ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনকে ঠেকাতে জোট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৩
  • 89

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ চীন সাগরে চীন ও উত্তর কোরিয়ার ‘বিপজ্জনক ও আগ্রাসী আচরণ’ ঠেকাতে সাগরপাড়ের দুই দেশ এবং ঘনিষ্ট এশীয় মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সঙ্গে নিয়ে নতুন একটি সামরিক জোট গঠন করছে যুক্তরাষ্ট্র। ত্রিপক্ষীয় এক বৈঠকে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অবকাশযাপন কেন্দ্র ক্যাম্প ডেভিডে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক নিয়োল এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এ সংক্রান্ত বৈঠক শেষে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গেছে।

বৈঠক পরবর্তী এক বিবৃতিতে তিন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বলেন, ‘আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছে যে, জোটভুক্ত কোনো দেশের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা যে কোনো চ্যালেঞ্জ, উসকানি এবং আচরণ এই তিন দেশ একসঙ্গে মোকাবিলা করবে।’

এছাড়া প্রতি বছর দক্ষিণ চীন সাগরে যৌথ সামরিক মহড়া এবং বছরে অন্তত একবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তারা।

শুক্রবার ক্যাম্প ডেভিডের বৈঠক শেষে উপস্থিত অতিথি ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আজ আমরা এই মর্মে ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের ওপর যদি কোনো প্রকার হুমকি আসে, সেক্ষেত্রে আমরা যৌথভাবে তা মোকাবিলা করব। অর্থাৎ, এই তিন দেশের মধ্যে তথ্য বিনিময় বিষয়ক একটি হটলাইন থাকবে এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।’

‘রাজনীতিতে কোনো নির্দিষ্ট শক্তির জবরদস্তির সময় শেষ হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক আইনের স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আজ (এই সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরে) আমি সত্যিই খুব খুশি।’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নিজ বক্তব্যে চীনের নাম উচ্চারণ না করে বলেন, ‘শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে একতরফা ভাবে পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোনো কোনো শক্তি লাগাতারভাবে পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল বলেন, ‘আমাদের তিন দেশের পারস্পরিক বোঝাপাড়া এই সমঝোতার মাধ্যমে আরও দৃঢ় হলো।’

চীন অবশ্য নবগঠিত এই জোটের ব্যাপারে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ পেংগিউ রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কারা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রথমে অশান্তি সৃষ্টি করে তা সামরিক পদ্ধতিতে সমাধানের চেষ্টা করে— তা সবাই জানে। এশিয়া প্যাসিফিক ও দক্ষিণ চীন সাগরে এই প্রচেষ্টা চালালে ওই অঞ্চলের দেশগুলো তার উপযুক্ত জবাব দেবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৯ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চীনকে ঠেকাতে জোট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ চীন সাগরে চীন ও উত্তর কোরিয়ার ‘বিপজ্জনক ও আগ্রাসী আচরণ’ ঠেকাতে সাগরপাড়ের দুই দেশ এবং ঘনিষ্ট এশীয় মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সঙ্গে নিয়ে নতুন একটি সামরিক জোট গঠন করছে যুক্তরাষ্ট্র। ত্রিপক্ষীয় এক বৈঠকে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অবকাশযাপন কেন্দ্র ক্যাম্প ডেভিডে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক নিয়োল এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এ সংক্রান্ত বৈঠক শেষে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গেছে।

বৈঠক পরবর্তী এক বিবৃতিতে তিন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বলেন, ‘আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছে যে, জোটভুক্ত কোনো দেশের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা যে কোনো চ্যালেঞ্জ, উসকানি এবং আচরণ এই তিন দেশ একসঙ্গে মোকাবিলা করবে।’

এছাড়া প্রতি বছর দক্ষিণ চীন সাগরে যৌথ সামরিক মহড়া এবং বছরে অন্তত একবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তারা।

শুক্রবার ক্যাম্প ডেভিডের বৈঠক শেষে উপস্থিত অতিথি ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আজ আমরা এই মর্মে ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের ওপর যদি কোনো প্রকার হুমকি আসে, সেক্ষেত্রে আমরা যৌথভাবে তা মোকাবিলা করব। অর্থাৎ, এই তিন দেশের মধ্যে তথ্য বিনিময় বিষয়ক একটি হটলাইন থাকবে এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।’

‘রাজনীতিতে কোনো নির্দিষ্ট শক্তির জবরদস্তির সময় শেষ হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক আইনের স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আজ (এই সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরে) আমি সত্যিই খুব খুশি।’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নিজ বক্তব্যে চীনের নাম উচ্চারণ না করে বলেন, ‘শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে একতরফা ভাবে পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোনো কোনো শক্তি লাগাতারভাবে পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল বলেন, ‘আমাদের তিন দেশের পারস্পরিক বোঝাপাড়া এই সমঝোতার মাধ্যমে আরও দৃঢ় হলো।’

চীন অবশ্য নবগঠিত এই জোটের ব্যাপারে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক অবস্থান নিয়েছে। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লিউ পেংগিউ রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কারা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রথমে অশান্তি সৃষ্টি করে তা সামরিক পদ্ধতিতে সমাধানের চেষ্টা করে— তা সবাই জানে। এশিয়া প্যাসিফিক ও দক্ষিণ চীন সাগরে এই প্রচেষ্টা চালালে ওই অঞ্চলের দেশগুলো তার উপযুক্ত জবাব দেবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৯ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: