ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে ফটুবলারের ‘আত্মহত্যা’

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩
  • 53

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের নির্মিতব্য ড্রেসিংরুমে গলায় ফাঁস দিয়ে এক ফুটবলার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে তার স্বজনেরা।

শনিবার (০৬ মে) গভীর রাতে ইমোতে পরকীয়া প্রেমিকাকে প্রথমে আত্মহত্যার সরঞ্জমাদির ছবি পাঠান তিনি। পরে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেন।

পরদিন (রোববার) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে ওই ফুটবলারের মরদেহ উদ্ধার করেছে বরিশাল থানা পুলিশ।

আত্মহননকারী মো. সোহেল জমাদ্দার (২৩) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রায়াপুর বটতলা এলাকার হাফিজ জমাদ্দারের ছেলে। তিনি ঢাকার সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলের গোলরক্ষক ছিলেন। এই ফুটবলার বিবাহিত ও আট মাস বয়সী এক ছেলের বাবা।

কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ফাঁস নেওয়ার পর দড়ি ছিড়ে নিচে পড়ে যাওয়ায় তার মাথা ফেটে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার আগে পাঠানো ছবিও পাওয়া গেছে। তার মোবাইল ফোন আলমত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।

ফুটবলারের বোন শান্তা জানান, বিয়ের আগে বরিশাল নগরের বেসরকারি নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সোহেলের। তাদের সম্পর্ক না টেকায় সোহেলকে অন্যত্র বিয়ে করানো হয়।

তবে সম্প্রতি পরিবারের সবার অজান্তে সেই মেয়ের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি দেখা দিলেও ওই মেয়ে আর সোহেলকে কোনোভাবেই ফেরানো যায়নি।

শান্তা বলেন, শনিবার স্ত্রীর সঙ্গে সোহেল ভাইয়ের ঝগড়া হয়। ভাবী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এদিকে রোববার খেলা থাকায় শনিবারই স্টেডিয়ামে আসেন সোহেল ভাই। সন্ধ্যার পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অন্যান্য খেলোয়াড়রা সোহেল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। আমিও যোগাযোগের চেষ্টা করে পাইনি।

পরে ওই মেয়ে (সোহেলের প্রেমিকা) জানান, সোহেল ইমোতে তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে জানিয়ে দড়ি ও একটি মইয়ের ছবি পাঠায় তাকে। রাতে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি জানার পর সোহেল ভাইয়ের ইমো নম্বরে কল দিই। কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। সকালে এসে তার মরদেহের সন্ধান পাই।

সোহেলের সহ-খেলোয়ার মো. রায়হান বলেন, সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলে গোলরক্ষক হিসেবে দুই বছর খেলেছে সোহেল। সম্প্রতি বরিশালের বিভিন্ন দলে খেলত সে। আউটার স্টেডিয়ামের জন্য নির্মিতব্য ড্রেসিংরুমের বাথরুমে ফ্যানের আংটার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সোহেল।

এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা হবে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/৭ মে, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে ফটুবলারের ‘আত্মহত্যা’

পোস্ট হয়েছে : ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের নির্মিতব্য ড্রেসিংরুমে গলায় ফাঁস দিয়ে এক ফুটবলার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে তার স্বজনেরা।

শনিবার (০৬ মে) গভীর রাতে ইমোতে পরকীয়া প্রেমিকাকে প্রথমে আত্মহত্যার সরঞ্জমাদির ছবি পাঠান তিনি। পরে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেন।

পরদিন (রোববার) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে ওই ফুটবলারের মরদেহ উদ্ধার করেছে বরিশাল থানা পুলিশ।

আত্মহননকারী মো. সোহেল জমাদ্দার (২৩) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রায়াপুর বটতলা এলাকার হাফিজ জমাদ্দারের ছেলে। তিনি ঢাকার সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলের গোলরক্ষক ছিলেন। এই ফুটবলার বিবাহিত ও আট মাস বয়সী এক ছেলের বাবা।

কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ফাঁস নেওয়ার পর দড়ি ছিড়ে নিচে পড়ে যাওয়ায় তার মাথা ফেটে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার আগে পাঠানো ছবিও পাওয়া গেছে। তার মোবাইল ফোন আলমত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।

ফুটবলারের বোন শান্তা জানান, বিয়ের আগে বরিশাল নগরের বেসরকারি নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সোহেলের। তাদের সম্পর্ক না টেকায় সোহেলকে অন্যত্র বিয়ে করানো হয়।

তবে সম্প্রতি পরিবারের সবার অজান্তে সেই মেয়ের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি দেখা দিলেও ওই মেয়ে আর সোহেলকে কোনোভাবেই ফেরানো যায়নি।

শান্তা বলেন, শনিবার স্ত্রীর সঙ্গে সোহেল ভাইয়ের ঝগড়া হয়। ভাবী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এদিকে রোববার খেলা থাকায় শনিবারই স্টেডিয়ামে আসেন সোহেল ভাই। সন্ধ্যার পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অন্যান্য খেলোয়াড়রা সোহেল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। আমিও যোগাযোগের চেষ্টা করে পাইনি।

পরে ওই মেয়ে (সোহেলের প্রেমিকা) জানান, সোহেল ইমোতে তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে জানিয়ে দড়ি ও একটি মইয়ের ছবি পাঠায় তাকে। রাতে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি জানার পর সোহেল ভাইয়ের ইমো নম্বরে কল দিই। কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। সকালে এসে তার মরদেহের সন্ধান পাই।

সোহেলের সহ-খেলোয়ার মো. রায়হান বলেন, সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলে গোলরক্ষক হিসেবে দুই বছর খেলেছে সোহেল। সম্প্রতি বরিশালের বিভিন্ন দলে খেলত সে। আউটার স্টেডিয়ামের জন্য নির্মিতব্য ড্রেসিংরুমের বাথরুমে ফ্যানের আংটার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সোহেল।

এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা হবে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/৭ মে, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: