ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিচালক অপসারণের ক্ষমতা পেল বাংলাদেশ ব্যাংক

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • 85

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংককে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে সরকারের মনোনীত পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা এতোদিন শুধু সরকারের হাতেই ছিল। আর বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু পরিচালকদের আচরণ সম্পর্কে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারত।

সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে, বেসরকারি ব্যাংকের মতো রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও সরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে দেওয়া হয়েছে। এতে এধরনের ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির তদারকির ক্ষমতা বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আরও বাড়ল। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই আইন কতটা প্রয়োগ করে, সেটিই দেখার বিষয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ। তবে দেখতে হবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ক্ষমতা কতটুকু প্রয়োগ করে। শরিয়াহ ব্যাংকগুলো সবই বেসরকারি খাতের। এসব ব্যাংকে এত অনিয়মের কথা শোনা গেল, কিন্তু কাউকে তো অপসারণ করতে শুনলাম না। অথচ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে অসীম ক্ষমতা দেওয়া আছে। তবে সংশোধিত আইনে, পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, খেলাপিদের ঋণ নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদে গত ২৬ জুন ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী পাস হয়। এতে পরিচালকদের মেয়াদ ৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করার পাশাপাশি খেলাপিদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ প্রদানসহ নানা পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধনীর ফলে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) পাশাপাশি সরকারি খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ও প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের কয়েকজন পরিচালকের ক্ষেত্রেও এই ধারা প্রযোজ্য হবে। কারণ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার। শেয়ারের অনুপাতে ব্যাংকটিতে পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার।

আইনে যে পরিবর্তন হয়েছে- আগের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালকবৃন্দ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর বা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনের মাধ্যমে ব্যাংকের তহবিলের অপব্যবহার বা অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করলে তা প্রতিরোধে তাঁদের অপসারণ করতে পারত বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিযুক্ত চেয়ারম্যান ও পরিচালকের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য ছিল না। ২০১৩ সালে আইন সংশোধনের সময় যুক্ত করা হয়, সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিযুক্ত ব্যাংক পরিচালকদের আচরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদন পেশ করলে সরকার তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। গত মাসে সংসদে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে অনিয়মের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে সব ব্যাংকের পরিচালক অপসারণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২২ জুলাই, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পরিচালক অপসারণের ক্ষমতা পেল বাংলাদেশ ব্যাংক

পোস্ট হয়েছে : ১২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংককে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে সরকারের মনোনীত পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা এতোদিন শুধু সরকারের হাতেই ছিল। আর বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু পরিচালকদের আচরণ সম্পর্কে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারত।

সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে, বেসরকারি ব্যাংকের মতো রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও সরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে দেওয়া হয়েছে। এতে এধরনের ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির তদারকির ক্ষমতা বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংক খাতের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আরও বাড়ল। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই আইন কতটা প্রয়োগ করে, সেটিই দেখার বিষয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ। তবে দেখতে হবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ক্ষমতা কতটুকু প্রয়োগ করে। শরিয়াহ ব্যাংকগুলো সবই বেসরকারি খাতের। এসব ব্যাংকে এত অনিয়মের কথা শোনা গেল, কিন্তু কাউকে তো অপসারণ করতে শুনলাম না। অথচ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে অসীম ক্ষমতা দেওয়া আছে। তবে সংশোধিত আইনে, পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, খেলাপিদের ঋণ নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদে গত ২৬ জুন ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী পাস হয়। এতে পরিচালকদের মেয়াদ ৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করার পাশাপাশি খেলাপিদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ প্রদানসহ নানা পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধনীর ফলে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) পাশাপাশি সরকারি খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ও প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের পরিচালকদের অপসারণের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের কয়েকজন পরিচালকের ক্ষেত্রেও এই ধারা প্রযোজ্য হবে। কারণ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার। শেয়ারের অনুপাতে ব্যাংকটিতে পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার।

আইনে যে পরিবর্তন হয়েছে- আগের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালকবৃন্দ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর বা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনের মাধ্যমে ব্যাংকের তহবিলের অপব্যবহার বা অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করলে তা প্রতিরোধে তাঁদের অপসারণ করতে পারত বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিযুক্ত চেয়ারম্যান ও পরিচালকের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য ছিল না। ২০১৩ সালে আইন সংশোধনের সময় যুক্ত করা হয়, সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিযুক্ত ব্যাংক পরিচালকদের আচরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদন পেশ করলে সরকার তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। গত মাসে সংসদে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে অনিয়মের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে সব ব্যাংকের পরিচালক অপসারণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২২ জুলাই, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: