ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাসে অপরাধে জড়ালে তার দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে না

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩
  • 73

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রবাসে কেউ অপরাধ করলে তার দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদেশের যেটা প্রচলিত আইন সেটা প্রবাসীদের মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) স্থানীয় সময় রাতে দোহায় বাংলাদেশ এমএইচ স্কুলে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের বলেন, যে দেশে থাকবেন, সে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করেন বা কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, তার দায়-দায়িত্ব কিন্তু আমরা নেব না, কেউ নেবে না।

তিনি বলেন, কাতারে অপরাধ করলে কাতারের আইনে বিচার হবে বা যে দেশে থাকবেন, সে দেশের আইন অনুযায়ী বিচার হবে। এ বিষয়টা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

কারো কারো জন্য দেশের অন্য মানুষগুলো কিন্তু কষ্ট পায়, তাদের বিপদ হয়। স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, বিদেশে অপরাধ করলে দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে না। উদ্ধার করার চেষ্টা করব না। কারণ আমাদের এসব নিয়ে কথা শুনতে হয়, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা প্রবাসে লোক পাঠানোর যে সুযোগটা পাই, সে সুযোগটাও কিন্তু হারিয়ে যায়। আরও ১০ জন মানুষের কাজের সুযোগ থাকে, সে সুযোগটা তারা পায় না। একটা মানুষের অপরাধে অন্য মানুষের শাস্তি।

প্রবাসীদের বৈধ পথে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টাকা বৈধ পথে পাঠান, হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাবেন না। তাতে আপনারও লোকসান হবে, দেশেরও ক্ষতি হয়। অনেক সময় অনেকে টাকা মেরেও দেয়, সেটা আপনারা দেখবেন। সামান্য একটু বেশি পাওয়ার লোভে অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

তিনি বলেন, আপনারা রেমিট্যান্স পাঠান, আমরা প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক যেমন করে দিয়েছি, তেমন সোনালি ব্যাংক আছে। মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রাইভেট ব্যাংক আছে, ইসলামী ব্যাংক আছে। আপনারা কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন।

বৈধ পথে টাকা পাঠালে সরকারের প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বৈধ পথে টাকা পাঠালে সেখানে আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছি। প্রায় আড়াই শতাংশ প্রণোদনা আমরা দিচ্ছি।

বিদেশে যেখানে ব্যাংক নেই, সেখানে এজেন্ট ও মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

দালালের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কিছু লোক দালালদের খপ্পরে পড়ে জমিজমা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশে এসে ধোকায় পড়ে যায়, না কাজ পায়, না থাকার জায়গা পায়, অসহায় হয়ে পড়ে। এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা বিভিন্ন সুযোগ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা আসতে চায়, কেউ যেন অবৈধভাবে না আসে, সবাই বৈধ পন্থায় আসুক। তারা ভালো উপার্জন করতে পারবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুযোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিদেশে আসতে পারেন। ঘরবাড়ি বিক্রি করার প্রয়োজন নেই।

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলন (এলডিসি-৫) উপলক্ষে কাতার সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে শনিবার (০৪ মার্চ) কাতার আসেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/৭ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রবাসে অপরাধে জড়ালে তার দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে না

পোস্ট হয়েছে : ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রবাসে কেউ অপরাধ করলে তার দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদেশের যেটা প্রচলিত আইন সেটা প্রবাসীদের মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) স্থানীয় সময় রাতে দোহায় বাংলাদেশ এমএইচ স্কুলে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের বলেন, যে দেশে থাকবেন, সে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করেন বা কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, তার দায়-দায়িত্ব কিন্তু আমরা নেব না, কেউ নেবে না।

তিনি বলেন, কাতারে অপরাধ করলে কাতারের আইনে বিচার হবে বা যে দেশে থাকবেন, সে দেশের আইন অনুযায়ী বিচার হবে। এ বিষয়টা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

কারো কারো জন্য দেশের অন্য মানুষগুলো কিন্তু কষ্ট পায়, তাদের বিপদ হয়। স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, বিদেশে অপরাধ করলে দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে না। উদ্ধার করার চেষ্টা করব না। কারণ আমাদের এসব নিয়ে কথা শুনতে হয়, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা প্রবাসে লোক পাঠানোর যে সুযোগটা পাই, সে সুযোগটাও কিন্তু হারিয়ে যায়। আরও ১০ জন মানুষের কাজের সুযোগ থাকে, সে সুযোগটা তারা পায় না। একটা মানুষের অপরাধে অন্য মানুষের শাস্তি।

প্রবাসীদের বৈধ পথে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টাকা বৈধ পথে পাঠান, হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাবেন না। তাতে আপনারও লোকসান হবে, দেশেরও ক্ষতি হয়। অনেক সময় অনেকে টাকা মেরেও দেয়, সেটা আপনারা দেখবেন। সামান্য একটু বেশি পাওয়ার লোভে অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

তিনি বলেন, আপনারা রেমিট্যান্স পাঠান, আমরা প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক যেমন করে দিয়েছি, তেমন সোনালি ব্যাংক আছে। মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রাইভেট ব্যাংক আছে, ইসলামী ব্যাংক আছে। আপনারা কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন।

বৈধ পথে টাকা পাঠালে সরকারের প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বৈধ পথে টাকা পাঠালে সেখানে আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছি। প্রায় আড়াই শতাংশ প্রণোদনা আমরা দিচ্ছি।

বিদেশে যেখানে ব্যাংক নেই, সেখানে এজেন্ট ও মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

দালালের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কিছু লোক দালালদের খপ্পরে পড়ে জমিজমা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশে এসে ধোকায় পড়ে যায়, না কাজ পায়, না থাকার জায়গা পায়, অসহায় হয়ে পড়ে। এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা বিভিন্ন সুযোগ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা আসতে চায়, কেউ যেন অবৈধভাবে না আসে, সবাই বৈধ পন্থায় আসুক। তারা ভালো উপার্জন করতে পারবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সুযোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিদেশে আসতে পারেন। ঘরবাড়ি বিক্রি করার প্রয়োজন নেই।

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলন (এলডিসি-৫) উপলক্ষে কাতার সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে শনিবার (০৪ মার্চ) কাতার আসেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/৭ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: