বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাহ্যিক কোনো আঘাতে নয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণেই র্যাব হেফাজতে মৃত্যু হয় নওগাঁর সুলতানা জেসমিনের বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
সোমবার (৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এই তথ্য জানিয়েছেন।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে জেসমিনকে আটক করে র্যাব। ওই দিন দুপুর ১২টার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, সুলতানা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে স্বজনদের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া সুলতানার মামা এবং নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু দেশ রূপান্তরকে বলেন, তার ভাগনি বুধবার সকালে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তির মোড় থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র্যাবের লোকজন সুলতানাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে মোবাইল ফোনে কল করে বিভিন্নজন তাকে জানান। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে তার ভাগনি সুলতানা জেসমিনের ছেলে সাহেদ হোসেন সৈকত মোবাইল ফোনে কল করে জানান, তার মাকে র্যাব সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছে। এরপর মন্টু তার ভাগনির সন্ধানে থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু সন্ধান পাননি।
পরে বেলা ২টার দিকে সুলতানা জেসমিনের ছেলে তাকে আবার মোবাইল ফোনে কল করে জানান তার মা নওগাঁ সদর হাসপাতালে আছেন। এরপর হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন তার ভাগনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু ভেতরে গিয়ে ভাগনির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলে র্যাব সদস্যরা বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন মন্টু। তবে জেসমিনকে র্যাবের কোন ক্যাম্প নেওয়া হয়েছিল তারা তার কিছুই জানতেন না। এর কিছুক্ষণ পর জেসমিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
বিজনেস আওয়ার/৩ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ