ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি চাকরিতে আবেদনে আরও ব্যয় বাড়ল

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩
  • 54

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে আবেদন ফি কমানোর দাবিতে বিভিন্ন সময় চাকরিপ্রার্থীরা কর্মসূচি পালন করেছেন। বেকারদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৬ সালে আবেদন ফি ছাড়াই আবেদনের সুযোগ দেওয়া শুরু করে। তবে অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে ফি কখনোই কমানো হয়নি। বরং বেড়েছে। এবার সরকারি চাকরির আবেদনের কমিশনের ওপর ভ্যাট আরোপ করেছে অর্থ বিভাগ।

চাকরির আবেদন মাশুলের (ফি) সঙ্গে ভ্যাটও নেওয়া শুরু করেছে সরকার। এতদিন বেকাররা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করলে সরকারকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) দিতে হতোনা না। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ চাকরির আবেদন মাশুলের সঙ্গে ভ্যাটের হার বসিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

ফলে বাতিল হয়ে গেছে একই বিষয়ে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনটি। ভ্যাট আরোপিত হওয়ায় এখন সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির আবেদনকারীদের ব্যয় কিছুটা বাড়বে।

তবে বৃদ্ধির পরিমাণ খুব বেশি নয়। ভ্যাট আরোপিত হবে মূলত পরীক্ষার মাশুলের সার্ভিস চার্জের (টেলিটক বাংলাদেশের কমিশন) ওপর ১৫ শতাংশ। দুই প্রজ্ঞাপন মিলিয়ে দেখা যায়, মাশুল বৃদ্ধি করা হয়নি, শুধু ভ্যাট আরোপিত হয়েছে; যার কারণে আবেদনকারীদের ব্যয় কিছুটা বাড়বে।

অর্থ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষার ফি নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগ্রহ করা অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিকম বাংলাদেশকে দিতে হবে। ভ্যাট হিসেবে আদায় করা হবে কমিশনের ১৫ শতাংশ।

এক্ষেত্রে নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি হবে ৬০০ টাকা। এর সঙ্গে টেলিকম বাংলাদেশের সার্ভিস চার্জ ১০ শতাংশ বা ৬০ টাকা। এই ৬০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ বা ৯ টাকা ভ্যাট। অর্থাৎ নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে ৬৬৯ টাকা লাগবে। আর দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৭ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট যোগ হবে। এই গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন খরচ পড়বে ৫৫৭ টাকা ৫০ পয়সা।

এভাবে ১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের ৩৩৪ টাকা ৫০ পয়সা, ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের ২২৩ টাকা ও ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিপ্রত্যাশীদের ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষা ফি দেওয়া যাবে এবং পরীক্ষার মাশুল বাবদ সংগৃহীত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে দেওয়া হবে এবং কমিশন হিসেবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাবে আদায় করা যাবে।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড পরীক্ষার মাশুল বাবদ অর্থ নেওয়ার পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমা দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করবে, তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ওই অর্থ নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারবে।

অনলাইনে আবেদন গ্রহণ না করা হলে চালানের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি দিতে হবে। তবে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফ্ট/পে-অর্ডারের মাধ্যমে এই অর্থ নিতে পারে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৩ সংখ্যার প্রাতিষ্ঠানিক কোড এবং ৭ সংখ্যার নতুন অর্থনৈতিক কোড ১৪২২৩২৬ সহ স্বয়ংক্রিয় চালানে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

কোনো প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল চালানে (টিআর ফরম) পরীক্ষা ফি জমা করতে চাইলে ‘১-প্রাতিষ্ঠানিক কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট) পরিচালনা কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট)-অর্থনৈতিক কোড (২০৩১)’-এ জমা করতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৬ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সরকারি চাকরিতে আবেদনে আরও ব্যয় বাড়ল

পোস্ট হয়েছে : ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে আবেদন ফি কমানোর দাবিতে বিভিন্ন সময় চাকরিপ্রার্থীরা কর্মসূচি পালন করেছেন। বেকারদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৬ সালে আবেদন ফি ছাড়াই আবেদনের সুযোগ দেওয়া শুরু করে। তবে অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে ফি কখনোই কমানো হয়নি। বরং বেড়েছে। এবার সরকারি চাকরির আবেদনের কমিশনের ওপর ভ্যাট আরোপ করেছে অর্থ বিভাগ।

চাকরির আবেদন মাশুলের (ফি) সঙ্গে ভ্যাটও নেওয়া শুরু করেছে সরকার। এতদিন বেকাররা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করলে সরকারকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) দিতে হতোনা না। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ চাকরির আবেদন মাশুলের সঙ্গে ভ্যাটের হার বসিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

ফলে বাতিল হয়ে গেছে একই বিষয়ে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনটি। ভ্যাট আরোপিত হওয়ায় এখন সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির আবেদনকারীদের ব্যয় কিছুটা বাড়বে।

তবে বৃদ্ধির পরিমাণ খুব বেশি নয়। ভ্যাট আরোপিত হবে মূলত পরীক্ষার মাশুলের সার্ভিস চার্জের (টেলিটক বাংলাদেশের কমিশন) ওপর ১৫ শতাংশ। দুই প্রজ্ঞাপন মিলিয়ে দেখা যায়, মাশুল বৃদ্ধি করা হয়নি, শুধু ভ্যাট আরোপিত হয়েছে; যার কারণে আবেদনকারীদের ব্যয় কিছুটা বাড়বে।

অর্থ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষার ফি নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগ্রহ করা অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিকম বাংলাদেশকে দিতে হবে। ভ্যাট হিসেবে আদায় করা হবে কমিশনের ১৫ শতাংশ।

এক্ষেত্রে নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি হবে ৬০০ টাকা। এর সঙ্গে টেলিকম বাংলাদেশের সার্ভিস চার্জ ১০ শতাংশ বা ৬০ টাকা। এই ৬০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ বা ৯ টাকা ভ্যাট। অর্থাৎ নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে ৬৬৯ টাকা লাগবে। আর দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৭ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট যোগ হবে। এই গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন খরচ পড়বে ৫৫৭ টাকা ৫০ পয়সা।

এভাবে ১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের ৩৩৪ টাকা ৫০ পয়সা, ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের ২২৩ টাকা ও ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিপ্রত্যাশীদের ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষা ফি দেওয়া যাবে এবং পরীক্ষার মাশুল বাবদ সংগৃহীত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে দেওয়া হবে এবং কমিশন হিসেবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাবে আদায় করা যাবে।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড পরীক্ষার মাশুল বাবদ অর্থ নেওয়ার পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমা দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করবে, তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ওই অর্থ নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারবে।

অনলাইনে আবেদন গ্রহণ না করা হলে চালানের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি দিতে হবে। তবে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফ্ট/পে-অর্ডারের মাধ্যমে এই অর্থ নিতে পারে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৩ সংখ্যার প্রাতিষ্ঠানিক কোড এবং ৭ সংখ্যার নতুন অর্থনৈতিক কোড ১৪২২৩২৬ সহ স্বয়ংক্রিয় চালানে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

কোনো প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল চালানে (টিআর ফরম) পরীক্ষা ফি জমা করতে চাইলে ‘১-প্রাতিষ্ঠানিক কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট) পরিচালনা কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট)-অর্থনৈতিক কোড (২০৩১)’-এ জমা করতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৬ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: