বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : চলতি বছরের ২১ মার্চ বিজনেস আওয়ার ২৪.কমে ‘পিপলস লিজিংয়ে ফের লুটপাট’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পিপলস লীজিং এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ভিপি ও হেড অফ এ্যাকাউন্টস এবং চীফ অপারেটিং অফিসার (ইন-চার্জ) মো. মনিরুল ইসলাম শামীম।
গত ২১ মার্চ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ফের লুটপাট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারীরা। ওইদিন ঢাকার পল্টনে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এই অভিযোগ করেন। মানববন্ধন শেষে পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বুধবার (২৯ মার্চ) লিখিত এক প্রতিবাদে মনিরুল ইসলাম শামীম জানান, পিপলস লীজিং এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখ হতে মহামান্য উচ্চ আদালতের ৯৬ নং আদেশের মাধ্যমে পুনঃগঠন কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের অন্য একটি আদেশ নং ১৩২, গত ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখ মাধ্যমে গঠিত পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে পুনঃগঠন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
চলতি বছরের ২১ মার্চ অত্র প্রতিষ্ঠানের কিছু সংখ্যক আমানতকারী তাদের গঠিত সংগঠন “ব্যক্তি
ও ক্ষুদ্র আমানতকারী কাউন্সিল” এর ব্যানারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং উক্ত মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পুনঃগঠন কার্যক্রমকে সমালোচিত করে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের মাধমে বক্তব্য প্রদান করে। এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য মহামান্য আদালতের আদেশ অবমাননার শামিল এবং মহামান্য আদালত কর্তৃক গঠিত পরিচালনা পর্ষদকে বিতর্কিত করার চক্রান্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরনের মিথ্যা বক্তব্য আর্থিক খাতকে আরও অস্থির করে তোলার সামিল, যা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে প্রতীয়মান হয়।
যেহেতু পিপলস লীজিং বর্তমানে মহামান্য উচ্চ আদালতের আদেশের মাধ্যমে পুনঃগঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে তাই উক্ত মানববন্ধনের “ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারী কাউন্সিল” পিপলস লীজিং এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড সম্বন্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ও তথ্য সংবাদপত্রে প্রকাশিত করার পূর্বে যাচাই বাছাই করা উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত সংবাদপত্র সমূহ ঐ সকল মিথ্যা তথ্য পিপলস লীজিং এর অফিস থেকে যাচাই বাছাই না করে প্রচার ও পত্রিকায় প্রকাশের ফলে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং স্টেক হোল্ডারগণের মধ্যেও আস্থর সংকট সৃষ্টি করেছে। এখানে সংগঠনের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিককে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের বেতন বাবদ ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে যা প্রকৃত পক্ষে ১ কোটি টাকাও নয় বরং এটা মহামান্য আদালত কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী খরচ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, “ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারী কাউন্সিল” এর সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক মাননীয় আদালত কর্তৃক নির্বাচিত একজন পরিচালক। আদায়কৃত ২০০ কোটি টাকার কথা উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে আদায় হয়েছে ৮৮ কোটি টাকা। উক্ত টাকা হতে ৩১ কোটি টাকা আদালত কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষ মানবিক বিবেচনায় সকল ব্যক্তি আমানতকারীকে প্রদান করার জন্য অনুমোদন করা হয়েছে। এখানে অখ্যাত ব্যাংকের কথা উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে আদালত কর্তৃক গঠিত পরিচালনা পর্ষদ এর সিদ্ধান্তক্রমে সীমান্ত ব্যাংকে ১৫ কোটি এবং ট্রাস্ট ব্যাংকে ৪০ কোটি টাকা এফডিআর করা হয়েছে। সুতরাং পিপলস লীজিং এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড এর পক্ষ থেকে উক্ত মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই প্রতিবাদলিপি প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ভুক্তভোগী আমানতকারীদের অভিযোগ ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে বিজনেস আওয়ার ২৪.কম ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এখানে বিজনেস আওয়ার ২৪.কম বা প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো স্বার্থ নেই। প্রতিবেদক কোনো রকম অনুমাননির্ভর বা মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেননি। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদক ওই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
২১ মার্চ বিজনেস আওয়ার ২৪.কমে ‘পিপলস লিজিংয়ে ফের লুটপাট’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি তুলে ধরা হলো- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ফের লুটপাট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারীরা। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ঢাকার পল্টনে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ অভিযোগ করেন। মানববন্ধন শেষে পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
আমানতকারীদের পক্ষে সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ঋণের ইতোমধ্যে ২০০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। যার মধ্যে একশত কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। এই অর্থ পরিচালক এবং চেয়ারম্যানের বেতনের পেছনে ব্যয় হয়েছে। বাকি একশত কোটি টাকা আমানতকারীদের ফেরত না দিয়ে নতুনভাবে ঋণ বিতরণের ফন্দি করছে তারা। এফডিআর করা হয়েছে, একটি অখ্যাত ব্যাংকে। ফের ওই টাকা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই যেকোনো মূল্যে আমানতকারীদের সুদে আসলে সব টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী কাউন্সিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক সঠিকভাবে নজরদারি না করায় পিপলস লিজিংয়ের অর্থ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারীরা। শুধু তাই নয়, এর পেছনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ দেখছেনও তারা। নিজেদের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ের অর্থ দ্রুত ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও সহযোগিতা কামনাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন কোম্পানির ছয় হাজার আমানতকারী।
বিজনেস আওয়ার/২৯ মার্চ, ২০২৩/এমএজেড