ঢাকা , শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাপের মুখে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলো ভারতের রিলায়েন্স

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ভারতের সবচেয়ে বড় শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান) রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করেছে। রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা। পাশাপাশি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গেও সামঞ্জস্য রাখাও এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।

রিলায়েন্স এক বিবৃতিতে জানায়, ২১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর পণ্য আমদানির নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ প্রতিপালন নিশ্চিত করতে নির্ধারিত সময়ের আগেই এ পরিবর্তন সম্পন্ন করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

রাশিয়ার তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অস্বস্তির কারণ ছিল। আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন—যার মধ্যে ২৫ শতাংশ ছিল রাশিয়ার তেল ও অস্ত্র কেনার ‘শাস্তিমূলক’ শুল্ক।

ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছিলেন যে ভারতের এসব কেনাকাটা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সহায়তা করছে—যা ভারত অস্বীকার করেছে। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর আগে যেখানে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, সেখানে ২০২৪–২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫.৮ শতাংশে।

রাশিয়ার তেল আমদানিতে ভারতের মধ্যে রিলায়েন্সই সবচেয়ে বড় কোম্পানি। ভারতের মোট রুশ তেল আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশ একাই তারা পরিচালনা করে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক রিফাইনারি কমপ্লেক্স জামনগর রিফাইনারিতে দুটি পৃথক ইউনিট রয়েছে—একটি রপ্তানির জন্য, আরেকটি দেশীয় বাজারের জন্য।

গত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকায় রাশিয়ার তেল আমদানি কমাতে ভারত বাধ্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বেশ কিছু রিফাইনারি এরই মধ্যে আমদানি কমাতে শুরু করেছে।

গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারত আমদানি কমানোর লক্ষ্য পূরণ করায় যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক তুলে নিতে হবে। তার মতে, এ শুল্ক বজায় থাকলে সদ্য উন্নত হওয়া কূটনৈতিক আলোচনাগুলো আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিন রাশিয়ার তেল ইস্যুতে আটকে ছিল। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ফলে অচলাবস্থা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ২২ নভেম্বর / হাসান

ট্যাগস

চাপের মুখে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলো ভারতের রিলায়েন্স

আপডেট সময় ১৩ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ভারতের সবচেয়ে বড় শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান) রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করেছে। রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা। পাশাপাশি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গেও সামঞ্জস্য রাখাও এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।

রিলায়েন্স এক বিবৃতিতে জানায়, ২১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর পণ্য আমদানির নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ প্রতিপালন নিশ্চিত করতে নির্ধারিত সময়ের আগেই এ পরিবর্তন সম্পন্ন করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

রাশিয়ার তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অস্বস্তির কারণ ছিল। আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন—যার মধ্যে ২৫ শতাংশ ছিল রাশিয়ার তেল ও অস্ত্র কেনার ‘শাস্তিমূলক’ শুল্ক।

ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছিলেন যে ভারতের এসব কেনাকাটা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সহায়তা করছে—যা ভারত অস্বীকার করেছে। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর আগে যেখানে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, সেখানে ২০২৪–২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫.৮ শতাংশে।

রাশিয়ার তেল আমদানিতে ভারতের মধ্যে রিলায়েন্সই সবচেয়ে বড় কোম্পানি। ভারতের মোট রুশ তেল আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশ একাই তারা পরিচালনা করে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক রিফাইনারি কমপ্লেক্স জামনগর রিফাইনারিতে দুটি পৃথক ইউনিট রয়েছে—একটি রপ্তানির জন্য, আরেকটি দেশীয় বাজারের জন্য।

গত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকায় রাশিয়ার তেল আমদানি কমাতে ভারত বাধ্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বেশ কিছু রিফাইনারি এরই মধ্যে আমদানি কমাতে শুরু করেছে।

গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ভারত আমদানি কমানোর লক্ষ্য পূরণ করায় যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক তুলে নিতে হবে। তার মতে, এ শুল্ক বজায় থাকলে সদ্য উন্নত হওয়া কূটনৈতিক আলোচনাগুলো আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিন রাশিয়ার তেল ইস্যুতে আটকে ছিল। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ফলে অচলাবস্থা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ২২ নভেম্বর / হাসান