ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিন গড়ে রিজার্ভ কমছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩
  • 43

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরির পর শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা। আলোচনা এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে অফিসিয়াল পরিসংখ্যান দেওয়া হলেও, মানুষের জল্পনা-কল্পনার যেন শেষ নেই। সবার একটাই প্রশ্ন, বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ঠিক কত?

আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম তথ্য প্রকাশ করে ১৩ জুলাই। এদিন রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ২ হাজার ৩৫৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত ১৪ দিনে রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার। প্রতিদিন গড়ে রিজার্ভ থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

একই সাথে নিজেদের হিসাবও দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে হিসাবে আজ পর্যন্ত রিজার্ভ দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৯৬৮ কোটি ডলার। আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী দেশের যে রিজার্ভ ২ হাজার ৩৩০ কোটি বা ২৩ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের এই অর্থ দিয়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৪২ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় প্র‌তি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা ধরে এর পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ৪৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। চলতি মাসে গড়ে প্রতিদিন ৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে প্রবাসীরা। এরফলে রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা কমছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ডলার সরবরাহ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এলক্ষ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে উদ্যোগী হয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।

সদ্যসমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। সবশেষ আন্তর্জাতিক মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) চাপে গ্রস রিজার্ভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরফলে রিজার্ভ ব্যাপকহারে কমে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে।

বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফ’র ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল, বিপিএম-৬ ফর্মুলা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা। এটি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করার কথা ছিল। সেই শর্তের আলোকে চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ হিসাব প্রকাশ করেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জুলাই,২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রতিদিন গড়ে রিজার্ভ কমছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার

পোস্ট হয়েছে : ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরির পর শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা। আলোচনা এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে প্রতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে অফিসিয়াল পরিসংখ্যান দেওয়া হলেও, মানুষের জল্পনা-কল্পনার যেন শেষ নেই। সবার একটাই প্রশ্ন, বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ঠিক কত?

আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম তথ্য প্রকাশ করে ১৩ জুলাই। এদিন রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ২ হাজার ৩৫৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত ১৪ দিনে রিজার্ভ কমেছে ২৬ কোটি ডলার। প্রতিদিন গড়ে রিজার্ভ থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

একই সাথে নিজেদের হিসাবও দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে হিসাবে আজ পর্যন্ত রিজার্ভ দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৯৬৮ কোটি ডলার। আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী দেশের যে রিজার্ভ ২ হাজার ৩৩০ কোটি বা ২৩ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের এই অর্থ দিয়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৪২ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় প্র‌তি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা ধরে এর পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ৪৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। চলতি মাসে গড়ে প্রতিদিন ৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে প্রবাসীরা। এরফলে রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা কমছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ডলার সরবরাহ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এলক্ষ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে উদ্যোগী হয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।

সদ্যসমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। সবশেষ আন্তর্জাতিক মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) চাপে গ্রস রিজার্ভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরফলে রিজার্ভ ব্যাপকহারে কমে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে।

বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফ’র ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল, বিপিএম-৬ ফর্মুলা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা। এটি চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করার কথা ছিল। সেই শর্তের আলোকে চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ হিসাব প্রকাশ করেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জুলাই,২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: