ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জরুরি বিভাগে আশঙ্কাজনক রোগী রেখে কেক কাটায় ব্যস্ত চিকিৎসক!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩
  • 42

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী রেখে চিকিৎসকদের কেক কাটাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর স্বজন ও জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে এ হট্টগোল হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে শহরের দরগাপাড়া মহল্লার নাজমুল হুদার স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আনেন স্বজনরা। এসময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটছিলেন। এ নিয়ে রোগীর স্বজনরা ডাকতে গেলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা।

আহত নারীর স্বামী নাজমুল হুদা বলেন, আমার স্ত্রী পারিবারিক কলহের জেরে ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। গিয়ে দেখি রুমের দরজা লাগিয়ে কয়েকজন ডাক্তার মিলে কেট কাটছেন।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাদের দরজায় কড়া নেড়ে সাড়া না পেয়ে জোরে ধাক্কা দিলে ডা. মো. মোশফিকুর বের হয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন।

তিনি বলে, ‘কী হয়েছে? আপনাদের কোনো চিকিৎসা দেওয়া হবে না। রোগী দেখা হবে না।’ এসময় ফোন বের করে ভিডিও করতে গেলে আমাদের আটকে রাখতে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ। এমনকী পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মো. মোশফিকুর বলেন, রোগী না দেখা ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। রোগী আসা মাত্রই সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কেক কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আনুষ্ঠানিক তেমন কোনো কিছুই নয়। ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারদের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটা হয়। যা এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে কিছুই করা হয়নি।

এ বিষয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, কেক কাটার সময় সেবা নিতে আসা ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। এটি সামান্য ভুল বোঝাবুঝি, বড় তেমন কিছু নয়। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে ওই রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিজনেস আওয়ার/২ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জরুরি বিভাগে আশঙ্কাজনক রোগী রেখে কেক কাটায় ব্যস্ত চিকিৎসক!

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী রেখে চিকিৎসকদের কেক কাটাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর স্বজন ও জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে এ হট্টগোল হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে শহরের দরগাপাড়া মহল্লার নাজমুল হুদার স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আনেন স্বজনরা। এসময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটছিলেন। এ নিয়ে রোগীর স্বজনরা ডাকতে গেলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা।

আহত নারীর স্বামী নাজমুল হুদা বলেন, আমার স্ত্রী পারিবারিক কলহের জেরে ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। গিয়ে দেখি রুমের দরজা লাগিয়ে কয়েকজন ডাক্তার মিলে কেট কাটছেন।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাদের দরজায় কড়া নেড়ে সাড়া না পেয়ে জোরে ধাক্কা দিলে ডা. মো. মোশফিকুর বের হয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন।

তিনি বলে, ‘কী হয়েছে? আপনাদের কোনো চিকিৎসা দেওয়া হবে না। রোগী দেখা হবে না।’ এসময় ফোন বের করে ভিডিও করতে গেলে আমাদের আটকে রাখতে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ। এমনকী পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মো. মোশফিকুর বলেন, রোগী না দেখা ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। রোগী আসা মাত্রই সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কেক কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আনুষ্ঠানিক তেমন কোনো কিছুই নয়। ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারদের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটা হয়। যা এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে কিছুই করা হয়নি।

এ বিষয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, কেক কাটার সময় সেবা নিতে আসা ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। এটি সামান্য ভুল বোঝাবুঝি, বড় তেমন কিছু নয়। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে ওই রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিজনেস আওয়ার/২ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: