ঢাকা , রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 80

স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেও আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ দল সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ ও চারে নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে লক্ষ্য তাড়ায় আফগানরা ২৪৫ রানেই অলআউট হয়ে যাওয়ায় ৮৯ রানের জয়ে পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার ফোর নিশ্চিত করল টাইগাররা।

বাংলাদেশের বাঁচা-মরার ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে ৩৩৪ রান করায় সরাসরি সুপার ফোরের টিকিট পেতে আফগানদের ২৭৯ রানের আগেই আটকে ফেলতে হত। তবে শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে ৩৩ বল আগেই থেমে যায় আফগানদের ইনিংস। এতে কাগজে কলমে গ্রুপে দুইয়ে থাকলেও শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের ফল বেরোলেই সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশ।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নাঈম শেখের সাথে ওপেনিংয়ে সুযোগ পান মিরাজ। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজনে মিলে গড়েন ৬০ রান। তবে আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রহমানের বলে বোল্ড হয়ে যাওয়ার আগে ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

এরপর প্রমোশন পেয়ে তিনে ব্যাটিংয়ে আসেন তাওহিদ হৃদয়। তবে রানের খাতা খোলার আগেই গুলবাদিন নাইবের বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইনিংসে দারুণ সূচনা পেয়েও দ্রুত জোড়া উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে মিরাজের অনবদ্য জুটি বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়।

তৃতীয় উইকেটে তারা দুজনে মিলে ১৯০ বলে ১৯৪ রানের জুটি গড়েন, যা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর মধ্যে ১১৫ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। তবে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে আক্রমণে উঠতে গিয়েই ১১২ রান করে হাতে ব্যথা পেয়ে রিটায়ার হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এদিকে আগের ম্যাচে আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি শান্ত। তবে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে আজ সেঞ্চুরিই করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শান্ত ১০১ বলে পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। তবে ১০৪ রানের মাথায় দ্রুত রান তোলার তাড়ায় রানআউট হয়ে যান তিনি।

শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ১৫ বলে সমান ১টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেন। অধিনায়ক সাকিব ১৮ বলে খেলেন ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস। শামিম হাসান পাটওয়ারী ৬ বলে ১১ আর আফিফ হোসেনের ৩ বলে ৪ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

বোলিংয়ে আফগানিস্তানের হয়ে মুজিব-উর-রহমান ও গুলবাদিন নাইব একটি করে উইকেট পান। বাকি ৩টি উইকেট হয় রানআউটের কারণে।

এরপর আফগানরা ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামলেও শুরুতেই রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট হারায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পেসার শরিফুল ইসলামের করা চতুর্থ বলে খোঁচা দিতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে মাত্র ১ রানেই ফেরেন এই ওপেনার।

এরপর রহমত শাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইব্রাহিম জাদরান। তারা দুজনে মিলে ৭৮ রানের জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে রহমতকে বোল্ড করে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন দেশসেরা পেসার তাসকিন আহমেদ। বিদায়ের আগে ৫৭ বলে ৩৩ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

রহমতের উইকেট তুলে বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন ইব্রাহিম জাদরান। ৫২ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। এরপর খোলস ছেড়ে ব্যাট চালাচ্ছিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান একাদশে ফেরা পেসার হাসান।

ইনিংসের ২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ইব্রাহিম জাদরানকে উইকেটের পিছনে মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্রেক থ্রু এনে দিলেন পেসার হাসান মাহমুদ। বিদায়ের আগে ৭৪ বলে ১০ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৭৫ রান করেন আফগান ওপেনার।

এরপর অধিনায়ক শহিদি ও নাজিবুল্লাহ জাদরান মিলে ৬২ রানের জুটি গড়েন। তবে ১৯৩ রানে মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। ফেরার আগে খেলেছেন ২৫ বলে ১৭ রানের ইনিংস। এরপরেই মূলত ধ্বস নেমেছে আফগান ইনিংসে। তিন রান পরেই উইকেটের পেছনে মুশফিকের দুর্দান্ত ক্যাচের সুবাদে সাজঘরে শহিদি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫১ রান।

২১২ রানে গুলবাদিন নাইব ফিরেছেন শরীফুলের আরও এক দুর্দান্ত ডেলিভারির সুবাদে। পরের দুই ওভারে এসেছে আরও দুই উইকেট। মোহাম্মদ নবী ফিরেছেন তাসকিনের বলে। আর করিম জানাত ফিরেছেন রান উইকেটের শিকার হয়ে। ম্যাচের ৪৫ তম ওভারে দুই উইকেটে আফগানদের ইনিংস শেষ করেছেন তাসকিন।

বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৩টি উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট পান হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরে বাংলাদেশ

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেও আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ দল সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ ও চারে নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে লক্ষ্য তাড়ায় আফগানরা ২৪৫ রানেই অলআউট হয়ে যাওয়ায় ৮৯ রানের জয়ে পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার ফোর নিশ্চিত করল টাইগাররা।

বাংলাদেশের বাঁচা-মরার ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে ৩৩৪ রান করায় সরাসরি সুপার ফোরের টিকিট পেতে আফগানদের ২৭৯ রানের আগেই আটকে ফেলতে হত। তবে শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে ৩৩ বল আগেই থেমে যায় আফগানদের ইনিংস। এতে কাগজে কলমে গ্রুপে দুইয়ে থাকলেও শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের ফল বেরোলেই সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশ।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নাঈম শেখের সাথে ওপেনিংয়ে সুযোগ পান মিরাজ। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজনে মিলে গড়েন ৬০ রান। তবে আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রহমানের বলে বোল্ড হয়ে যাওয়ার আগে ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

এরপর প্রমোশন পেয়ে তিনে ব্যাটিংয়ে আসেন তাওহিদ হৃদয়। তবে রানের খাতা খোলার আগেই গুলবাদিন নাইবের বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইনিংসে দারুণ সূচনা পেয়েও দ্রুত জোড়া উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে মিরাজের অনবদ্য জুটি বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়।

তৃতীয় উইকেটে তারা দুজনে মিলে ১৯০ বলে ১৯৪ রানের জুটি গড়েন, যা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর মধ্যে ১১৫ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। তবে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে আক্রমণে উঠতে গিয়েই ১১২ রান করে হাতে ব্যথা পেয়ে রিটায়ার হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এদিকে আগের ম্যাচে আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি শান্ত। তবে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে আজ সেঞ্চুরিই করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শান্ত ১০১ বলে পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। তবে ১০৪ রানের মাথায় দ্রুত রান তোলার তাড়ায় রানআউট হয়ে যান তিনি।

শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ১৫ বলে সমান ১টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেন। অধিনায়ক সাকিব ১৮ বলে খেলেন ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস। শামিম হাসান পাটওয়ারী ৬ বলে ১১ আর আফিফ হোসেনের ৩ বলে ৪ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

বোলিংয়ে আফগানিস্তানের হয়ে মুজিব-উর-রহমান ও গুলবাদিন নাইব একটি করে উইকেট পান। বাকি ৩টি উইকেট হয় রানআউটের কারণে।

এরপর আফগানরা ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামলেও শুরুতেই রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট হারায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পেসার শরিফুল ইসলামের করা চতুর্থ বলে খোঁচা দিতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে মাত্র ১ রানেই ফেরেন এই ওপেনার।

এরপর রহমত শাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইব্রাহিম জাদরান। তারা দুজনে মিলে ৭৮ রানের জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে রহমতকে বোল্ড করে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন দেশসেরা পেসার তাসকিন আহমেদ। বিদায়ের আগে ৫৭ বলে ৩৩ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

রহমতের উইকেট তুলে বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন ইব্রাহিম জাদরান। ৫২ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। এরপর খোলস ছেড়ে ব্যাট চালাচ্ছিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান একাদশে ফেরা পেসার হাসান।

ইনিংসের ২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ইব্রাহিম জাদরানকে উইকেটের পিছনে মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্রেক থ্রু এনে দিলেন পেসার হাসান মাহমুদ। বিদায়ের আগে ৭৪ বলে ১০ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৭৫ রান করেন আফগান ওপেনার।

এরপর অধিনায়ক শহিদি ও নাজিবুল্লাহ জাদরান মিলে ৬২ রানের জুটি গড়েন। তবে ১৯৩ রানে মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। ফেরার আগে খেলেছেন ২৫ বলে ১৭ রানের ইনিংস। এরপরেই মূলত ধ্বস নেমেছে আফগান ইনিংসে। তিন রান পরেই উইকেটের পেছনে মুশফিকের দুর্দান্ত ক্যাচের সুবাদে সাজঘরে শহিদি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫১ রান।

২১২ রানে গুলবাদিন নাইব ফিরেছেন শরীফুলের আরও এক দুর্দান্ত ডেলিভারির সুবাদে। পরের দুই ওভারে এসেছে আরও দুই উইকেট। মোহাম্মদ নবী ফিরেছেন তাসকিনের বলে। আর করিম জানাত ফিরেছেন রান উইকেটের শিকার হয়ে। ম্যাচের ৪৫ তম ওভারে দুই উইকেটে আফগানদের ইনিংস শেষ করেছেন তাসকিন।

বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৩টি উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট পান হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: