বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে অনেক পণ্যের ওপরে নতুন করে শুল্ক ও কর আরোপ হতে পারে। ফলে ওইসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে আগামীতে। আসন্ন বাজাটে বাড়ার তালিকায় রয়েছে দামি গাড়ি, নির্মাণ সামগ্রী, ভূমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, সিগারেট, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম। জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আগামী বাজেটে দামি গাড়ির ওপর আরো কর আরোপ হতে পারে। ফলে বাজেটে গাড়ির দাম বাড়তে পারে। ২০০১ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানিতে এখন ২০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। যেটা বাড়িয়ে ২৫০ শতাংশ এবং ৩০০১ থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে ৫০০ শতাংশ করা হতে পারে। ২০০০ সিসির বেশি ইঞ্জিন ক্ষমতাবিশিষ্ট গাড়ি সাধারণত জিপগাড়ি হয়। এখন দেশে বিপুলসংখ্যক জিপগাড়ি বা এসইউভি মডেলের গাড়ি আসছে। জনপ্রিয় হচ্ছে জিপগাড়ির ব্যবহার। টয়োটা, মিতসুবিশি, নিশান, টাটাসহ নানা খ্যাতনামা কোম্পানির গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে।
গত এক বছরে রড, সিমেন্ট, ইট ও অন্যান্য পণ্যের দাম ২০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। এতে অনেক প্রকল্পের কাজ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থেমে আছে। দেশে ক্রমাগত নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়তে থাকার মধ্যেই সিমেন্টের কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়তে পারে আগামী বাজেটে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) এলাকায় জমি নিবন্ধনের ট্যাক্স বিদ্যমান ৩ শতাংশ ও ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে যথাক্রমে ৪ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া ফ্ল্যাট বিক্রিতে বিদ্যমান গেইন ট্যাক্স বাড়তে পারে। ফলে আগামী অর্থবছর থেকে উভয় ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ গুণতে হবে।
বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়ানো হচ্ছে। নিম্নস্তরের এক প্যাকেট (২০ শলাকার) সিগারেটের দাম ৯০ টাকা, মধ্যম স্তরের ১৩৪, উচ্চস্তরের ২২৬ এবং অতি উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম ৩০০ টাকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে জর্দা-গুলের দাম। তবে বিড়ির দাম অপরিবর্তিত থাকবে। ধনীদের চাল হিসেবে খ্যাতি পাওয়া বাসমতি চাল আমদানিতে ভ্যাট বসানো হচ্ছে। এতে চালের দাম বাড়তে পারে। এতে বিরিয়ানি কিংবা কাচ্চির দাম বাড়তে পারে। দেশে বাদাম চাষকে উৎসাহিত করতে কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই আমদানি করা কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে।
এবারের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এর প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর দেশের জিডিপির আকার ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ থেকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
বিজনেস আওয়ার/১ জুন, ২০২৩/এমএজেড
