বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দশ বছরে প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) প্রকল্পের ২৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুদকের (ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়) সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বুধবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞতির মাধ্যমে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও জানায়, ওই মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা ওয়াসার সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক ও পিপিআই প্রকল্প পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান মিঞা মো. মিজানুর রহমান (৬২), ওয়াসার সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক ও পিপিআই পরিচালনা পর্ষদের মো. হাবিব উল্লাহ ভূইয়া (৫৯) এবং ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব জোন-৬ এর কম্পিউটার অপারেটর মো. নাঈমুল হাসান (৫১)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দশ বছরে ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মধ্যে সই করা চুক্তি অনুযায়ী পিপিআই কার্যক্রমের ২৪৮ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত ওই তিন আসামি। তারা পরস্পর যোগসাজশে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে পিপিআই পরিচালনা কমিটির নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব থেকে অবৈধভাবে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামরা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, উল্লেখিত দশ বছরে সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পিপিআই প্রকল্পের বিল বাবদ ৩৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৯ টাকা জনতা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার কর্পোরেট শাখার চলতি হিসাব নং- ০১০০০০০৪০২০৬৫ এর মাধ্যমে বর্ণিত সমিতিকে প্রদান করা হয়। বর্ণিত সময়ের স্টেটমেন্ট, ওই সময়ের অডিট রিপোর্ট, সমিতির ক্রয়কৃত অন্যান্য সম্পদ রেজিস্টার, পিপিআই প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস, সমিতির সদস্যদের প্রদানকৃত ডিভিডেন্ট, ব্যাংকের সার্ভিস চার্জ, আসবাবপত্র ক্রয়, যানবাহন ক্রয়, স্থাপনা বাবদ ব্যয়ের তথ্য পর্যালোচনান্তে বর্ণিত সময়ে ৯৫ কোটি ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৫ টাকা ব্যয়ের রেকর্ড পাওয়া যায়। এছাড়া ওই সময় ব্যাংক হিসাবটিতে স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮১৪ টাকা। সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি, পিপিআই পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ব্যয়ের হিসাব বা খাত উল্লেখ বা প্রমাণ অনুসন্ধানকালে দেখাতে পারেননি। ফলে ২৪৮ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বিজনেস আওয়ার/১০ মে, ২০২৩/এমএজেড