বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ময়মনসিংহ ইসলামী বইমেলা ২০২৩। নগরীর টাউনহল মাঠে চলছে ১০ দিনব্যাপী চলবে ইসলামি বইমেলা। বর্তমান প্রজন্মকে অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়া থেকে বাঁচানো এবং বইভিত্তিক সঠিক জ্ঞানার্জনে উদ্বুদ্ধ করতে এ বইমেলার আয়োজন করেছে সিরাত গবেষণাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সীরাতকেন্দ্র।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ও ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হওয়া এ বইমেলা চলবে ১৪ অক্টোবর (শনিবার) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা নারীপ্রহর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ে কেবল নারীরাই মেলায় প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
ময়মনসিংহে দুই দিন স্মরণকালের বৃষ্টিপাত হওয়ায় মেলা শুরুর প্রথম দিকে চোখে পড়েনি ক্রেতা-পাঠক সমাগম। তবে শনিবার থেকে তা বাড়তে শুরু করেছে। রোববার বিকেলে চোখে পড়ার মতো পাঠক সমাগম দেখা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে। এর মধ্যেই মেলা জমে উঠবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের।
জানা গেছে, মেলায় স্টল রয়েছে ৫৭টি। এতে ৭০ টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মোক্ত থাকছে মেলার কার্যক্রম। বই কেনাকাটার সুবিধার্থে দিনের শুরুর দুই ঘণ্টা নারীদের জন্য নির্ধারিত রাখা হয়েছে।
সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ ও বই পাঠে শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে মেলায় রয়েছে শিশু কর্ণার। এ ছাড়াও রয়েছে সমৃদ্ধ গ্রন্থ নিয়ে সিরাত কর্ণার।
মেলায় ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী মুহিব, রোহান ও আব্দুল্লাহ বলেন, ইসলামি বইমেলায় এসে অনেক ভালো লাগছে। এখানে ইসলামিক অনেক বইয়ের সমাহার রয়েছে। ঘুরে ঘুরে দেখছি, অনেক বই পছন্দ হয়েছে। ধীরে ধীরে কিনবো।
আহবাব পাবলিকেশন্সের প্রকাশক মো. ওয়ালি উল্লাহ বলেন, সীরাত, নসীহা, দোয়া, ইতিহাস, শিশুতোষ ও পারিবারিক ধর্মী বইগুলোর প্রতি পাঠকদের আকর্ষণ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমার এখানে নানা বিষয়ের ওপর লেখা অন্তত ৬০০ লেখকের প্রায় দুই হাজার বই রয়েছে। প্রথম দুইদিন পাঠক-ক্রেতা কম থাকলেও এখন বাড়তে শুরু করেছে। আশা করছি ক্রেতা সমাগম বাড়তে থাকলে এই স্টলে ৫ লাখ টাকার বেশি বই বিক্রি করা সম্ভব হবে।
মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা মুফতি আমীর ইবনে আহমদ বলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য ভান্ডার এখন যথেষ্ট সমৃদ্ধ। এ সমৃদ্ধি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করার পাশাপাশি ঢাকার যে প্রকাশনাগুলো রয়েছে সেগুলোকে এক ব্যানারে নিয়ে আসলে একজন পাঠকের পক্ষে সব বই যাচাই করা সহজ হয়। এতে বইয়ের জগত সম্পর্কে যেমন অবহিত করতে পারছি তেমনি বিভাগীয় শহরের পাঠকরা জাতীয় পর্যায়ের প্রকাশকদের কাছ থেকে সরাসরি বই নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছে। এতে পাঠক যেমন কম মূল্যে বই পাচ্ছে পাশাপাশি পছন্দের বইটি তারা সহজে পাচ্ছে। সেই সাথে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ এবং সাধারণ মানুষদের আকৃষ্ট করার মতো পর্যাপ্ত বই মেলায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বৃষ্টির প্রভাব ছিল প্রথম দুই দিন। তবে এখন মেলায় পাঠক সমাগম বাড়তে শুরু করেছে। সকালে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও নারীদের সমাগম বেশি থাকে এবং বিকেলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও সন্ধ্যার পর চাকরিজীবীরা বেশি আসছেন। আশা করছি দুই এক দিনের মধ্যেই মেলা জমে উঠবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে শিকড় সাহিত্য মাহফিলের আয়োজনে ময়মনসিংহে সর্বপ্রথম ইসলামি বইমেলা শুরু হয়। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে একের পর এক বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে ময়মনসিংহের টাউন হল প্রাঙ্গণে সীরাত কেন্দ্র প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে এ বইমেলার আয়োজন করে।
বিজনেস আওয়ার/০৮ অক্টোবর, ২০২৩/এএইচএ