ঢাকা , রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শান্তির প্রত্যাশায় শেষ হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩
  • 201

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে যোগ দিয়েছে নানা বয়সী বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের হয়। শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে এটি শেষ হয়।

ইউনেস্কো কর্তৃক ‌মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান হচ্ছে বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি। শোভাযাত্রার সময় কঠোর নিরাপত্তায় ছিল। আয়োজনকে সফল করতে আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল আয়োজকরা।

উল্লেখ্য, পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

মঙ্গল শোভাযাত্রার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, যারা মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করতে চায়, এ সরকারের অবস্থান এ ধরনের চক্রান্তের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। আরও বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রার উৎসাহ উদ্দীপনা দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে শোভাযাত্রা হয়নি। গত বছর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আবার সেটা হচ্ছে। প্রাণ ফিরে এসেছে।

এরপর এ শোভাযাত্রা নিয়ে জঙ্গিবাদী হুমকির কথা হচ্ছে। আবার একজন হাইকোর্টে মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে রিট করেছেন। এই মানসিকতাকে পরিহার করতে হবে। এই মানসিকতা আমাদের সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করার জন্য। সরকারের অবস্থান এ ধরনের সংস্কৃতি বিনষ্ট করার চক্রান্তের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। আমরা এর নিন্দা জানায়।

এর আগে আজ ভোরের নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে আহির ভৈরব সুরে সারেঙ্গি বাদনের মধ্যদিয়ে রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয় পহেলা বৈশাখ।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন। বাঙালির বর্ষবরণে অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের ফান্ড রাইজিংয়ের ওপর নির্ভর করে। গত ১৯ মার্চ থেকে ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু হয়।

বৈশাখী উদযাপনের ইতিহাস মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পহেলা বৈশাখে যশোরে। তখন দেশে ছিল সামরিক শাসন। উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভশক্তির আগমনের প্রার্থনা করা হয়। এর উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।

বিজনেস আওয়ার/১৪ এপ্রিল, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শান্তির প্রত্যাশায় শেষ হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা

পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে যোগ দিয়েছে নানা বয়সী বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের হয়। শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে এটি শেষ হয়।

ইউনেস্কো কর্তৃক ‌মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান হচ্ছে বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি। শোভাযাত্রার সময় কঠোর নিরাপত্তায় ছিল। আয়োজনকে সফল করতে আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল আয়োজকরা।

উল্লেখ্য, পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

মঙ্গল শোভাযাত্রার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, যারা মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করতে চায়, এ সরকারের অবস্থান এ ধরনের চক্রান্তের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। আরও বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রার উৎসাহ উদ্দীপনা দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে শোভাযাত্রা হয়নি। গত বছর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আবার সেটা হচ্ছে। প্রাণ ফিরে এসেছে।

এরপর এ শোভাযাত্রা নিয়ে জঙ্গিবাদী হুমকির কথা হচ্ছে। আবার একজন হাইকোর্টে মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে রিট করেছেন। এই মানসিকতাকে পরিহার করতে হবে। এই মানসিকতা আমাদের সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করার জন্য। সরকারের অবস্থান এ ধরনের সংস্কৃতি বিনষ্ট করার চক্রান্তের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। আমরা এর নিন্দা জানায়।

এর আগে আজ ভোরের নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে আহির ভৈরব সুরে সারেঙ্গি বাদনের মধ্যদিয়ে রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয় পহেলা বৈশাখ।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের নির্বাচিত সদস্যরা কাজ করছেন। বাঙালির বর্ষবরণে অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের ফান্ড রাইজিংয়ের ওপর নির্ভর করে। গত ১৯ মার্চ থেকে ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইন শুরু হয়।

বৈশাখী উদযাপনের ইতিহাস মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পহেলা বৈশাখে যশোরে। তখন দেশে ছিল সামরিক শাসন। উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভশক্তির আগমনের প্রার্থনা করা হয়। এর উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।

বিজনেস আওয়ার/১৪ এপ্রিল, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: