ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, এনবিআরকে দুদকের চিঠি

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
  • 37

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড় পশুখাদ্য হিসেবে আমদানি করে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চিঠিতে চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এমন প্রক্রিয়ায় আমদানি এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ ও দুইটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি দুদকের অভিযোগ যাচাই-বাছাই শাখা থেকে দেওয়া চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মেসার্স এস বি ট্রেডার্স ও মেসার্স ন্যাশনাল কনসালটেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন পণ্য আমদানিকারক চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পারস্পরিক যোগসাজশে মিথ্যা তথ্য ও ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড়কে পশু খাদ্য হিসাবে আমদানি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।

তবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড় পশু খাদ্য হিসাবে আমদানি করে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সোনা মসজিদ কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।

তিনি বলেন, অভিযোগকারী ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা চেষ্টা করেছে। চিটাগুড় ও মানুষের খাবারযোগ্য গুড় ঘোষণায় আমদানি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার জানামতে মিথ্যা ঘোষণায় এ ধরনের পণ্য আমদানি হয়নি। একটি চক্র অবৈধ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছে। কারণ তারা অভিযোগে যে এইচএস কোডের কথা উল্লেখ করেছে, তা আসলে পেঁয়াজ ও ও রসুনের এইচএস কোড।

চিঠিতে বলা হয়, চিটাগুড় আমদানিতে টন প্রতি শুল্ক দিতে হয় ২০০ মার্কিন ডলার ও মানুষের খাবারযোগ্য গুড় টন প্রতি শুল্কের পরিমাণ ৪৫০ ডলার। চলছি বছরের ১৮ জানুয়ারি সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দুই হাজার ৬১০ কার্টুন গুড় আমদানি করে মেসার্স এস বি ট্রেডার্স। যার শুল্কায়ন মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৩১০ ডলার এবং গত ২১ জানুয়ারি আর একটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ২ হাজার ৭৬০ কাটুন গুড় আমদানি করে মেসার্স ন্যাশনাল কন্সালটেন্ট এন্ড কন্ট্রাকশন। যার শুল্কায়ন মূল্য টন প্রতি ২০০ ডলার। যে কোডে শুল্কায়ন করে গুড় আমদানি করা হয় তা পশু খাদ্য চিটাগুড়ের কোড। আমদানিকারকরা মানুষের খাবারযোগ্য গুড় পশুখাদ্য হিসাবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের অভ্যন্তরের গুড় শিল্পকে ধ্বংস করেই চলেছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। এই অবস্থায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দেশের স্বার্থে ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব আদায়ের অনুরোধ করা হয়েছে।

রাজশাহী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘গত মার্চে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে এনবিআরকে জানিয়েছি। তবে রাজস্ব বোর্ড কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা আমরা জানিনা, আমাদের কে কিছু জানানো হয়নি।’

বিজনেস আওয়ার/১৫ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, এনবিআরকে দুদকের চিঠি

পোস্ট হয়েছে : ০১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড় পশুখাদ্য হিসেবে আমদানি করে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চিঠিতে চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এমন প্রক্রিয়ায় আমদানি এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ ও দুইটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি দুদকের অভিযোগ যাচাই-বাছাই শাখা থেকে দেওয়া চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মেসার্স এস বি ট্রেডার্স ও মেসার্স ন্যাশনাল কনসালটেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন পণ্য আমদানিকারক চাপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পারস্পরিক যোগসাজশে মিথ্যা তথ্য ও ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড়কে পশু খাদ্য হিসাবে আমদানি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।

তবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মানুষের খাবার গুড় পশু খাদ্য হিসাবে আমদানি করে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সোনা মসজিদ কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।

তিনি বলেন, অভিযোগকারী ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা চেষ্টা করেছে। চিটাগুড় ও মানুষের খাবারযোগ্য গুড় ঘোষণায় আমদানি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার জানামতে মিথ্যা ঘোষণায় এ ধরনের পণ্য আমদানি হয়নি। একটি চক্র অবৈধ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছে। কারণ তারা অভিযোগে যে এইচএস কোডের কথা উল্লেখ করেছে, তা আসলে পেঁয়াজ ও ও রসুনের এইচএস কোড।

চিঠিতে বলা হয়, চিটাগুড় আমদানিতে টন প্রতি শুল্ক দিতে হয় ২০০ মার্কিন ডলার ও মানুষের খাবারযোগ্য গুড় টন প্রতি শুল্কের পরিমাণ ৪৫০ ডলার। চলছি বছরের ১৮ জানুয়ারি সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দুই হাজার ৬১০ কার্টুন গুড় আমদানি করে মেসার্স এস বি ট্রেডার্স। যার শুল্কায়ন মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৩১০ ডলার এবং গত ২১ জানুয়ারি আর একটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ২ হাজার ৭৬০ কাটুন গুড় আমদানি করে মেসার্স ন্যাশনাল কন্সালটেন্ট এন্ড কন্ট্রাকশন। যার শুল্কায়ন মূল্য টন প্রতি ২০০ ডলার। যে কোডে শুল্কায়ন করে গুড় আমদানি করা হয় তা পশু খাদ্য চিটাগুড়ের কোড। আমদানিকারকরা মানুষের খাবারযোগ্য গুড় পশুখাদ্য হিসাবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের অভ্যন্তরের গুড় শিল্পকে ধ্বংস করেই চলেছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। এই অবস্থায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দেশের স্বার্থে ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব আদায়ের অনুরোধ করা হয়েছে।

রাজশাহী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘গত মার্চে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে এনবিআরকে জানিয়েছি। তবে রাজস্ব বোর্ড কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা আমরা জানিনা, আমাদের কে কিছু জানানো হয়নি।’

বিজনেস আওয়ার/১৫ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: