ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চূড়ান্ত বাজেটে ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি ডিএসইর

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩
  • 80

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : আসছে চূড়ান্ত বাজেটে বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি ও লভ্যাংশ আয়ের ওপর আরোপিত উৎসে কর প্রত্যাহারসহ ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই)।

মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাজধানীর বিজয়নগরের ফারস্ হোটেল এন্ড রিসোর্ট (৪র্থ তলা) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু এসব কথা জানান।

বকি প্রস্তাব গুলো হচ্ছে- তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান দশ শতাংশ করা, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই কোম্পানিগুলোর কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা এবং ব্রোকার হাউজের লেনদেনের ওপর উৎসে কর কমানোর দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বলেন, শেয়ারবাজারকে প্রাণবন্ত ও বিনিয়োগবান্ধব করার লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো সদয় বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি। দাবিগুলো হচ্ছে-

বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি :

বর্তমানে কর্পোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট যা এটি শেয়ারবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হলে একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে।

লভ্যাংশ আয়ের ওপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসেবে বিবেচনাকরণ :

কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপণ। লভ্যাংশের ওপর উৎস কর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে৷

তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান বৃদ্ধি :

শেয়ারবাজারে তালিকাভুকত কোম্পানির এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। তাহলে কর সুবিধা নেওয়ার জন্য অধিক সখ্যক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে। যা পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করবে।

স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডারদের উৎসে কর কমানো :

ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার (ব্রোকারেজ হাউজের মালিক) কোম্পানির প্রধান আয় (অর্থাৎ টার্ন-ওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয়, তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে।

তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য হ্রাসকৃত-রেয়াতযোগ্য হারে কর আরোপ :

ডিএসইর এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পাথ্যর্ক নূন্যতম ১০ শতাং করার প্রস্তাব করছি। বর্তমানে ডিএসইর তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কর প্রদান করতে হয়, যা কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং এসএমই কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ হারাচ্ছে। ফলে এ সব কোম্পানির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না। যদি এই জাতীয় কোম্পানিগুলোকে হ্রাসকৃত হারে কর ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে উক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের কর আদায় বৃদ্ধি পাবে।

কোম্পানির ভ্যাট হার কমানো:

বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। আশা করছি পুঁজিবাজারে স্বার্থে বিবেচনা করবে।

সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রুবাবা দৌলা, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিএসইর সিএফও ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) সাত্তিক আহমেদ শাহ, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সামিউল হক এবং আসাদুর রহমান।

বিজনেস আওয়ার/০৬ জুন, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চূড়ান্ত বাজেটে ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি ডিএসইর

পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : আসছে চূড়ান্ত বাজেটে বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি ও লভ্যাংশ আয়ের ওপর আরোপিত উৎসে কর প্রত্যাহারসহ ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই)।

মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাজধানীর বিজয়নগরের ফারস্ হোটেল এন্ড রিসোর্ট (৪র্থ তলা) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু এসব কথা জানান।

বকি প্রস্তাব গুলো হচ্ছে- তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান দশ শতাংশ করা, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই কোম্পানিগুলোর কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা এবং ব্রোকার হাউজের লেনদেনের ওপর উৎসে কর কমানোর দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বলেন, শেয়ারবাজারকে প্রাণবন্ত ও বিনিয়োগবান্ধব করার লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো সদয় বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি। দাবিগুলো হচ্ছে-

বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি :

বর্তমানে কর্পোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট যা এটি শেয়ারবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হলে একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে।

লভ্যাংশ আয়ের ওপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসেবে বিবেচনাকরণ :

কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপণ। লভ্যাংশের ওপর উৎস কর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে৷

তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান বৃদ্ধি :

শেয়ারবাজারে তালিকাভুকত কোম্পানির এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। তাহলে কর সুবিধা নেওয়ার জন্য অধিক সখ্যক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে। যা পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করবে।

স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডারদের উৎসে কর কমানো :

ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার (ব্রোকারেজ হাউজের মালিক) কোম্পানির প্রধান আয় (অর্থাৎ টার্ন-ওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয়, তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে।

তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য হ্রাসকৃত-রেয়াতযোগ্য হারে কর আরোপ :

ডিএসইর এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পাথ্যর্ক নূন্যতম ১০ শতাং করার প্রস্তাব করছি। বর্তমানে ডিএসইর তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কর প্রদান করতে হয়, যা কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং এসএমই কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ হারাচ্ছে। ফলে এ সব কোম্পানির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর আদায় সম্ভব হচ্ছে না। যদি এই জাতীয় কোম্পানিগুলোকে হ্রাসকৃত হারে কর ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে উক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের কর আদায় বৃদ্ধি পাবে।

কোম্পানির ভ্যাট হার কমানো:

বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। আশা করছি পুঁজিবাজারে স্বার্থে বিবেচনা করবে।

সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রুবাবা দৌলা, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিএসইর সিএফও ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) সাত্তিক আহমেদ শাহ, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সামিউল হক এবং আসাদুর রহমান।

বিজনেস আওয়ার/০৬ জুন, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: