বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত ও মারধর বন্ধে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম ও বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা একমত হয়েছেন। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত, মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করব। করোনাকালীন সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বন্ধ থাকলেও টহল বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা উভয় পক্ষ একমত হয়েছি।
আমরা মনে করি, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনে বিধি-বিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে, সীমান্তে আক্রমণ বা হামলা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।সীমান্তে যেসকল অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার ৭০ শতাংশ ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটির জন্য হয়ে থাকে। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। এ দেশের সীমান্তের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এসব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যে সকল পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সীমান্তে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরকদ্রব্য, মাদক, স্বর্ণ এবং জাল মুদ্রা পাচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেব। পূর্ব অনুমোদন ছাড়া ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ জোরপূর্বক পুশ ইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের জাতীয়তা যাচাই করতে এবং একে অপরের সহযোগিতায় তাদের হস্তান্তর গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত সম্মেলন শুরু হয়। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল (JRD-Joint Record of Discussions) স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে এ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বিজিবি সদরদফতরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসার ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদরদফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন।
বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ