ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২ ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখে বিক্রি!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 42

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলের জালে ধরা পড়া দুটি ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের এ মাছ দুইটি মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন মাছের ক্রেতা ‘মেসার্স জয়মনি ফিস’ এর মালিক আল আমিন। এসময় মাছ দুটি এক নজর দেখতে মোংলা মাছ বাজারে উৎসুক লোকজন ভিড় জমায়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক নামের এক জেলের জালে এই ভোল মাছ দুটি ধরা পড়ে। পরে শনিবার সকালে সুন্দরবনের দুবলার চরে ডাকে (উন্মুক্ত নিলামে) সাড়ে ১৮লাখ টাকায় বিক্রি হয় মাছ দুটি। বিক্রি হওয়া মাছ দুটির মধ্যে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম। অপেক্ষাকৃত ছোটটির ওজন ২৭কেজি। বড়টি বিক্রি হয়েছে ১১ লাখ এবং ছোট বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।

প্রতি কেজি মাছের মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১৩৩ টাকা। মহামূল্যবান মাছ পাওয়া জেলে ফারুক হোসেন বলেন, মৌশুম প্রায় শেষ পর্যায়, এতো দিনে বড় মাছ না পাওয়ায় মনটা খারাপ ছিল। এই মাছ দুটো পাওয়ায় অনেক লাভ হয়েছে। বিক্রিও করেছি আশানুরূপ দামে।

মেসার্স জয়মনি ফিস-এর মালিক আল আমিন বলেন, এই মাছগুলো আমরা চট্টগ্রাম চালান করি। এসব মাছ অনেক ঝুকি নিয়ে ক্রয় করতে হয়। লাভও হয় অনেক। আশাকরি লাভ হবে এই দুই মাছে।

মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ও মৎস্য সমবায় সমিতি সভাপতি মো. আফজাল ফরাজী বলেন, ভোল মাছটি এ অঞ্চলে খুবই কম পাওয়া যায়। মোংলা পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে আগে দুই-একটি মাছ পাওয়া যেত। মূলত এ মাছের ফুলকী-প্যাটা ও বালিশের কারণে দাম প্রচুর বেশি। এই মাছের প্যাটা ও বালিশ বিদেশে রপ্তানি হয় এবং এ দিয়ে নাকি মেডিসিন তৈরি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১০ বছরেও বিরল প্রজাতির দাতিনা ভোল মাছ মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আসেনি। তবে দুবলার চর থেকে ক্রয় করা এ মাছ দুটি চট্রগ্রামে আরো বেশি দামে বিক্রি হবে বলে জানান ব্যাবসায়ী।

জাবা ভোল বা সোনা ভোলের বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস। ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশে এই মাছের চাহিদা খুব বেশি। এই মাছের ওষুধি গুণ থাকাতেই এর মূল্য এতো বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলি এই মাছ কিনে নেয়। তারপর এই মাছের দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ। এই মাছের বায়ু পটকা দিয়ে কিডনির নানা রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

২ ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখে বিক্রি!

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলের জালে ধরা পড়া দুটি ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের এ মাছ দুইটি মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন মাছের ক্রেতা ‘মেসার্স জয়মনি ফিস’ এর মালিক আল আমিন। এসময় মাছ দুটি এক নজর দেখতে মোংলা মাছ বাজারে উৎসুক লোকজন ভিড় জমায়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক নামের এক জেলের জালে এই ভোল মাছ দুটি ধরা পড়ে। পরে শনিবার সকালে সুন্দরবনের দুবলার চরে ডাকে (উন্মুক্ত নিলামে) সাড়ে ১৮লাখ টাকায় বিক্রি হয় মাছ দুটি। বিক্রি হওয়া মাছ দুটির মধ্যে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম। অপেক্ষাকৃত ছোটটির ওজন ২৭কেজি। বড়টি বিক্রি হয়েছে ১১ লাখ এবং ছোট বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।

প্রতি কেজি মাছের মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১৩৩ টাকা। মহামূল্যবান মাছ পাওয়া জেলে ফারুক হোসেন বলেন, মৌশুম প্রায় শেষ পর্যায়, এতো দিনে বড় মাছ না পাওয়ায় মনটা খারাপ ছিল। এই মাছ দুটো পাওয়ায় অনেক লাভ হয়েছে। বিক্রিও করেছি আশানুরূপ দামে।

মেসার্স জয়মনি ফিস-এর মালিক আল আমিন বলেন, এই মাছগুলো আমরা চট্টগ্রাম চালান করি। এসব মাছ অনেক ঝুকি নিয়ে ক্রয় করতে হয়। লাভও হয় অনেক। আশাকরি লাভ হবে এই দুই মাছে।

মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ও মৎস্য সমবায় সমিতি সভাপতি মো. আফজাল ফরাজী বলেন, ভোল মাছটি এ অঞ্চলে খুবই কম পাওয়া যায়। মোংলা পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে আগে দুই-একটি মাছ পাওয়া যেত। মূলত এ মাছের ফুলকী-প্যাটা ও বালিশের কারণে দাম প্রচুর বেশি। এই মাছের প্যাটা ও বালিশ বিদেশে রপ্তানি হয় এবং এ দিয়ে নাকি মেডিসিন তৈরি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১০ বছরেও বিরল প্রজাতির দাতিনা ভোল মাছ মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আসেনি। তবে দুবলার চর থেকে ক্রয় করা এ মাছ দুটি চট্রগ্রামে আরো বেশি দামে বিক্রি হবে বলে জানান ব্যাবসায়ী।

জাবা ভোল বা সোনা ভোলের বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস। ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশে এই মাছের চাহিদা খুব বেশি। এই মাছের ওষুধি গুণ থাকাতেই এর মূল্য এতো বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলি এই মাছ কিনে নেয়। তারপর এই মাছের দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ। এই মাছের বায়ু পটকা দিয়ে কিডনির নানা রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: