ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় সমাধানের পথ দেখাচ্ছে এআই

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 64

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্বে পুরুষ জনসংখ্যার ৭ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছে। এখন আশা করা হচ্ছে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এই সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে।

ড. স্টিফেন ভ্যাসিলেস্কু বলেন, তিনি এবং তার দল যে এআই সফটওয়্যার তৈরি করেছেন তা মারাত্মকভাবে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষ থেকে নেওয়া নমুনায় উচ্চ প্রশিক্ষিত যে কোনো মানুষের চেয়ে হাজার গুণ দ্রুত শুক্রাণু শনাক্ত করতে পারে। আরও বলেন, সংগ্রহ করা নমুনাতে কী দেখা যাচ্ছে মানুষের পক্ষে তা বোঝার আগেই এই এআই প্রোগ্রামটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু হাইলাইট করতে পারে।

ভ্যাসিলেস্কু অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির (ইউটিএস) একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং মেডিকেল সংস্থা নিওজেনিক্স বায়োসায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এবং তার সহকর্মীরা যে সিস্টেমটি তৈরি করেছেন তার নাম স্পার্মসার্চ। এই সিস্টেমটি এমন পুরুষদের সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে বীর্যপাতের পর যাদের বীর্যে শুক্রাণুর উপস্থিতি থাকে না। এই অবস্থাকে বলা হয় নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া (এনওএ)। বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত ১০ শতাংশ পুরুষের এ সমস্যা রয়েছে।

এই ক্ষেত্রে সাধারণত অণ্ডকোষের একটি ছোট অংশ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরিয়ে পরীক্ষাগারে নেওয়া হয়। সেখানে একজন ভ্রূণবিশেষজ্ঞ নমুনায় স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু অনুসন্ধান করেন। ল্যাবে টিস্যুটি বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং একটি মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনও স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু পাওয়া যায় তবে সেগুলো বের করে ডিম্বাণুতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন কর্মীকে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে ক্লান্তি এবং ভুল শুক্রাণু পর্যবেক্ষণের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, যখন একজন ভ্রূণবিজ্ঞানী মাইক্রোস্কোপের নিচে নমুনায় তাকান, তখন তিনি সেখানে আকাশে ছড়ানো নক্ষত্রের মতো করে অসংখ্য কোষ দেখতে পান।

আরও বলেন, এর মধ্যে রক্ত এবং টিস্যু থাকে। পুরো জিনিসটার মধ্যে মাত্র ১০টা শুক্রাণু থাকতে পারে, বাকি লাখ লাখ হয়তো অন্যান্য কোষ থাকতে পারে। এটা অনেকটা খড়ের স্তূপে সুঁই খোঁজার মতো। আরও বলেন যে, অন্যদিকে স্পার্মসার্চ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পেতে পারে। আর সঙ্গে সঙ্গে এর ছবি কম্পিউটারে আপলোড করে দেয়।

এভাবে কমপ্লেক্স টিস্যু নমুনা থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পাওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে ডা. ভ্যাসিলেস্কু এবং তার টিম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এই জাতীয় হাজার হাজার ছবি দেখিয়েছে। সিডনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং টিম এক প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলেছে, শুক্রাণু অনুসন্ধানের এই পরীক্ষাটি অভিজ্ঞ যেকোনো ভ্রূণ বিজ্ঞানীর চেয়ে এক হাজার গুণ দ্রুত।

এই স্পার্মসার্চ এআই কোনোভাবেই ভ্রূণবিজ্ঞানীদের প্রতিস্থাপনের জন্য তৈরি করা হয়নি বরং তাদের সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে এটি। ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডির প্রজনন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. সারাহ মার্টিন্স দা সিলভা বলেন, শুক্রাণু খুঁজে বের করার এই গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যদি আপনার কাছে এমন কেউ থাকে যিনি ডিম্বাণু সংগ্রহ করেছেন এবং ইতোমধ্যে সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত করা দরকার, তবে সেটা করতে আমাদের হাতে খুব বেশি সময় থাকে না। তাই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করা খুবই উপকারী হবে।

গত চার দশকে শুক্রাণুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসার পর পুরুষের বন্ধ্যাত্বকে একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুরুষের উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে দূষণ, ধূমপান, অপুষ্টি, অপর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

এ সমস্যা থেকে পুরুষকে মুক্তি দিতে কাজ করছেন আরেক বিজ্ঞানী ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের সেন্টার ফর সিস্টেমস মডেলিং অ্যান্ড কোয়ান্টিটেটিভ বায়োমেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ড. মোরিগ গ্যালাগার। নতুন ইমেজিং সফটওয়্যার পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যায় আক্রান্ত পুরুষদের শুক্রাণুর কার্যকারিতা ট্র্যাক করেন তিনি।

তিনি বলেন, এ থেকে শুক্রাণুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো আমাদের বলতে পারে যে শুক্রাণু পরিবেশগত চাপের মধ্যে রয়েছে, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বা জৈবিক সংকেতের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

এদিকে, বেলফাস্ট-ভিত্তিক ফার্টিলিটি ফার্ম এক্সামেন ‘সিঙ্গেল সেল জেল ইলেক্ট্রোফোরেসিস’ নামে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে যার মাধ্যমে শুক্রাণুতে ডিএনএর কোনো ক্ষতি থাকলে তা শনাক্ত করা যায়। অধ্যাপক শিনা লুইস এবং তার দল ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এর উন্নয়নে কাজ করছেন।

কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের প্রজনন মেডিসিনের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং এক্সামিনের সিইও শিনা লুইস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও মেডিসিনের অগ্রগতি বেশ মন্থর। উদাহরণস্বরূপ স্পার্মসার্চ বর্তমানে প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে ছোট একটি পরীক্ষাও চলেছে যেখানে মাত্র সাত জন রোগী ছিলেন।

অধ্যাপক শিনা বলেন, এখনও হয়তো এসবের কোনো অর্থ নেই। কোনও কিছু প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট পর্যায়ে থাকা থেকে বাণিজ্যিকভাবে পেতে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এটি পুরুষদের একটি খুব ছোট গ্রুপকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে, যাদের নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া রয়েছে। আপনি দুর্দান্ত অনেক কিছু হয়তো করতে পারবেন, তবে এটি কখনই মূলধারায় পরিণত হবে না।

ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এধরনের চিকিৎসাতে এটাই শেষ ধাপ। একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করা আর চিকিৎসা থামিয়ে দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য হলো এটা। আরও বলেন, আমরা যদি ভ্রূণবিজ্ঞানীদের আরও দক্ষ এবং আরও নির্ভুল করতে পারি তবে তারা হয়তো সেই শুক্রাণু খুঁজে পাবেন আগে যা পাওয়া যেত না। এটি একজন পুরুষকে তার জৈবিক সন্তান ধারণের সুযোগ করে দেবে।

ইউটিএস টিম এখন তাদের এআইকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নিতে চান। কেউ সত্যি সত্যি গর্ভবতী হবেন— এটাই এখন আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য, বলেন ডা. ভ্যাসিলেস্কু। সূত্র: বিবিসি।

বিজনেস আওয়ার/৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় সমাধানের পথ দেখাচ্ছে এআই

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্বে পুরুষ জনসংখ্যার ৭ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছে। এখন আশা করা হচ্ছে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এই সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে।

ড. স্টিফেন ভ্যাসিলেস্কু বলেন, তিনি এবং তার দল যে এআই সফটওয়্যার তৈরি করেছেন তা মারাত্মকভাবে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষ থেকে নেওয়া নমুনায় উচ্চ প্রশিক্ষিত যে কোনো মানুষের চেয়ে হাজার গুণ দ্রুত শুক্রাণু শনাক্ত করতে পারে। আরও বলেন, সংগ্রহ করা নমুনাতে কী দেখা যাচ্ছে মানুষের পক্ষে তা বোঝার আগেই এই এআই প্রোগ্রামটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু হাইলাইট করতে পারে।

ভ্যাসিলেস্কু অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির (ইউটিএস) একজন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং মেডিকেল সংস্থা নিওজেনিক্স বায়োসায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এবং তার সহকর্মীরা যে সিস্টেমটি তৈরি করেছেন তার নাম স্পার্মসার্চ। এই সিস্টেমটি এমন পুরুষদের সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে বীর্যপাতের পর যাদের বীর্যে শুক্রাণুর উপস্থিতি থাকে না। এই অবস্থাকে বলা হয় নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া (এনওএ)। বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত ১০ শতাংশ পুরুষের এ সমস্যা রয়েছে।

এই ক্ষেত্রে সাধারণত অণ্ডকোষের একটি ছোট অংশ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরিয়ে পরীক্ষাগারে নেওয়া হয়। সেখানে একজন ভ্রূণবিশেষজ্ঞ নমুনায় স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু অনুসন্ধান করেন। ল্যাবে টিস্যুটি বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং একটি মাইক্রোস্কোপের নীচে পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনও স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু পাওয়া যায় তবে সেগুলো বের করে ডিম্বাণুতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন কর্মীকে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে ক্লান্তি এবং ভুল শুক্রাণু পর্যবেক্ষণের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, যখন একজন ভ্রূণবিজ্ঞানী মাইক্রোস্কোপের নিচে নমুনায় তাকান, তখন তিনি সেখানে আকাশে ছড়ানো নক্ষত্রের মতো করে অসংখ্য কোষ দেখতে পান।

আরও বলেন, এর মধ্যে রক্ত এবং টিস্যু থাকে। পুরো জিনিসটার মধ্যে মাত্র ১০টা শুক্রাণু থাকতে পারে, বাকি লাখ লাখ হয়তো অন্যান্য কোষ থাকতে পারে। এটা অনেকটা খড়ের স্তূপে সুঁই খোঁজার মতো। আরও বলেন যে, অন্যদিকে স্পার্মসার্চ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পেতে পারে। আর সঙ্গে সঙ্গে এর ছবি কম্পিউটারে আপলোড করে দেয়।

এভাবে কমপ্লেক্স টিস্যু নমুনা থেকে স্বাস্থ্যকর শুক্রাণু খুঁজে পাওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে ডা. ভ্যাসিলেস্কু এবং তার টিম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এই জাতীয় হাজার হাজার ছবি দেখিয়েছে। সিডনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং টিম এক প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলেছে, শুক্রাণু অনুসন্ধানের এই পরীক্ষাটি অভিজ্ঞ যেকোনো ভ্রূণ বিজ্ঞানীর চেয়ে এক হাজার গুণ দ্রুত।

এই স্পার্মসার্চ এআই কোনোভাবেই ভ্রূণবিজ্ঞানীদের প্রতিস্থাপনের জন্য তৈরি করা হয়নি বরং তাদের সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে এটি। ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডির প্রজনন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. সারাহ মার্টিন্স দা সিলভা বলেন, শুক্রাণু খুঁজে বের করার এই গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যদি আপনার কাছে এমন কেউ থাকে যিনি ডিম্বাণু সংগ্রহ করেছেন এবং ইতোমধ্যে সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত করা দরকার, তবে সেটা করতে আমাদের হাতে খুব বেশি সময় থাকে না। তাই প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করা খুবই উপকারী হবে।

গত চার দশকে শুক্রাণুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসার পর পুরুষের বন্ধ্যাত্বকে একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুরুষের উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে দূষণ, ধূমপান, অপুষ্টি, অপর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

এ সমস্যা থেকে পুরুষকে মুক্তি দিতে কাজ করছেন আরেক বিজ্ঞানী ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের সেন্টার ফর সিস্টেমস মডেলিং অ্যান্ড কোয়ান্টিটেটিভ বায়োমেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ড. মোরিগ গ্যালাগার। নতুন ইমেজিং সফটওয়্যার পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যায় আক্রান্ত পুরুষদের শুক্রাণুর কার্যকারিতা ট্র্যাক করেন তিনি।

তিনি বলেন, এ থেকে শুক্রাণুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো আমাদের বলতে পারে যে শুক্রাণু পরিবেশগত চাপের মধ্যে রয়েছে, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বা জৈবিক সংকেতের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

এদিকে, বেলফাস্ট-ভিত্তিক ফার্টিলিটি ফার্ম এক্সামেন ‘সিঙ্গেল সেল জেল ইলেক্ট্রোফোরেসিস’ নামে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে যার মাধ্যমে শুক্রাণুতে ডিএনএর কোনো ক্ষতি থাকলে তা শনাক্ত করা যায়। অধ্যাপক শিনা লুইস এবং তার দল ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এর উন্নয়নে কাজ করছেন।

কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের প্রজনন মেডিসিনের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং এক্সামিনের সিইও শিনা লুইস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও মেডিসিনের অগ্রগতি বেশ মন্থর। উদাহরণস্বরূপ স্পার্মসার্চ বর্তমানে প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে ছোট একটি পরীক্ষাও চলেছে যেখানে মাত্র সাত জন রোগী ছিলেন।

অধ্যাপক শিনা বলেন, এখনও হয়তো এসবের কোনো অর্থ নেই। কোনও কিছু প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট পর্যায়ে থাকা থেকে বাণিজ্যিকভাবে পেতে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এটি পুরুষদের একটি খুব ছোট গ্রুপকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে, যাদের নন-অবস্ট্রাকটিভ অ্যাজুস্পার্মিয়া রয়েছে। আপনি দুর্দান্ত অনেক কিছু হয়তো করতে পারবেন, তবে এটি কখনই মূলধারায় পরিণত হবে না।

ড. ভ্যাসিলেস্কু বলেন, এধরনের চিকিৎসাতে এটাই শেষ ধাপ। একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করা আর চিকিৎসা থামিয়ে দেওয়ার মধ্যে পার্থক্য হলো এটা। আরও বলেন, আমরা যদি ভ্রূণবিজ্ঞানীদের আরও দক্ষ এবং আরও নির্ভুল করতে পারি তবে তারা হয়তো সেই শুক্রাণু খুঁজে পাবেন আগে যা পাওয়া যেত না। এটি একজন পুরুষকে তার জৈবিক সন্তান ধারণের সুযোগ করে দেবে।

ইউটিএস টিম এখন তাদের এআইকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে নিতে চান। কেউ সত্যি সত্যি গর্ভবতী হবেন— এটাই এখন আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য, বলেন ডা. ভ্যাসিলেস্কু। সূত্র: বিবিসি।

বিজনেস আওয়ার/৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: