ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘সালমানের অভাব আমরা কেউ পূরণ করতে পারিনি’

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 41

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই ছবির সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ’র অকাল প্রস্থান বেদনা জাগিয়েছে তার সহশিল্পীদের মনে। মৃত্যুদিন কিংবা জন্মদিন এলে সালমানকে ঘিরে অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। চিত্রনায়ক রিয়াজের বেলাতেও তাই। সালমানের সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিলো রিয়াজের। সেটাকে দারুণ একটি প্রাপ্তি বলে মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, সালমান এমন একজন মানুষ ছিলো যাকে দুই যুগ পর এসেও মিস করি। সালমানের সঙ্গে অনেক স্মৃতি আছে। যতদিন যাচ্ছে স্মৃতিগুলো ততো গভীর হচ্ছে। মনে হচ্ছে সে ফিরে ফিরে আসে। সালমান পরবর্তী সময়ে আমি কাজ করেছি। কিন্তু আমি নিজে কখনোই বা কেউ দাবি করতে পারবে না সালমানের অভাব আমরা পূরণ করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, সালমানের যে ক্রেজটা ছিলো সেটি সে না থাকার ২৪ বছর পরও বহমান। এটা কিন্তু অস্বাভাবিক একটি গুণ। সালমানের মতো অভিনেতার জন্ম খুব রেয়ার। সব শ্রেণির দর্শককে সে জয় করতে পেরেছিলো। তার মধ্যে কি যেন একটা ছিলো যা দর্শককে টানতো। সহশিল্পী হিসেবেও তাকে দেখতাম অবাক হয়ে। আমার ধারণা আগামী দুই যুগেও হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমার সাথে দুটো সিনেমা ওর হয়েছিলো। একটি সম্পূর্ণ হয়েছিল ‘প্রিয়জন’। আরেকটি শেষ হওয়ার আগেই ও চলে যায়। আমি তখন নতুন ছিলাম। আমার কাছে সবসময় মনে হতো যে সালমান বেঁচে থাকতো, ওর সঙ্গে যদি আরও একবার স্ক্রিন শেয়ার করতে পারতাম! এমন একটি পার্সোনালিটি সম্পন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আর দেখা হবে না, এটা ভাবলেও মন খারাপ হয় খুব।

সালমানের স্মৃতিচারণ করে রিয়াজ জানান, অনেক স্মৃতিই রয়েছে। আবার অনেক স্মৃতি শেয়ার করতে পারবো না। আসলে এমন অনেক স্মৃতি রয়েছে যেটি আমার ভেতরে থেকে যাবে চিরকাল। কারণ সব স্মৃতি বলা যায় না।

তবে ছোট একটা ঘটনা বলি। আমি তখন গাজীপুরের হোতাপাড়ায় শুটিং করছি। তখন আমি নতুন। নিজের গাড়ি ছিলো না। সেসময়ে শুটিং ইউনিটের বাসে করে যাতায়াত করতাম। তো সেখানে শুটিং করছিলাম। সালমান শাহও একটি শুটিংয়ের জন্য ওখানে ছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রী সামিরাও। শুটিং শেষে দুজনই ফিরছিলাম।

ও জানলো যে আমি শুটিং ইউনিউটের বাসে যাবো। সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো, তুমি একটা হিরো মানুষ, বাসে যাবা? আমার গাড়িতে ওঠ। এই একটি জার্নি তার সঙ্গে আমার। গাড়িতে সালমান খুব মজা করছিলো। আমি পেছনে বসা ছিলাম। ওর স্পিড দেখে ভয় পেয়ে কুঁকড়ে ছিলাম। সেই সময়টায় দুজনে বেশ অনেক গল্পই করলাম। সিনেমা নিয়েও অনেক কথা হচ্ছিলো।

‘প্রিয়জন’ ছবির জন্য কক্সবাজারে শুটিং করেছিলাম। সেখানেও মজার গল্প আছে। আমি, সালমান ও শিল্পী ছিলাম। দেখলাম সালমান দুর্দান্ত অভিনয় করছে। শুটিং শেষ হলেই মজা আর দুষ্টামি। সবার সঙ্গে সবসময় হাসিখুশি মানুষ। তার এভাবে মৃত্যু মেনে নেয়া যায়নি, যাবেও না। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সালমান শাহ, এটাই দোয়া করি’

আমি করোনার আগে সিলেট গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে আমি সালমানের কবরের সামনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। কেমন যেন একটা অনুভূতি হলো মনের ভেতর-যোগ করেন রিয়াজ।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান নায়ক সালমান শাহ। মৃত্যুর ২৪ বছর পেরিয়ে এখনো ভক্তদের অন্তরে চিরসবুজ হয়ে আছেন এ স্বপ্নের নায়ক। সালমান শাহ আজও বেঁচে আছেন তার কাজের মাধ্যমে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘সালমানের অভাব আমরা কেউ পূরণ করতে পারিনি’

পোস্ট হয়েছে : ০২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই ছবির সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ’র অকাল প্রস্থান বেদনা জাগিয়েছে তার সহশিল্পীদের মনে। মৃত্যুদিন কিংবা জন্মদিন এলে সালমানকে ঘিরে অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। চিত্রনায়ক রিয়াজের বেলাতেও তাই। সালমানের সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিলো রিয়াজের। সেটাকে দারুণ একটি প্রাপ্তি বলে মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, সালমান এমন একজন মানুষ ছিলো যাকে দুই যুগ পর এসেও মিস করি। সালমানের সঙ্গে অনেক স্মৃতি আছে। যতদিন যাচ্ছে স্মৃতিগুলো ততো গভীর হচ্ছে। মনে হচ্ছে সে ফিরে ফিরে আসে। সালমান পরবর্তী সময়ে আমি কাজ করেছি। কিন্তু আমি নিজে কখনোই বা কেউ দাবি করতে পারবে না সালমানের অভাব আমরা পূরণ করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, সালমানের যে ক্রেজটা ছিলো সেটি সে না থাকার ২৪ বছর পরও বহমান। এটা কিন্তু অস্বাভাবিক একটি গুণ। সালমানের মতো অভিনেতার জন্ম খুব রেয়ার। সব শ্রেণির দর্শককে সে জয় করতে পেরেছিলো। তার মধ্যে কি যেন একটা ছিলো যা দর্শককে টানতো। সহশিল্পী হিসেবেও তাকে দেখতাম অবাক হয়ে। আমার ধারণা আগামী দুই যুগেও হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমার সাথে দুটো সিনেমা ওর হয়েছিলো। একটি সম্পূর্ণ হয়েছিল ‘প্রিয়জন’। আরেকটি শেষ হওয়ার আগেই ও চলে যায়। আমি তখন নতুন ছিলাম। আমার কাছে সবসময় মনে হতো যে সালমান বেঁচে থাকতো, ওর সঙ্গে যদি আরও একবার স্ক্রিন শেয়ার করতে পারতাম! এমন একটি পার্সোনালিটি সম্পন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আর দেখা হবে না, এটা ভাবলেও মন খারাপ হয় খুব।

সালমানের স্মৃতিচারণ করে রিয়াজ জানান, অনেক স্মৃতিই রয়েছে। আবার অনেক স্মৃতি শেয়ার করতে পারবো না। আসলে এমন অনেক স্মৃতি রয়েছে যেটি আমার ভেতরে থেকে যাবে চিরকাল। কারণ সব স্মৃতি বলা যায় না।

তবে ছোট একটা ঘটনা বলি। আমি তখন গাজীপুরের হোতাপাড়ায় শুটিং করছি। তখন আমি নতুন। নিজের গাড়ি ছিলো না। সেসময়ে শুটিং ইউনিটের বাসে করে যাতায়াত করতাম। তো সেখানে শুটিং করছিলাম। সালমান শাহও একটি শুটিংয়ের জন্য ওখানে ছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রী সামিরাও। শুটিং শেষে দুজনই ফিরছিলাম।

ও জানলো যে আমি শুটিং ইউনিউটের বাসে যাবো। সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো, তুমি একটা হিরো মানুষ, বাসে যাবা? আমার গাড়িতে ওঠ। এই একটি জার্নি তার সঙ্গে আমার। গাড়িতে সালমান খুব মজা করছিলো। আমি পেছনে বসা ছিলাম। ওর স্পিড দেখে ভয় পেয়ে কুঁকড়ে ছিলাম। সেই সময়টায় দুজনে বেশ অনেক গল্পই করলাম। সিনেমা নিয়েও অনেক কথা হচ্ছিলো।

‘প্রিয়জন’ ছবির জন্য কক্সবাজারে শুটিং করেছিলাম। সেখানেও মজার গল্প আছে। আমি, সালমান ও শিল্পী ছিলাম। দেখলাম সালমান দুর্দান্ত অভিনয় করছে। শুটিং শেষ হলেই মজা আর দুষ্টামি। সবার সঙ্গে সবসময় হাসিখুশি মানুষ। তার এভাবে মৃত্যু মেনে নেয়া যায়নি, যাবেও না। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সালমান শাহ, এটাই দোয়া করি’

আমি করোনার আগে সিলেট গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে আমি সালমানের কবরের সামনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। কেমন যেন একটা অনুভূতি হলো মনের ভেতর-যোগ করেন রিয়াজ।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান নায়ক সালমান শাহ। মৃত্যুর ২৪ বছর পেরিয়ে এখনো ভক্তদের অন্তরে চিরসবুজ হয়ে আছেন এ স্বপ্নের নায়ক। সালমান শাহ আজও বেঁচে আছেন তার কাজের মাধ্যমে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: