ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি শিশুপার্ক সিলগালা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩
  • 149

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকা সংলগ্ন শিশু পার্কটি সিলগালা করে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পার্কটির ইজারা বাতিল করে ‘জমির মালিক’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের এক্সিকিউটিভ অফিসার সাজিয়া তাহেরকে স্থাপনাটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নির্দেশে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন আরডিসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) নু এমং মারমা মং ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলাম।

প্রশাসনের অভিযানে মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে সেখানে একটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো হয়। এতে লেখা রয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ। আদেশক্রমে মিলিটারি এস্টেটস অফিসার, পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আরডিসি নু এমং মারমা মং বলেন, শিশু পার্কের জায়গাটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) যেসব শর্তে জমিটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল তার ব্যত্যয় ঘটায় শিশু পার্কটির ইজারা বাতিলসহ সিলগালা করে জমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের পাশেই শিশু পার্কটির অবস্থান। চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল সার্কিট হাউসে। এ সার্কিট হাউসে মুক্তিযোদ্ধাদের ইলেকট্রিক চেয়ারে নির্যাতন করা হয়েছিল। এখানেই শুরু হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। বিজয় মঞ্চে স্মৃতিচারণ করতেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ইতোপূর্বে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছিল সার্কিট হাউস সংলগ্ন বাণিজ্যিক শিশু পার্কটি বন্ধ করে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত সবুজ চত্বর তৈরির। এ দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সবশেষ গত শুক্রবার সার্কিট হাউসের দেয়ালঘেঁষে গড়ে তোলা বাণিজ্যিক শিশু পার্ক অপসারণ করে জায়গাটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘অপরাজেয় বাংলা’ নামের একটি সংগঠন। এ সময় মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়ে একাত্মতা জানান।

এর আগে ২০২১ সালের ৯ মে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পার্কটির ইজারা বাতিলের অনুরোধে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং চট্টগ্রামের মেয়রকে চিঠি দিয়েছিলেন।

মূলত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আগ্রহে ১৯৯২ সালে ১৩ জুলাই তিন একর জমিতে শিশুপার্ক স্থাপনে নগর সংস্থাটিকে অনাপত্তি দিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ১৯৯৪ সালে ঢাকার প্রতিষ্ঠান ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডকে’ ২৫ বছরের জন্য জমিটি প্রথমবার ইজারা দিয়েছিল চসিক।

২০১৯ সালের নভেম্বরে ওই ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চসিকের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদকালে পার্কটির ইজারা চুক্তি আবারও ১৫ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। এরপর থেকে পার্কটি অপসারণের দাবিতে সরব ছিল ‘নাগরিক উদ্যোগ’ নামের একটি সংগঠন।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি শিশুপার্ক সিলগালা

পোস্ট হয়েছে : ০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকা সংলগ্ন শিশু পার্কটি সিলগালা করে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পার্কটির ইজারা বাতিল করে ‘জমির মালিক’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের এক্সিকিউটিভ অফিসার সাজিয়া তাহেরকে স্থাপনাটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নির্দেশে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন আরডিসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) নু এমং মারমা মং ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলাম।

প্রশাসনের অভিযানে মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে সেখানে একটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো হয়। এতে লেখা রয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ। আদেশক্রমে মিলিটারি এস্টেটস অফিসার, পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আরডিসি নু এমং মারমা মং বলেন, শিশু পার্কের জায়গাটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) যেসব শর্তে জমিটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল তার ব্যত্যয় ঘটায় শিশু পার্কটির ইজারা বাতিলসহ সিলগালা করে জমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের পাশেই শিশু পার্কটির অবস্থান। চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল সার্কিট হাউসে। এ সার্কিট হাউসে মুক্তিযোদ্ধাদের ইলেকট্রিক চেয়ারে নির্যাতন করা হয়েছিল। এখানেই শুরু হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। বিজয় মঞ্চে স্মৃতিচারণ করতেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ইতোপূর্বে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছিল সার্কিট হাউস সংলগ্ন বাণিজ্যিক শিশু পার্কটি বন্ধ করে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত সবুজ চত্বর তৈরির। এ দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সবশেষ গত শুক্রবার সার্কিট হাউসের দেয়ালঘেঁষে গড়ে তোলা বাণিজ্যিক শিশু পার্ক অপসারণ করে জায়গাটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘অপরাজেয় বাংলা’ নামের একটি সংগঠন। এ সময় মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়ে একাত্মতা জানান।

এর আগে ২০২১ সালের ৯ মে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পার্কটির ইজারা বাতিলের অনুরোধে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং চট্টগ্রামের মেয়রকে চিঠি দিয়েছিলেন।

মূলত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আগ্রহে ১৯৯২ সালে ১৩ জুলাই তিন একর জমিতে শিশুপার্ক স্থাপনে নগর সংস্থাটিকে অনাপত্তি দিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ১৯৯৪ সালে ঢাকার প্রতিষ্ঠান ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডকে’ ২৫ বছরের জন্য জমিটি প্রথমবার ইজারা দিয়েছিল চসিক।

২০১৯ সালের নভেম্বরে ওই ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চসিকের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদকালে পার্কটির ইজারা চুক্তি আবারও ১৫ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। এরপর থেকে পার্কটি অপসারণের দাবিতে সরব ছিল ‘নাগরিক উদ্যোগ’ নামের একটি সংগঠন।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: