বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রেমের টানে ভারতে স্বামী সন্তান ফেলে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন নার্গিসা বেগম মল্লিক (২৯) নামে এক গৃহবধূ। তিনি নিজেকে কুমারী পরিচয়ে ওই যুবককে বিয়ে করে। সম্প্রতি আদালতের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার দাদপুর গ্রামের ইরান সরকারের ছেলে জুয়েল সরকারকে (২৪) বিয়ে করেন তিনি।
সোমবার (১২ জুন) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতীয় ওই গৃহবধূ নিজেকে নাইসা মল্লিক নামে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি নার্গিসা বেগম মল্লিক। তবে প্রেমের শুরুতে মিথ্যা তথ্য দিলেও বয়সে পাঁচ বছরের ছোট জুয়েল প্রেমিকাকে বিয়ে করে দিব্যি সংসার করছেন। এতে আপত্তিও তোলেনি জুয়েলের পরিবার।
২৪ মে জুয়েলের কাছে চলে আসেন নার্গিসা মল্লিক। পরদিন সিরাজগঞ্জ আদালতে দুজন বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে ভারতে স্বামী সন্তান থাকার বিষয়টি গোপন করেন।
কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যমে তিনি স্বামী সন্তান রেখে টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে পালিয়েছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয় ১২ বছর আগে ভারতের বাঁকুড়া জেলার ফজলুর রহমান মীরের সঙ্গে দানগড় ধারেশা মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা নার্গিসা বেগম মল্লিকের বিয়ে হয়। মীর জিসান নামে তাদের আট বছরের সন্তানও আছে। হঠাৎ নিখোঁজ হন গৃহবধূ নার্গিসা। এ ঘটনায় ভারতের দমদুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও করেছেন তার স্বামী ফজলুর রহমান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফজলুর রহমান মীর বলেন, একদিন নার্গিসা আমাকে ফোন করে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার কথা জানায়। আমি তাকে অসংখ্যবার ফিরে আসতে বলি। আমাদের ছেলে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে হাইকমিশনেও অভিযোগ করেছি।
নার্গিসার বাবা খায়রুল মল্লিক বলেন, আমার মেয়ে তার স্বামীর সঙ্গে ১২ বছর ঘর সংসার করেছে। ফজলুরের সঙ্গে তার কোনো সমস্যা ছিল না। মোটামুটি সুখে শান্তিতেই ছিল। কেন চলে গেছে আমরা বুঝতে পারিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নার্গিসা বেগম বলেন, ফজলুর রহমান আমাকে রাতদিন নির্যাতন করতো। যে কারণে তার সঙ্গে সংসার করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ জন্য সংসার ছেড়ে জুয়েলের কাছে চলে এসেছি। জুয়েলকে বিয়ে করে বেশ ভালো আছি। বাকি জীবন এদেশেই থাকতে চাই।
জুয়েলের বাবা ইরান এসব মেনে নিয়ে বলেন, আমরা তো এতকিছু জানতাম না। ভেবেছিলাম মেয়েটি অবিবাহিত। পরে জানতে পেরেছি ভারতে তার স্বামী ও সন্তান আছে। যেহেতু ছেলে বিয়ে করেই ফেলছে, আমার কোনো আপত্তি নাই৷
এ প্রসঙ্গে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ওই গৃহবধূ যেদিন জুয়েলের বাড়িতে আসেন, সেদিন পুলিশ পাঠিয়ে তার পাসপোর্ট ও ভিসা দেখা হয়েছে। শুনেছি তার আগের স্বামী নাকি ভারতে হাইকমিশনে অভিযোগ করেছে। তবে আমরা কোনো নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
বিজনেস আওয়ার/১৩ জুন, ২০২৩/এএইচএ