বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নামের মিল থাকায় ডাকাতি মামলায় দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির পরিবর্তে জেল খাটছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন ফিরোজ আলম হাওলাদার (৪৫)। এমনি দাবি তার পরিবারের। ফিরোজের মুক্তির দাবিতে শনিবার (৮ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম।
সুরাইয়া বেগম লিখিত বক্তব্যে জানান, আমি সুরাইয়া বেগম। আমার স্বামী মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার। আমরা ঝালকাঠির নলছিটি থানার বাসিন্দা। আমার স্বামী মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার ঢাকার আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন হিসেবে নিয়মিত চাকরি করে আসছিলেন। কিন্তু এ বছর মার্চের ৬ তারিখ বেলা ১১টার দিকে বরিশাল র্যাব-৮ এর একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে নলছিটি থানায় হস্তান্তর করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তাকে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার (মামলা নং-২৬) ২০০৭ সালের মার্চে ১৩ তারিখের একটি ডাকাতি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমি ও আমার স্বজনরা ফরিদপুরে গিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে জানতে পারি উক্ত মামলার ৫নং আসামি হিসেবে জুয়েল, বাবা- অজ্ঞাত উল্লেখ আছে। আরও জানতে পারি ইতোপূর্বে উক্ত মামলার ৫নং আসামি জুয়েল ওরফে ফিরোজাল ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় অন্য আরেকটি মামলায় (মামলা নং-১১) ১২.০৬.২০০৩ তারিখে গ্রেফতার হওয়ার পর ২৮.০৩.২০০৪ তারিখ পর্যন্ত ফরিদপুর কারাগারে আটক ছিলেন। সেখানে আসামির নাম ফিরোজাল ও বাবার নাম- মনু মিয়া, গ্রাম-বৈশাখিয়া, থানা- নলছিটি, জেলা- ঝালকাঠি উল্লেখ আছে।
আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলার আসামি হতো তাহলে ২০০৩ সনে সেই ডাকাতি মামলার আসামি ফিরোজাল ৯ মাস জেল হাজত খাটে কিভাবে? তারপর থেকে সে পলাতক আছে। আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলায় কারাগারে থাকতো তাহলে তার চাকরি থাকার কথা না। আমার স্বামী স্বাভাবিকভাবে নিজের বাড়িতে অবস্থান করতেন এবং তিনি যে নিয়মিত তার কর্মস্থলে হাজিরা দিয়েছেন সেটার তথ্য ও প্রমাণাদি আমাদের কাছে আছে।
তিনি আরও বলেন, নামের সঙ্গে সামান্য মিল থাকায় যথেষ্ট যাচাই বাছাই ছাড়াই আমার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এখন সে অপরাধী না হয়েও জেল খাটছেন। আমার পরিবারে চারটি কন্যা সন্তান আছে। তাদের বাবা জেলে থাকায় তারাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমিও আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই প্রকৃত দোষীকে খুঁজে বের করে আমার স্বামীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বরিশাল র্যাব-৮ এর মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মার্চের ৮ তারিখ দুপুরে নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের বৈশাখিয়া বাজার থেকে ফিরোজ আলম হাওলাদারকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মোল্লারহাট তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোতালেব হোসেন বলেন, তার গ্রেফতারের ব্যাপারে আদালত থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, গ্রেফতারি পরোয়ানায় লেখা ব্যক্তির তথ্য সঠিক আছে কি না। আমরা তদন্ত করে দেখেছি গ্রেফতারি পরোয়ানায় উল্লেখিত তথ্য সঠিক আছে। এখন অন্য কোথাও ভুল থাকতেও পারে। সেটা আমাদের জানা নেই।
বিজনেস আওয়ার/৮ জুলাই, ২০২৩/এএইচএ