ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্বশুরের দেওয়া কেরোসিনের আগুনে প্রাণ গেল গৃহবধূর

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩
  • 56

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদন : রংপুরের মাহিগঞ্জে শ্বশুরের দেওয়া কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ সালমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ মারা গেছেন।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন।

তিনি বলেন, গত ২৮ মার্চ রংপুর থেকে এক গৃহবধূকে দগ্ধ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফিমেল হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) মারা যান তিনি। তার শরীরে ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

নিহত সালমার বড় বোন আলেমা বেগম বলেন, আমার ছোট বোন সালমা ভালোবেসে একই এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে স্বপন মিয়াকে চার বছর আগে বিয়ে করে। তাদের ঘরে ২২ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে তাকে নির্যাতন করে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে আমার বোনের শ্বশুর আক্তার মিয়া বোনের ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিতে চায়। এসময় আমার বোন বাধা দিলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, পরে তার স্বামী স্বপন মিয়া খবর পেয়ে আগুন নেভাতে এলে সেও কিছুটা দগ্ধ হয়। পরে আমরা সালমাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ওই দিনই তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার বোন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

আলেমা আরও বলেন, দরিদ্র ঘরের মেয়ে হওয়ায় মুখ বুজে সালমা সবকিছু সহ্য করে নিত। সালমার জামাই স্বপন মিয়া বাবুর্চির কাজ করে। ঘটনার দিন সালমার জামাই স্বপনের সঙ্গে তার বাবা আক্তার মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাজের উদ্দেশ্যে স্বপন ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরে সালমার শ্বশুর কেরোসিনের বোতল হাতে নিয়ে ঘর পুড়িয়ে দিতে চাইলে বাধা দেয় সালমা। সে বলে, এ ঘরটি আমাদের অনেক কষ্টের। আপনারা বাবা-ছেলে ঝগড়া করেছেন, ঘর পুড়িয়ে দেবেন কেন। এ কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে যায় আক্তার মিয়া। তখন সে সালমাকে বলে, ঘর পুড়তে দিবি না তাহলে তুই পুড়ে মর। এ কথা বলে সালমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে। ঘটনার সময় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সালমার শাশুড়ি রশিদা বেগম, ননদ বিলকিস এবং আলেয়া। ঘটনার পর আমার মা বাদী হয়ে সালমার শ্বশুর আক্তার মিয়া, তার শাশুড়ি রাশিদা বেগম, ননদ বিলকিস ও আলেয়ার নামে মাহিগঞ্জ থানায় মামলা করে।

বিজনেস আওয়ার/১ এপ্রিল, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শ্বশুরের দেওয়া কেরোসিনের আগুনে প্রাণ গেল গৃহবধূর

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদন : রংপুরের মাহিগঞ্জে শ্বশুরের দেওয়া কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ সালমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ মারা গেছেন।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন।

তিনি বলেন, গত ২৮ মার্চ রংপুর থেকে এক গৃহবধূকে দগ্ধ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফিমেল হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) মারা যান তিনি। তার শরীরে ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

নিহত সালমার বড় বোন আলেমা বেগম বলেন, আমার ছোট বোন সালমা ভালোবেসে একই এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে স্বপন মিয়াকে চার বছর আগে বিয়ে করে। তাদের ঘরে ২২ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে তাকে নির্যাতন করে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে আমার বোনের শ্বশুর আক্তার মিয়া বোনের ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিতে চায়। এসময় আমার বোন বাধা দিলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, পরে তার স্বামী স্বপন মিয়া খবর পেয়ে আগুন নেভাতে এলে সেও কিছুটা দগ্ধ হয়। পরে আমরা সালমাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ওই দিনই তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার বোন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

আলেমা আরও বলেন, দরিদ্র ঘরের মেয়ে হওয়ায় মুখ বুজে সালমা সবকিছু সহ্য করে নিত। সালমার জামাই স্বপন মিয়া বাবুর্চির কাজ করে। ঘটনার দিন সালমার জামাই স্বপনের সঙ্গে তার বাবা আক্তার মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাজের উদ্দেশ্যে স্বপন ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরে সালমার শ্বশুর কেরোসিনের বোতল হাতে নিয়ে ঘর পুড়িয়ে দিতে চাইলে বাধা দেয় সালমা। সে বলে, এ ঘরটি আমাদের অনেক কষ্টের। আপনারা বাবা-ছেলে ঝগড়া করেছেন, ঘর পুড়িয়ে দেবেন কেন। এ কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে যায় আক্তার মিয়া। তখন সে সালমাকে বলে, ঘর পুড়তে দিবি না তাহলে তুই পুড়ে মর। এ কথা বলে সালমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে। ঘটনার সময় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সালমার শাশুড়ি রশিদা বেগম, ননদ বিলকিস এবং আলেয়া। ঘটনার পর আমার মা বাদী হয়ে সালমার শ্বশুর আক্তার মিয়া, তার শাশুড়ি রাশিদা বেগম, ননদ বিলকিস ও আলেয়ার নামে মাহিগঞ্জ থানায় মামলা করে।

বিজনেস আওয়ার/১ এপ্রিল, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: