ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে ‘বিশেষ অঙ্গ’ হারালো শিশু মাহাদি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
  • 71

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালের চিকিৎসক ও হসপিটালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে শিশু মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে শিশু মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুড়ে কয়লা হয়ে যায়।

এ অভিযোগে চিকিৎসকসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির নানা রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের শাকতলা পাটোয়ারী বাড়ির আনোয়ার হোসেন।

সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালের (প্রা.) ডিএমএফ চিকিৎসক ডাক্তার মো. সরোয়ার হোসেন, হসপিটালের পরিচালক সাইফুল্লাহ মানিক, রবিউল আলম রিয়াজ ও ডাক্তারের সহযোগী আবদুল্যাহ আল মাহমুদকে আসামি করে এ মামলা করা হয়।

শিশু মাহাদির নানা আনোয়ার হোসেন জানান, আমার নাতি মাহাদির সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য গত ৩১ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামগঞ্জ শিশু পার্ক সংলগ্ন রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুপুরে উল্লেখিত চিকিৎসক ও তার সহযোগীরা লেজার মেশিনের মাধ্যমে আমার নাতির মুসলমানি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার নাতির আত্মচিৎকার ভেসে আসলে আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি। দ্রুত বিষয়টি জানার জন্য অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখি আমার নাতি মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুরো পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। ওইদিনই আমার নাতিকে নিয়ে নোয়াখালীর ডাক্তার ট্রাস্ট ওয়ান হসিপটালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তিনদিন পর ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হসপিটালে (মিডফোর্ড) ভর্তি করা হয়।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হসপিটালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ইলেকট্রিক মেশিনের অতিরিক্ত তাপের কারণে তার বিশেষ অঙ্গ সম্পূর্ণ জ্বলে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। আমার নাতী আজীবনের জন্য পুরুষত্ব হারিয়েছে।

স্থানীয় কিছু লোকজন বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য আমাদের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমার নাতি হসপিটালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, আমরা তার চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আমরা এ ঘটনার উচিত বিচার প্রার্থনা করছি।

এ ব্যপারে ইসলামিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার মোবাইলে কল দেয়ার পর সবগুলো নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হসপিটালের এক কর্মচারী জানান, মামলার হওয়ার পর থেকে হসপিটালে মালিক পক্ষের লোকজন খুব একটা আসেন না।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন আহম্মেদ কবীর জানান, আমি এ মামলার ঘটনাটি জানি না। মামলার কপি হাতে পেলে অবশ্যই বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর ডিএমএফ চিকিৎসক এ ধরনের অপারেশন বা সুন্নতে খৎনা করাতে পারেন না।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, আমি এখনো উপশম ও ইসলামিয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলার কপি হাতে পাইনি।

বিজনেস আওয়ার/০১ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে ‘বিশেষ অঙ্গ’ হারালো শিশু মাহাদি

পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালের চিকিৎসক ও হসপিটালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে শিশু মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে শিশু মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুড়ে কয়লা হয়ে যায়।

এ অভিযোগে চিকিৎসকসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির নানা রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের শাকতলা পাটোয়ারী বাড়ির আনোয়ার হোসেন।

সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালের (প্রা.) ডিএমএফ চিকিৎসক ডাক্তার মো. সরোয়ার হোসেন, হসপিটালের পরিচালক সাইফুল্লাহ মানিক, রবিউল আলম রিয়াজ ও ডাক্তারের সহযোগী আবদুল্যাহ আল মাহমুদকে আসামি করে এ মামলা করা হয়।

শিশু মাহাদির নানা আনোয়ার হোসেন জানান, আমার নাতি মাহাদির সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য গত ৩১ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামগঞ্জ শিশু পার্ক সংলগ্ন রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুপুরে উল্লেখিত চিকিৎসক ও তার সহযোগীরা লেজার মেশিনের মাধ্যমে আমার নাতির মুসলমানি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার নাতির আত্মচিৎকার ভেসে আসলে আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি। দ্রুত বিষয়টি জানার জন্য অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখি আমার নাতি মাহাদির বিশেষ অঙ্গ পুরো পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। ওইদিনই আমার নাতিকে নিয়ে নোয়াখালীর ডাক্তার ট্রাস্ট ওয়ান হসিপটালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তিনদিন পর ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হসপিটালে (মিডফোর্ড) ভর্তি করা হয়।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হসপিটালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ইলেকট্রিক মেশিনের অতিরিক্ত তাপের কারণে তার বিশেষ অঙ্গ সম্পূর্ণ জ্বলে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। আমার নাতী আজীবনের জন্য পুরুষত্ব হারিয়েছে।

স্থানীয় কিছু লোকজন বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য আমাদের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমার নাতি হসপিটালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, আমরা তার চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আমরা এ ঘটনার উচিত বিচার প্রার্থনা করছি।

এ ব্যপারে ইসলামিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার মোবাইলে কল দেয়ার পর সবগুলো নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হসপিটালের এক কর্মচারী জানান, মামলার হওয়ার পর থেকে হসপিটালে মালিক পক্ষের লোকজন খুব একটা আসেন না।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন আহম্মেদ কবীর জানান, আমি এ মামলার ঘটনাটি জানি না। মামলার কপি হাতে পেলে অবশ্যই বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর ডিএমএফ চিকিৎসক এ ধরনের অপারেশন বা সুন্নতে খৎনা করাতে পারেন না।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, আমি এখনো উপশম ও ইসলামিয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলার কপি হাতে পাইনি।

বিজনেস আওয়ার/০১ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: