বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সচিব (পিএস) নূরউদ্দিন অপুকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তার জামিন বিষয়ে দুপুর ১টায় আদেশ দেবেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে শুনানি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। আর নুরউদ্দিন আহমেদ অপুর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে জামিন হয় অপুর। আর গত বছরের ২ ডিসেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। আর জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বরের ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা করে র্যাব। মামলায় ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) এবং ২০১৩ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৭ ও ৩০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে মতিঝিল সিটি সেন্টারে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনাইটেড করপোরেশনের অফিসে বিপুল পরিমাণ অর্থ মজুদের অভিযোগ পায় র্যাব-৩। সংবাদ পেয়ে ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদুল হাসানের ভাগ্নে এ এম হায়দার আলীকে আটক করে র্যাব।
এ সময় তার কাছ থেকে তিন কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। একই কাজে ব্যবহারের জন্য আরো পাঁচ কোটি টাকা মানিটারি এক্সপ্রেস অফিসে রেখে আসার কথা স্বীকার করেন হায়দার আলী।
ওই ঘটনায় ছয়জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা হয়। আসামিরা হলেন এ এম আলী হায়দার নাফিজ, জয়নাল আবেদীন, আলমগীর হোসেন, মিয়া নুরউদ্দিন আহমেদ অপু, আতিকুর রহমান আতিক ও মাহমুদুল হাসান। পরে অভিযোগপত্রে ছয়জনের সঙ্গে ফয়েজুর রহমানের নাম যুক্ত করা হয়।
আসামি নুরউদ্দিন আহমেদ অপু তারেক রহমানের পিএস ও শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন। আসামিদের মধ্যে আতিকুর রহমান আতিক ও মাহমুদুল হাসান শুরু থেকেই পলাতক। ফয়েজুর রহমান উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক। আর নাফিজ ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এই মামলায় ২০২১ সালের ১৩ জুন সাতজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় র্যাব। একই বছর ১২ আগস্ট মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়। ট্রাইব্যুনাল ২২ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তারের পর থেকে অপু কারাগারে আছেন। এ দুই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে এসে জামিন চান অপু। পরে গত বছরের ২ ডিসেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় অপুকে জামিন দেন হাইকোর্ট। আর অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের মামলায় জামিন হয় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত বছর ৫ ডিসেম্বর ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তার জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ অপুর জামিনের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে।
বিজনেস আওয়ার/১৪ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ