বিজনস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার থেকে মুনাফা তুলছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সে জন্য প্রতি মাসেই কমছে সোনালী পেপারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ২০২২ সালের ৩০ জুন সোনালী পেপারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১০.৩০ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৩০ শতাংশে। গত ৩০ এপ্রিল কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৬.৪৫ শতাংশ। যা ৩১ মে এসে দাঁড়িয়েছে ৫.৩০ শতাংশে। কেবল এপ্রিল মাসেই তাদের শেয়ার ধারণ কমেছে ১.১৫ শতাংশ।
মে মাসের পর কোম্পানিটির বিনিয়োগ শেয়ার ধারণ অবস্থা ডিএসইকে জানায়নি। যদিও তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি জুলাই মাস পর্যন্ত শেয়ার ধারণ অবস্থা জানিয়েছে এবং ডিএসই-ও কোম্পানিগুলোর শেয়ার ধারণ অবস্থা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রোপাইলে আপডেট করে দিয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ প্রতি মাসেই কমছে। যে কারণে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কাছে সর্বশেষ শেয়ার ধারণ অবস্থা তুলে ধরেনি।
এদিকে, কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কিছুদিন পর পর একটি চক্র টানাটানি করে। তারপর শেয়ারটির দাম ২০-৩০ শতাংশ বাড়িয়ে চড়া দামে বিনিয়োগকারীদের হাতে শেয়ারটি ধরিয়ে দেয়। তারপর কিছুদিন শেয়ারটি ফের ফ্লোর প্রাইসে ফেলে রাখে।
শেয়ারটির লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার বেশিরভাগ সময়ই আটকে ছিল ফ্লোর প্রাইসে। এরমধ্যে মাঝে মধ্যেই ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে লেনদেন হতে দেখা গেছে। ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গেই কোম্পানিটির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিন্ম দরে আতঙ্ক ছড়িয়ে উঠা নামা করে। আজ সোমবারও (০৭ আগস্ট)কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন ছিল আতঙ্ক ছড়ানো।
আজ দিনের শুরুতে শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে লেনদেন হয়েছে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ চুড়ায়। কিছুক্ষণ পর আবারও কমতে থাকে শেয়ারেটির দর। এক পর্যায়ে দর কমতে কমতে ক্রেতাই নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর বেলা ১২টার দিকে আবারও ক্রেতাদের চাপ দেখা যায়। দিনশেষে ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে শেয়ারটির দর ক্লোজিং হয়েছে ৬২৭ টাকা ৯০ পয়সায়। আজ দিনের লেনেদেনে একাধিক বার ফ্লোর প্রাইসে ক্রেতাশুন্য থেকেছে শেয়ারটি।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে। এরপর ০৮ ফেব্রুয়ারি ফ্লোর প্রাইস ভেদ করে লেনদেন হয়। তারপর ১৪ ফেব্রুয়ারি শেয়ারটির দর ৭২০ টাকায় তোলা হয়। ওইদিন ক্লোজিং প্রাইস হয় ৭০২ টাকা ৭০ পয়সায়। তারপর ২০ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪ কর্মদিবসে (দুই কর্মদিবসের ছুটি বাদে) শেয়ারটি ফের ফ্লোর প্রাইসে নিয়ে আসা হয়।
২৭ ফেব্রুয়ারি ফ্লোর প্রাইস টপকে শেয়ারটি লেনদেন হলেও দুই দিনের মাথায় ফের ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসে।
তারপর ০৩ মার্চ শেয়ারটি আবারও ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে ওপরে ওঠে। এবার শেয়ারটি বেশ অনেক দুর যায়। ২২ মার্চ শেয়ারটি ৭১০ টাকায় ওঠে। যদিও ওইদিন শেয়ারটি ক্লোজিং হয় ৬৯১ টাকা ২০ পয়সায়। তারপর থেকে পতনের বৃত্তে থাকে শেয়ারটি। অনেক টানাটানির পর ১০ এপ্রিল আবার শেয়ারটির স্থান হয় ফ্লোর প্রাইসে।
তারপরও দুই একবার শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইস ভেদ করে লেনদেন করানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু সফল হয়নি। তারপর ২০ মার্চ থেকে শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইসে ঘুমাতে থাকে। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর আজ সোমবার (০৭ আগস্ট) শেয়ারটি আতঙ্ক ছড়িয়ে ফ্লোর প্রাইস ভেদ করে ওপরে ওঠে। লেনদেনেও দেখায় বড় চমক। আজ শেয়ারটি ডিএসই-তে লেনেদেনের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করে। অথচ গত ৫ মাসে কোম্পানির শেয়ার কদাচিত হাজারের ওপরে লেনদেন হয়েছে। আজ যেন আলাদিনের চেরাগে শেয়ারটি জ্বলে উঠেছে।
বিজনেস আওয়ার/৭ আগস্ট, ২০২৩/এস এস