বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানি ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ৩০১ জন আইনজীবী। তারা ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিএনপিপন্থি ও সরকারবিরোধী ৩০১ আইনজীবী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা এদেশের আইনজীবী সমাজ মনে করি- শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসা ও সরকার প্রধানের ব্যক্তিগত আক্রোশ এবং নির্মম হিংসার শিকার। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ফরমায়েশি বিচারের নামে যে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে তা দেশেবিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করছে।
আইনজীবী হিসাবে আমরা দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও আইনের সঠিক প্রয়োগ চাই। আমরা বাংলাদেশের সাংবিধানিক আদালতের আইনজীবীরা সরকারের এমন ফ্যাসিস্ট আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের গর্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া একপেশে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অবৈধ সরকারের আক্রোশ প্রসূত। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অবিলম্বে বন্ধের জন্য এবং সকল ধরনের হয়রানিমূলক চলমান মামলাগুলো প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুধু ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তাই নন বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বের দরিদ্র পীড়িত কর্মহীন মানুষদের স্বপ্নের নায়ক। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে সমর্থন আদায় করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সিটিজেনস কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশের পক্ষে বহির্বিশ্বের সমর্থন আদায় করেছিলেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উজ্জ্বল করেছেন।
তিনি স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, কগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল, আন্তর্জাতিক গান্ধি শান্তি পুরস্কার ও প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডমসসহ নানান পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তার জন্য গর্বিত।
‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে উপলব্ধি করছি যে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের এই মহান কারিগরের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে নানান রকম নিপীড়ন ও হয়রানিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বর্তমান সরকার যাকেই তার প্রতিপক্ষ মনে করে, তাকেই রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে নির্যাতন, নিপীড়ন করে নিঃশেষ করার চেষ্টা করছে। বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের রোষাণলে পড়ে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় তথাকথিত বিচারিক প্রক্রিয়ায় ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে হয় সাজাভোগ করেছেন নয়তো কারান্তরীণ আছেন।’
বিবৃতি প্রদানকারী আইনজীবীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ড. ফরিদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা, অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মাহবুব, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী, অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আখতার ওয়াহিদা, অ্যাডভোকেট কে আর খান পাঠান, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সুমন, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সপু, ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহদিন চৌধুরী, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব, অ্যাডভোকেট অ্যাডভোকেট ইসলাম টুটুল, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান, ব্যারিস্টার মরিয়ম ই খন্দকারসহ সুপ্রিম কোর্টের ৩০১ জন আইনজীবী।
বিজনেস আওয়ার/০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ