ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থ আত্মসাৎ, ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩
  • 50

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে কলেজ ফান্ডের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার সাহাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাৎ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সাবেক হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ও কলেজের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর কাজী জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার এজহারে বলা হয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় খাতভিত্তিক আর্থিক আয়-ব্যয় নির্বাহ করা হয়ে থাকে। ভুয়া বিল তৈরি করে এসব হিসাব থেকে আসামি অধ্যাপক রতন কুমার সাহা, তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল হান্নান এবং ক্যাশিয়ার কাজী জাহাঙ্গীর আলমের পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

রতন কুমার সাহা ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এ পদে যোগ দিয়ে তার আগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবু তাহেরের দায়িত্ব থেকে কলেজের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মোট স্থিতি ৭ কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা বুঝে নেন। রতন কুমার সাহার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে ২০১৯ সালের ৩ মে তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর একই বছরের ১১ জুন পরবর্তী অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন কলেজের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্থিতি ছিল ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬ টাকা।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক রুহুল আমিন ভূঁইয়া ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়ে কলেজের পাঁচ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষা তহবিল, উন্নয়ন তহবিল, ল্যাবরেটরি তহবিল, অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিলসহ উল্লেখযোগ্য ২২টি খাতের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখেন। এগুলোতে বিল-ভাউচার নেই, এমনকি ব্যয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কমিটির রিকুইজিশনও ছিল না। মালামাল গ্রহণ বা বিতরণের প্রমাণ নেই এবং বিধি মোতাবেক ক্রয় বা ব্যয় হয়নি মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কলেজের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি অধ্যাপক রতন কুমার সাহার কর্মকালীন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এছাড়া আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও। এরপর বিষয়টি দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হলে, সংস্থাটিও অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ২ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়।

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জুলাই,২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অর্থ আত্মসাৎ, ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে কলেজ ফান্ডের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার সাহাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাৎ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সাবেক হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ও কলেজের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর কাজী জাহাঙ্গীর আলম।

মামলার এজহারে বলা হয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় খাতভিত্তিক আর্থিক আয়-ব্যয় নির্বাহ করা হয়ে থাকে। ভুয়া বিল তৈরি করে এসব হিসাব থেকে আসামি অধ্যাপক রতন কুমার সাহা, তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল হান্নান এবং ক্যাশিয়ার কাজী জাহাঙ্গীর আলমের পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার ৯০৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

রতন কুমার সাহা ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এ পদে যোগ দিয়ে তার আগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবু তাহেরের দায়িত্ব থেকে কলেজের ৪৪টি ব্যাংক হিসাবের মোট স্থিতি ৭ কোটি ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৭২৮ টাকা বুঝে নেন। রতন কুমার সাহার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে ২০১৯ সালের ৩ মে তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর একই বছরের ১১ জুন পরবর্তী অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন কলেজের ব্যাংক হিসাবগুলোর স্থিতি ছিল ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৬ টাকা।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক রুহুল আমিন ভূঁইয়া ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়ে কলেজের পাঁচ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষা তহবিল, উন্নয়ন তহবিল, ল্যাবরেটরি তহবিল, অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারী তহবিলসহ উল্লেখযোগ্য ২২টি খাতের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখেন। এগুলোতে বিল-ভাউচার নেই, এমনকি ব্যয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কমিটির রিকুইজিশনও ছিল না। মালামাল গ্রহণ বা বিতরণের প্রমাণ নেই এবং বিধি মোতাবেক ক্রয় বা ব্যয় হয়নি মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কলেজের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি অধ্যাপক রতন কুমার সাহার কর্মকালীন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এছাড়া আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও। এরপর বিষয়টি দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হলে, সংস্থাটিও অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ২ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯০০ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়।

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জুলাই,২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: