বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর ডীন ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মুনির হোসেন পাটওয়ারী, পিএসসি বলেছেন, আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শেয়ারবাজার। স্টক, বন্ড বা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বুদ্ধিমত্তার সাথে বিনিয়োগ করে, ব্যক্তিরা প্যাসিভ আয় তৈরি করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। শেয়ারবাজার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে একজন বিনিয়োগকারী সমস্ত সম্ভাব্য ঝুঁকির সম্মুখীন হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর বাণিজ্য অনুষদের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ আয়োজিত “পুঁজিবাজার এবং ভবিষ্যত নেতৃত্ব” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিধির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুনির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ফিনান্স বা অন্য কোন ব্যবসা-সম্পর্কিত ক্ষেত্রে ডিগ্রি অর্জন করা হোক না কেন, একজন বিনিয়োগকারীকে শেয়ারবাজারের সাথে সম্পর্কিত সমস্ত প্রাসঙ্গিক চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্ট এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সহযোগিতা ফলে আমাদের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান এবং বাস্তব-অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তৈরী হয়েছে। এ সেমিনারের মাধ্যমে আপনাদের শেয়ারবাজারের অভিজ্ঞ পেশাদারদের কাছ থেকে যে জ্ঞান লাভ করবেন তা আপনাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাইফুর রহমান মজুমদার এফসিএ, এফসিএমএ বলেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় দুইটি দিক রয়েছে একটি হলো ব্যাংকিং খাত ও অন্যটি হলো শেয়ারবাজার। আজ আমরা শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা করবো। শেয়ারবাজারের মূল রেগুলেটর হলো বিএসইসি। আর বিএসইসি’র অধিনে আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছি। আর এক্সচেঞ্জেগুলোর অধীনে রয়েছে ট্রেক হোল্ডারবৃন্দ। যারা শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করেন। এছাড়াও কিছু মার্কেট ইন্টার মিডিয়ারি রয়েছে যেমন ইস্যু ম্যানেজার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, অ্যাসেট ম্যানেজমার ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে বাণিজ্য বিভাগে ডিগ্রি থাকতে হবে এমনটি নয়। দেশের যে কোন নাগরিক এখানে বিনিয়োগ করতে পারে। শুধু এজন্য শেয়ারবাজারের বর্তমান নিয়মকানুন সম্পর্কে অবগত হতে হবে। আপনারা যদি শেয়ারবাজারের একজন বিশেষজ্ঞ কিংবা গবেষক হিসেবে অবদান রাখতে চান তাহলে আপনাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। একজন বিজনেস গ্র্যাজুয়েট হিসেবে আপনাদের সুযোগ আরও বেশি শেয়ারবাজারের সাথে সম্পৃক্ত হবার।
আমাদের দেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশের জিডিপিতে শেয়ারবাজরের অবদান কম। বর্তমানে জিডিপিতে শেয়ারবাজারের অবদান ২০ শতাংশের কম। আমাদের এটি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যা একই সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তরান্বিত করবে। এই সেমিনারের মাধ্যমে আপনারা শেয়ারবাজার সম্পর্কে একটি ধারনা পাবেন। যা আগামীতে আপনাদের শেয়ারবাজারের সাথে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহ সৃষ্টি করবে।
তার আগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডিএসই’র মার্কেট ডেভেলাপমেন্ট ডিভিশনের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ছামিউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের শিল্পোন্নয়ন তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে শেয়ারবাজার গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম৷ শেয়ারবাজারের মাধ্যমেই জনগণের সঞ্চিত ছোট ছোট সঞ্চয় বৃহৎ পুঁজির সৃষ্টির মাধ্যমে শিল্পায়ন গড়ে ওঠে৷ আপনারাই এই শেয়ারবাজারের ভবিষ্যত নেতৃত্বদানকারী৷ তাই এই শেয়ারবাজার সম্পর্কে একটা ধারনা থাকা দরকার৷ অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য শেয়ারবাজার বিষয়ক জ্ঞান অপরিহার্য। আপনাদের উদ্ভাবনী চিন্তা চেতনা ভবিষ্যতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেজ্ঞ এই অঞ্চলে একটি নেতৃত্বদানকারী স্টক এক্সচেজ্ঞ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড এর ইস্যু মার্কেটিং, প্রমোশন অ্যান্ড ডেট মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান ও উপমহাব্যবস্থাপক সাঈদ মাহমুদ জুবায়ের। মূল প্রবন্ধে তিনি শেয়ারবাজার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা, বাজারের নিয়ন্ত্রক ও মধ্যস্থতাকারী, বিনিয়োগ প্রক্রিয়া এবং পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা এবং শেয়ারবাজারের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেন৷
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইউপি’র ডিপার্টমেন্ট অব বিজনেজ স্টাডিজ ইন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং-এর চেয়ারম্যান, সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস এবং ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ এর সকল চেয়ারম্যানসহ সকল ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং ফাইন্যান্স এবং ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্ট-এর সকল ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ডিএসই’র ইস্যু মার্কেটিং, প্রমোশন অ্যান্ড ডেট মার্কেট ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
বিজনেস আওয়ার/২৫ জুলাই, ২০২৩/পিএস