বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদন: বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি এবার রাজপথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। পাতানো নির্বাচনের বদলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবির পাশাপাশি অসহনীয় দ্রব্যমূল্যসহ অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
রাজনৈতিক গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে রাজপথে নামার পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে নীতিনির্ধারণী ফোরাম। ইতোমধ্যেই দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধানসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেছেন। ওই সব বৈঠকে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আলোচান হয়েছে এবং জাপা থেকে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের কথা জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে পার্টির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে রাজপথে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যগণ অংশ নেন। অন্যান্য সময়ে এই ধরণের বৈঠকে পার্টির দপ্তরের লোকজনকে রাখা হতো বক্তব্য নোট করার জন্য। এবারই প্রথম রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেন জিএম কাদের।
বৈঠকে ছিলেন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপিসহ দলটির অধিকাংশ নেতা। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে নামার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত হয় নি বৈঠকে। কারণ বিএনপি যে ভাবে মাঠ দখল করেছে, তাতে জাপা ঘরে বসে থাকলে একুলওকুল দুকূল হারাবে। জনগণের সঙ্গে জাতীয় পার্টি থাকতে চায়।
আরেকজননেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণায় সরকারের মেরুদ- ভেঙ্গে গেছে। মানুষ এখন বিএনপির পিছনে ছুটছে। আওয়ামী লীগ নেতারা যে হম্বিতত্বি করছে তা কর্মীদের চাঙ্গা রাখার জন্য। তারা জানেন তাদের সময় ফুরিয়ে আসছে। এ সময় জাতীয় পার্টিকে রাজপথে নামিয়ে মানুষের ভোটেরঅধিকার আদায় করতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।
জানা গেছে, গত ১ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির বিশেষ সভায় সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন জিএম কাদের। ওই সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, বিশ্ববাসী বর্তমান পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে, জাপাকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদের ব্যাপারে সজাগ আছে। এমন বাস্তবতায় আমরা ঘরে বসে থাকলে দলের রাজনৈতিক বিপর্যস্ত হবে। জনগণের কাছে এটি মুক্তির লড়াই, জনগণ এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। যারা জনগণের মুক্তির জন্য লড়াই করবে, জনগণ তাদের পক্ষে থাকবে। আমাদের রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সত্যিকারের নির্বাচনের জন্য যে আন্দোলন তাতে সমর্থন দিতে হলে মাঠেই দিতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা যে বিপর্যস্ত এ নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। নির্বাচন ব্যবস্থা সঠিক করতে আমাদের কাজ করা উচিত।
জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকা মহানগর উত্তরের আয়োজনে একটি বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বিজনেস আওয়ার/০৬ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ