বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: টানা তিনদিন কমার পর হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানা গেছে। ভারত থেকে আসা বেশিরভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম।
এর আগে গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) হঠাৎ করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে দেশের বাজারে অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের দাম। পাইকারিতে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে পেঁয়াজের কেজি হয় ৮৫ টাকা। কোনো কোনো পাইকার ৯০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি করেন। এমন দাম বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে ভোক্তাদের মধ্যে বাড়তি পেঁয়াজ কেনার হিড়িক পড়ে যায়।
এরপর বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতা সংকট দেখা দেয় পেঁয়াজের বাজারে। যার প্রভাবে পাইকারি বাজারে কমে পেঁয়াজের দাম। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দফায় দাম কমে পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি ৭৭ টাকায় নামে। এ পরিস্থিতিতে সংবাদ আসে নিষেধাজ্ঞার আগে রফতানির অনুমতি পাওয়া ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ভারত।
এতে শনিবার ও রোববার দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম আরও কমে যায়। তবে রোববার থেকেই সংবাদ আসতে শুরু করে ভারত থেকে আসা পেঁয়াজের বেশিরভাগই নষ্ট। এরপর রাত পার না হতেই আজ সোমবার পাইকারি বাজারে আবার দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। অবশ্য আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
পেঁয়াজের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা, যা গতকাল ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা। অপরদিকে আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ গতকালের মতো মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। তবে নষ্ট আমদানি করা পেঁয়াজ কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৪০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করছেন।
রাজধানীর আরেকটি পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে শ্যামবাজার থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। বাজারটির ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজ ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে শ্যামবাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, আজ কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে। গতকাল ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করা দেশি পেঁয়াজ আজ ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিছু পেঁয়াজ ৭২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ গতকালের মতো ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, ভারত পেঁয়াজ দেয়ার কারণে দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ভারত থেকে ট্রাকে যে পেঁয়াজ আসছে তার বেশিরভাগ নষ্ট। এ পেঁয়াজ ঢাকায় বিক্রি করা সম্ভব না। পেঁয়াজের দাম বাড়লেও গত কয়েকদিনের মতো আমাদের বিক্রি নেই। ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় দাম কিছুটা বাড়লেও এবার পেঁয়াজের বাজার গত বছরের মতো অস্বাভাবিক হবে না।
শ্যামবাজারের একটি আড়তের এত বিক্রিয়কর্মী বলেন, আড়তে পেঁয়াজের বিক্রি একেবারেই নেই। আজ আমরা দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। ভালো মানের আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৫০ টাকা। আর নিম্নমানের নষ্ট পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। ভারত যে পেঁয়াজ ছেড়েছে, ওই পেঁয়াজ এখনো শ্যামবাজারে আসেনি।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী বলেন, দেশি ও আমদানি উভয় ধরনের পেঁয়াজ আমরা গতকালের দামে বিক্রি করছি। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তবে বাজারের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, দু-একদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
বিজনেস আওয়ার/২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ