ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা, গ্রেফতার ২

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩
  • 42

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ভোলার লালমোহনে বাকপ্রতিবন্ধী দুই সন্তানের জননী স্বপ্না আক্তার (২৯) নামে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মাথায় দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতা করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর বুধবার (৮ মার্চ) আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের জেল হাজাতে পাঠানো হয়। লালমোহন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাজিম (২১) উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুলবাগিচা এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে, তিনি পেশায় জাহাজের শ্রমিক ও একই এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে আনোয়ার (২১), তিনি পেশায় টাইলস মিস্ত্রি।

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানা যায়, গত রোববার (৫ মার্চ) রাতে উপজেলার দেওয়ানকান্দি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ওই বাকপ্রতিবন্ধী নারী। নিখোঁজের দুই দিন পর গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দুপুরে প্রতিবেশী মিঝি বাড়ির বাগানের ডোবার মধ্য থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত স্বপ্নার ভাই রিয়াজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে লালমোহন থানায় মামলা করেন।

নিহত স্বপ্নার ভাই রিয়াজ জানান, গৃহবধূর স্বামী শুক্কুর আলী দ্বিতীয় বিয়ে করায় তাকে দুই সন্তানসহ ফেলে রেখে খাগড়াছড়ি চলে যায়। সেই থেকে তাদের বাড়িতেই সন্তানদের নিয়ে বাস করছিলেন স্বপ্না। ৫ মার্চ সন্ধ্যায় দুই সন্তানকে বাড়িতে রেখে পার্শ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিল। এরপর আর সে বাড়ি ফিরেনি। রাত ৩টার দিকে মাকে না দেখে দুই সন্তান কান্নাকাটি শুরু করে। এর দুই দিন পর স্বপ্নার মরদেহ তাদের বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি নির্জন বাগানের ডোবার মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় গৃহবধূকে ধর্ষণের আলামত পেয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

জানা যায়, ঘটনার পরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিল আনোয়ার। ৭ মার্চ রাত ১২টার দিকে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট দিয়ে পালানোর সময় আনোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে একই দিন সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার করা হয় নাজিমকে।

পুলিশ ও আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার ও নাজিম জানিয়েছে, গত ৫ মার্চ সন্ধ্যার পর বাড়ির কাছের একটি দোকানে প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা শেষে ঘরে ফিরছিলেন বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ। এ সময় নাজিম ও আনোয়ার তার পিছু নেয়। ওই বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার একপর্যায়ে আসামিরা জোরপূর্বক তাকে বাগানের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে ধর্ষণের শিকার বাক প্রতিবন্ধী নারীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাগানের ডোবার মধ্য মরদেহ ফেলে পালিয়ে হয় তারা।

বিজনেস আওয়ার/১০ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা, গ্রেফতার ২

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ভোলার লালমোহনে বাকপ্রতিবন্ধী দুই সন্তানের জননী স্বপ্না আক্তার (২৯) নামে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মাথায় দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতা করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর বুধবার (৮ মার্চ) আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের জেল হাজাতে পাঠানো হয়। লালমোহন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাজিম (২১) উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুলবাগিচা এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে, তিনি পেশায় জাহাজের শ্রমিক ও একই এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে আনোয়ার (২১), তিনি পেশায় টাইলস মিস্ত্রি।

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানা যায়, গত রোববার (৫ মার্চ) রাতে উপজেলার দেওয়ানকান্দি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ওই বাকপ্রতিবন্ধী নারী। নিখোঁজের দুই দিন পর গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দুপুরে প্রতিবেশী মিঝি বাড়ির বাগানের ডোবার মধ্য থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত স্বপ্নার ভাই রিয়াজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে লালমোহন থানায় মামলা করেন।

নিহত স্বপ্নার ভাই রিয়াজ জানান, গৃহবধূর স্বামী শুক্কুর আলী দ্বিতীয় বিয়ে করায় তাকে দুই সন্তানসহ ফেলে রেখে খাগড়াছড়ি চলে যায়। সেই থেকে তাদের বাড়িতেই সন্তানদের নিয়ে বাস করছিলেন স্বপ্না। ৫ মার্চ সন্ধ্যায় দুই সন্তানকে বাড়িতে রেখে পার্শ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিল। এরপর আর সে বাড়ি ফিরেনি। রাত ৩টার দিকে মাকে না দেখে দুই সন্তান কান্নাকাটি শুরু করে। এর দুই দিন পর স্বপ্নার মরদেহ তাদের বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি নির্জন বাগানের ডোবার মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় গৃহবধূকে ধর্ষণের আলামত পেয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

জানা যায়, ঘটনার পরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিল আনোয়ার। ৭ মার্চ রাত ১২টার দিকে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট দিয়ে পালানোর সময় আনোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে একই দিন সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার করা হয় নাজিমকে।

পুলিশ ও আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার ও নাজিম জানিয়েছে, গত ৫ মার্চ সন্ধ্যার পর বাড়ির কাছের একটি দোকানে প্রয়োজনীয় মালামাল কেনা শেষে ঘরে ফিরছিলেন বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ। এ সময় নাজিম ও আনোয়ার তার পিছু নেয়। ওই বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার একপর্যায়ে আসামিরা জোরপূর্বক তাকে বাগানের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে ধর্ষণের শিকার বাক প্রতিবন্ধী নারীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাগানের ডোবার মধ্য মরদেহ ফেলে পালিয়ে হয় তারা।

বিজনেস আওয়ার/১০ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: