বিনোদন ডেস্ক: সোজাসাপ্টা কথা বলতে ভালোবাসেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। চিন্তা ও বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা করেন না। মনের ভাবনাগুলো খোলামেলা প্রকাশ করে থাকেন।
বিনোদন অঙ্গনের মানুষের পাশাপাশি তার ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার এই গুণের কথা জানেন। সময় পেলেই আসিফ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে মনের কথাগুলো তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার আসিফ তার ফেসবুকে লিখেছেন— আইদাহ দুপুরে আমার সঙ্গেই খেলে। ওর সঙ্গে খেলার সময় ড্রইংরুমে হঠাৎ করে একটা মুখবন্ধ খামের ওপর চোখ গেল, তারিখ লেখা ০৯/০৫/২০০৫। খুলে দেখলাম ভেতরে ছবি, সঙ্গে একটা চিঠি। ওর নাম শারমীন আক্তার মুন্নী, জোরারগঞ্জ, মিরসরাই, চট্টগ্রাম।
তিনি বলেন, আমাকে চাচ্চু সম্বোধন করেই লেখা। আমার ব্যক্তিজীবন গান পরিবার সব তার পছন্দ। একদিন অনেক বড় গায়িকা হওয়ার ইচ্ছে তার। চিঠিটা অন্য কারও হাতে পড়লে অবশ্যই যেন আমাকে পৌঁছে দেয়, এটা তার আকুতি। সেই চিঠি ১৮ বছর পর আজ খুলে দেখলাম। পড়তে গিয়ে চোখের কোনে পানিই চলে এলো।
তিনি আরও লিখেছেন— অদ্ভূত অপরাধবোধ আর শূন্যতায় বুকটা হাহাকার করে উঠল। মেয়েটা নিশ্চয়ই এখন ম্যাচুরড, নিশ্চয়ই তার মনে একটা গুমোট অতৃপ্তি রয়ে গেছে, যেটার দায়ভার সম্পূর্ণ আমার। পরিত্যক্ত ট্রাভেল স্যুটকেস আর কার্টনভর্তি লাখো চিঠি বেগমের সংগ্রহে, সেগুলো খোলার সময়ই মেলেনি। ফ্যানরা যেভাবে আমার অ্যালবামগুলো আগলে রেখেছে অসীম আবেগ দিয়ে, বেগমের কাছেও তাদের সব চিঠি সযত্নে রাখা রঙবেরঙের স্মৃতি নিয়ে।
আসিফ বলেন, মানুষের স্বপ্ন বিস্তৃত থাকে পাহাড়ের মতো উঁচুতে অথবা সমুদ্রের মতো বিশালতায়। হতাশা আসে মরুভূমির মতো। আমার স্বপ্নগুলো হয়ে গেছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের (গিরিখাত) মতো— নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া উত্তাল খরস্রোতা কলোরাডো নদীর মতো দুপাড় ভেঙেচুরে অজানা রোমাঞ্চকর গন্তব্যের দিকে ধাবমান। আমার আইকন সৈয়দ আবদুল হাদী ভাইকে একদিন প্রশ্ন করেছিলাম— আপনি ফেসবুক ব্যবহার করেন না কেন? প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন— এসব ননসেন্স কাজে আমি নেই, তার চেয়ে লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকাই বেশি আনন্দের। বহু বছর পর মনে হলো— আমার আসলে গোছানো কোনো অবসরের সুযোগ নেই।
তিনি আরও লেখেন, শান্ত স্নিগ্ধ সৌম্য টাইপ শব্দগুলো আমার সঙ্গে যায় না। কলোরাডো নদীর মতো স্বগর্জনে গিরিখাত কাঁপানো গতিপথই আমার নিয়তি। তবু পড়তে হবে, এই হাজার হাজার চিঠির ভেতরে আটকে থাকা আবেগগুলোর নির্যাস নেওয়ার সময় এসেছে। সব ধুলো মুছে আবারও একাকার হয়ে যাব পুরনো ভালোবাসায়।
বিজনেস আওয়ার/৫এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ