বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারে মৎসজীবী পরিবারের ছেলে ও বাঙাল মেয়ের বিয়ে হয়। তবে সামাজিক প্রথা অনুযায়ী সেই বিয়েকে মেনে নিতে পারেননি স্থানীয় সমাজপতি ও গ্ৰামের মোড়লরা। এ ঘটনায় নবদম্পতিকে ঘরে তুলতে পারছিল না ছেলের পরিবার।
সোমবার (২৭ মার্চ) বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের নজরে আসে।
এর আগে ওই নবদম্পতিরা মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন। পুলিশ সুপার সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন। অবশেষে জেলা পুলিশের প্রচেষ্টায় সমাজপতিরা বিষয়টি মেনে নেওয়ায় বাড়ি ফিরেছে সেই নবদম্পতি।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের একটি দল তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়।
ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামে।
জানা যায়, কাগাবলা গ্রামের ইমন মিয়ার সঙ্গে গত ১৯ মার্চ একই উপজেলার সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের বিয়ে হয়। ধর্মীয় বিধান মেনে চার লাখ টাকা কাবিনে নিকাহনামা রেজিস্টারের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের কথা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। ২৫ মার্চ পলি আক্তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনা জানিয়ে পোস্ট দেওয়ার পর আলোচনায় আসে বিষয়টি। এরপর পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নেয়।
পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পলি আক্তার বলেন, সমাজপতিদের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ভয়ে আমরা আত্মগোপনে ছিলাম। আজ আমাদের সংসারে আমরা ফিরেছি। সমাজ আমাদের মেনে নিয়েছে। আমরা সুন্দর জীবন ফিরে পেলাম।
সদর উপজেলার আপার কাগাবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমন মোস্তফা বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় নবদম্পতিরা তাদের বাড়ি ফিরেছে। গ্ৰামের সবপক্ষকে নিয়ে মডেল থানায় বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়। সেখানে সবাই একমত হন যে, তাদের সংসারে কেউ বাঁধা দিতে পারবেন না। আমরা তাদের মেনে নিয়েছি।
মৌলভীবাজারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, এখন সমাজের সবাই তাদের মেনে নিয়েছেন। বিষয়টির একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে। যার কারণে নবদম্পতি বাড়ি ফিরতে পেরেছে। আমাদের পুলিশের একটি টিম তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/৩০ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ