বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি পরিদর্শনে গিয়ে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছেন দুই জাপানিজ। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, আইফোন, ক্রেডিট কার্ড কেড়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।
গত ২৪ এপ্রিল রাত ৯টার দিকের এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়। পরে মোহাম্মদপুর থেকে একজন ও তার দেওয়া তথ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি পরিদর্শনে যান ওই দুই জাপানিজ। তারা সেখানে ছবি তোলেন এবং ঘুরে দেখেন। একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, ১ লাখ ৫৩ হাজার জাপানি ইয়েন, বাংলাদেশি ২৮ হাজার টাকা, দুটি আইফোন, দুটি ক্রেডিট কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হোটেলে চলে যান ওই দুই জাপানিজ। পরদিন মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে হোটেলের ম্যানেজার তারেক আহমেদ মোহাম্মদপুর থানায় ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। দুই বিদেশি নাগরিকসহ মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ তাদের থানায় যেতে বলেন। ম্যানেজার তারেক দুই পর্যটককে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় যান। তারা একটি ছিনতাই মামলা করেন।
মামলার পর বধ্যভূমি এলাকার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ এবং ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরের বোটঘাট এলাকা থেকে খায়রুল ইসলাম স্বপন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে রায়েরবাজার শুঁটকির আরতের পেছনের কবরস্থানের দেয়ালসংলগ্ন মাঠ থেকে দুই পর্যটকের পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড ও একটি ছেঁড়া পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদপুর থানার পুলিশের অপর একটি দল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে জিহাদুল ইসলাম মামুন ও আবু রাসেল প্রত্যয় নামে দুই তরুণকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ওই পর্যটকদের একজনের একটি আইফোন, ৩০ হাজার ইয়েন, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লুটুথ উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক বলেন, ছিনতাইয়ের পর হোটেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে থানার পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। এর পরই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অপরাধীদের শনাক্ত করে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ছিনতাইকারীরা ছিনতাইয়ের পর কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে ঘুরতে যায়। তারা ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করেছিল। তাই তাদের গ্রেফতার বেগ পেতে হয়। তারা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে সীতাকুণ্ডে যায়। সেখানেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আবু রাসেল প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিজনেস আওয়ার/২৯ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ