বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে অবশ্যই আমাদেরকে দুর্নীতিকে না বলতে হবে, দুর্নীতির বিরূদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধন) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। আরও বলেন,জনসচেতনতাই রুখবে দুর্নীতি।
বুধবার ঝিনাইদহে “রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ” এই শ্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস. এম. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এ গণশুনানিতে বক্তব্য রাখেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (তদন্ত ২ ) মো. জাকির হোসেন, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, খুলনা বিভাগের পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ, ঝিনাইদহ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. এন. এম. শাহজালাল, ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাঈদ আনোয়ার।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা হবে উল্লেখ ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুর্নীতির বিরূদ্ধে জিরো টলারেন্স। দুর্নীতিকে প্রতিহত করতে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে অবশ্যই আমাদেরকে দুর্নীতিকে না বলতে হবে। দুর্নীতির বিরূদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করতে হবে।
আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সরকারি পরিসেবা যে কোন মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সরকারি কর্মচারীদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
কমিশনের সিদ্ধন্ত অনুসারে গণশুনানির আয়োজন করে ঝিনাইদহ দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়। সরকারী পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারী কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই উক্ত গণশুনানির মূল অভিপ্ৰায়। গণশুনানিতে ঝিনাইদহের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার, সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ দৃঢ়তার সাথে কমিশনের কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তাদের অভিযোগগুলো দুদকের কর্মকর্তারা শুনেছেন। ওইসময় কিছু অভিযোগের সমস্যা সমাধান করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তীতে কমিশন কর্তৃক যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গণশুনানিতে বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, নির্বাচন অফিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পৌরসভা ও ইনিউন পরিষদ, পাসপোর্ট, হাসপাতাল, ভূমি অফিস, বিএডিসি, ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিবেশ অধিদপ্তর, সমাজসেবা অফিস, সেটেলমেন্ট অফিসসহ ঝিনাইদহের ২৬টি দপ্তরের বিরূদ্ধে ১১৩টি অভিযোগ পাওয়া যায়। তন্মধ্যে ২২টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শুনানির জন্য সেবাপ্রার্থী জনসাধারণ সরাসরি উপস্থাপন করেছেন। উপস্থাপিত ২২টি অভিযোগের মধ্যে ঝিনাইদহের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং পাসপোর্ট অফিসের বিরূদ্ধে আনিত ২টি অভিযোগের বিষয়ে যাচাইঅন্তে অনুসন্ধান চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ঝিনাইদহের বিআরটিএ অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সেটেলমেন্ট অফিস, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রভৃতি অফিসের বিরূদ্ধে আনিত ২০টি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। গণশুনানি ঝিনাইদহের সর্বস্তরের নাগরিকদের উপস্থিতিতে স্বত:স্ফুর্তভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/১৭ মে, ২০২৩/এমএজেড