আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মৃত্যুর মাতম তুলে এবার ল্যাতিন আমেরিকার বুকে থাবা দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। বিশেষ করে করোনার সংক্রমণ ব্রাজিল, মেক্সিকো ও পেরুর মতো দেশগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে গোটা ল্যাতিন অঞ্চল।
এরইমধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালি, স্পেন ও রাশিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯১ হাজার ২২২ জন। যা গোটা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৬ হাজার ৩২৪ জন।
শুধু আক্রান্ত নয় মৃত্যুতেও ব্রাজিলের অবস্থা বিপর্যস্ত। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, ব্রাজিলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও এক হাজার ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা এখন ২৪ হাজার ৫১২। যা ল্যাতিন আমেরিকায় সর্বোচ্চ।
প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজিওয়ের প্রধান ক্যারিসা ইটিয়েন বলেন, ল্যাতিন আমেরিকা বিশ্বব্যাপী মহামারির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো লকডাউন বিরোধী। আর এই মতবিরোধের কারণেই গত এপ্রিলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক মেন্ডেটা। এরপর নতুন যিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন তাকেও বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোকে নিয়ে দেশটিতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় তার পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
ল্যাতিন আমেরিকার অপর দেশ মেক্সিকোতে গত মঙ্গলবার একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন করে ৩ হাজার ৪৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৭৪ হাজার ৫৬০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮ হাজার ১৩৪ জন মারা গেছেন। এই প্রথম দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচশো মৃত্যু ছাড়াল।
মেক্সিকোতে এমন সময় রোগী বাড়তে শুরু করল, যখন দেশটি লকডাউন শিথিল করে জনজীবন স্বাভাবিক করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির সরকার চাইছে, স্থবির হয়ে থাকা অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে। বিশেষ করে করোনার সংক্রমণ কম যেসব অঞ্চলে সেখানে কারখানা খোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।
পেরুতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৫১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৫৭৭২ জন। একদিনে ১৫৯ জনের মৃত্যু নিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এখন ৩ হাজার ৭৮ জন।
চিলিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৭৭ হাজার ৬৬১ জন মানুষ। এখন পর্যন্ত ৮০৬ জন মারা গেছেন।
বিজনেস আওয়ার/২৭ মে, ২০২০/এ