ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেহ শনাক্তে সন্তানদের শরীরে নাম লিখে রাখছেন ফিলিস্তিনি বাবা-মা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
  • 90

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অব্যাহত বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের বড় একটি অংশ শিশু। বোমা হামলায় ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুদের মরদেহ শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক মা-বাবা। এ অবস্থায় শিশু সন্তান মারা গেলে তাদের যেন শনাক্ত করা যায় সে জন্য তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ আগে থেকেই নাম লিখে রাখছেন এসব বাবা-মা।

ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের চলমান সংঘাতে সবচেয়ে বেশি মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির শিকার গাজার শিশুরা। এমন অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুদের মরদেহ শনাক্তে হিমশিম খাচ্ছেন ফিলিস্তিনের অসংখ্য মা-বাবা। আর তাই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হলে প্রিয় সন্তানের দেহ শনাক্তের জন্য সন্তানদের শরীরে তাদের নাম লিখে রাখছেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলটির ফিলিস্তিনি বাবা-মা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একজন সাংবাদিককে এ তথ্য জানিয়েছেন আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের প্রধান ডাঃ আব্দুল রহমান আল মাসরি।

তিনি বলেন, “আমরা এমন কিছু শিশুর মরদেহ পেয়েছি যেখানে বাবা-মা তাদের সন্তানদের পা ও পেটে নাম লিখে রেখেছেন।”

তিনি বলেন, “এই পিতামাতারা উদ্বিগ্ন যে কোন কিছুই ঘটতে পারে এবং কেউ তাদের সন্তানদের শনাক্ত করতে সক্ষম হবে না। তারা মনে করে যে তারা যে কোনও মুহূর্তে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে এবং আহত বা শহীদ হতে পারে।”

বিষয়টিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি নতুন প্রবণতা হিসেবেও উল্লেখ করেন মাসরি। তিনি জানান, অতীতে এই বিষয়টি কখনোই দেখা যায়নি।

ইসরায়েল ও হামাসের চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে একজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন। এছাড়া চিকিৎসকদের তথ্যমতে, গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের ৪০ শতাংশই শিশু।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা ও বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা। অঞ্চলটিতে হামলায় ভেঙে পরা ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ থেকে শত শত শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য শিশু। এছাড়া বোমার আঘাতের কারণে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিশুদের অনেককেই শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দেহ শনাক্তে সন্তানদের শরীরে নাম লিখে রাখছেন ফিলিস্তিনি বাবা-মা

পোস্ট হয়েছে : ০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অব্যাহত বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের বড় একটি অংশ শিশু। বোমা হামলায় ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুদের মরদেহ শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক মা-বাবা। এ অবস্থায় শিশু সন্তান মারা গেলে তাদের যেন শনাক্ত করা যায় সে জন্য তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ আগে থেকেই নাম লিখে রাখছেন এসব বাবা-মা।

ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের চলমান সংঘাতে সবচেয়ে বেশি মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির শিকার গাজার শিশুরা। এমন অবস্থায় হাসপাতালগুলোতে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশুদের মরদেহ শনাক্তে হিমশিম খাচ্ছেন ফিলিস্তিনের অসংখ্য মা-বাবা। আর তাই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হলে প্রিয় সন্তানের দেহ শনাক্তের জন্য সন্তানদের শরীরে তাদের নাম লিখে রাখছেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলটির ফিলিস্তিনি বাবা-মা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একজন সাংবাদিককে এ তথ্য জানিয়েছেন আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের প্রধান ডাঃ আব্দুল রহমান আল মাসরি।

তিনি বলেন, “আমরা এমন কিছু শিশুর মরদেহ পেয়েছি যেখানে বাবা-মা তাদের সন্তানদের পা ও পেটে নাম লিখে রেখেছেন।”

তিনি বলেন, “এই পিতামাতারা উদ্বিগ্ন যে কোন কিছুই ঘটতে পারে এবং কেউ তাদের সন্তানদের শনাক্ত করতে সক্ষম হবে না। তারা মনে করে যে তারা যে কোনও মুহূর্তে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে এবং আহত বা শহীদ হতে পারে।”

বিষয়টিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি নতুন প্রবণতা হিসেবেও উল্লেখ করেন মাসরি। তিনি জানান, অতীতে এই বিষয়টি কখনোই দেখা যায়নি।

ইসরায়েল ও হামাসের চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে একজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন। এছাড়া চিকিৎসকদের তথ্যমতে, গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের ৪০ শতাংশই শিশু।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা ও বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা। অঞ্চলটিতে হামলায় ভেঙে পরা ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ থেকে শত শত শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য শিশু। এছাড়া বোমার আঘাতের কারণে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিশুদের অনেককেই শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: