশের বাজারেও সামগ্রিকভাবে মূল্য হ্রাসের প্রবণতা দেখায়। এ প্রেক্ষিতে, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও সচেতন করতে বিএসইসি পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য নিম্নলিখিত নীতিগত ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে:
(ক) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারের সাথে আলোচনাক্রমে-
• পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা;
• মার্চেন্ট ব্যাংকার এবং অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বল্প সুদের তহবিল নিশ্চিত করা;
• আইসিবি‘র বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা;
• বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
• পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া;
• বাজারে ভাল শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য মানসম্পন্ন বহুজাতিক ও সরকারি কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা;
(খ) সাধারণ বিনিয়োগকারী কতৃক আতংকিত হয়ে শেয়ার বিক্রয় বন্ধ করার নিমিত্ত তালিকাভুক্ত সিকিউরিটির বাজার লেনদেনে প্রারম্ভিক মূল্য সম্পর্কে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক কমিশন ১৯ মার্চ ২০২০ তারিখে একটি আদেশ জারি করেছে। বাজার লেনদেনে কোনো সিকিউরিটির প্রারম্ভিক মূল্য হবে ১৯ মার্চ ২০২০ তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৫ (পাঁচ) লেনদেন দিবসে উক্ত সিকিউরিটির সর্বশেষ মূল্যের গড়।
(গ) বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাব এবং কোম্পানির এজিএম বা ইজিএম এ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ইহা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির প্রেক্ষিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের প্রস্তাব বিবেচনা করে কমিশন, পাবলিক ভেন্যুতে শারীরিকভাবে সরাসরি উপস্থিত হয়ে এজিএম বা ইজিএম পরিচালনার পরিবর্তে ওয়েবিনার/টেলিকনফারেন্স/ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের যেকোন উপায়ে এজিএম বা ইজিএমম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে।
(ঘ) পুঁজিবাজার সম্পর্কিত কতিপয় আইন, বিধি-বিধান সঠিকভাবে বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিপালন করছে কিনা, তা তত্বাবধানের উদ্দেশ্যে জুলাই ২০১৯ হতে কমিশনের Online Report Submission Platform (ORSP) এর মাধ্যমে প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ফলে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি শারীরিকভাবে উপস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
(ঙ) এক্সচেঞ্জগুলির অন লাইন নিউজ ফিডের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সকল স্টেকহোল্ডারদের জন্য কোভিড-১৯ এর সতর্কতার নিমিত্ত নিম্নলিখিত সচেতনতার সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।
“সংশ্লিষ্ট সকলকে এতদ্বারা অবগত করা যাচ্ছে যে, (১) ব্রোকার কার্যালয়ে গ্রাহকদের ভিড় নিরুৎসাহিত করুন এবং মোবাইল অ্যাপস এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক ডিভাইসগুলির মাধ্যমে ব্যবসায়ের জন্য আরও উৎসাহিত করুন, (২) করমর্দন করা যাবে না, ৩) আলিঙ্গন করা যাবে না; (৪) যুক্তিসঙ্গত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন (কমপক্ষে এক মিটার), (৪) কাশি বা হাঁচি হওয়া বা কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ রয়েছে এমন কর্মচারি এবং গ্রাহকদের সনাক্তকরুন, (৫) চোখ, নাক, কান ও মুখ এ হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন, (৬) অফিসে প্রতিবার প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখুন (কর্মচারি, গ্রাহক এবং দর্শনার্থীদের জন্য), (৭) ব্রোকার কার্যালয়ে কর্মচারি এবং গ্রাহকদের সরবরাহ করার জন্য মাস্ক এর ব্যবস্থা রাখুন, (৮) দর্শনার্থীদের অফিসে প্রবেশ করতে নিরুৎসাহিত করুন, (৯)পর্যায়ক্রমিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে কর্মচারীদের জন্য ভার্চুয়াল অফিসের ব্যবস্থা করুন, এবং (১০) অফিসে মুখোমুখি সাক্ষাৎ এড়িয়ে চলুন এবং কর্মচারি ও গ্রাহকদের মধ্যে টেলিফোন / ভিডিও কনফারেন্সকে উৎসাহিত করুন।”
৯২. বিগত নয় বছরে পণ্য ও বাজার উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও মতবিনিময় এর লক্ষ্যে বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্য অংশীদারদের জন্য বেশ কয়েকটি আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার, কর্মশালা এবং গোলটেবিল সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
চলমান কার্যক্রম :
৯৩. Securities and Exchange Ordinance, ১৯৬৯ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর সমন্বয়ে যুগোপযোগী করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের নিমিত্ত খসড়া তৈরী করে ১৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে।
৯৪. Securities and Exchange Rules, ১৯৮৭ যুগোপযোগী করে এ বিষয়ে নতুন Rules প্রণয়নের নিমিত্ত Securities and Exchange Rules, ২০১৯ এর খসড়া জনমত যাচাইয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
৯৫. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Debt Securities) Rules, ২০২০ এর খসড়া কমিশনে অনুমোদিত হয়েছে। যা জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে।
৯৬. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) বিধিমালা, ২০২০ এর খসড়া জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত প্রকাশ করা হয়েছে।
৯৭. সম্ভাব্য স্বাধীন পরিচালকদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করার জন্য কমিশন খসড়া অনুমোদন করেছে। যা জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে।
৯৮. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Alternative Investment) Rules, 2015 এর খসড়া কতিপয় পরিবর্তনসহ সংশোধন কমিশন অনুমোদন করেছে। যা জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে।
৯৯. Bangladesh Securities and Exchange Commission (Qualified Investor Offer (QIO) বা Small Capital Companies) Rules ২০১৮ এর খসড়া কতিপয় পরিবর্তনসহ সংশোধন কমিশন অনুমোদন করেছে। যা জনমত যাচাইয়ের নিমিত্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে।
বিএসইসি‘র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা :
১০০. সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ, কর্মচারির সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং বিএসইসি‘র সিস্টেমসমূহ সম্পূর্ণ অটোমেশন করা।
১০১. আইসিটিসহ সিকিউরিটি বাজারের অবকাঠামোর উন্নীতকরণ।
১০২. বাজারে নতুন সিকিউরিটির অন্তর্ভুক্তিকরন।
১০৩. ক্রমবর্ধমান প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্যে উদ্যোগ গ্রহণ।
বিজনেস আওয়ার/১৬ মে, ২০২০/আই