বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বছরের এ সময়টা মোটা চালের সরবরাহ কম থাকায় প্রতি বছরই দাম বাড়ে কিন্তু এবছর দাম বৃদ্ধির পরিমাণ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। রাজধানীর বাজারগুলোতে ৪৫ টাকার নিচে কোনো চাল নাই। অথচ দিন পনের আগেও ৩৫ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে মোটামুটি মানের প্রতি কেজি চাল পাওয়া যেত।
সরকার নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দামে মোটা ও চিকন চাল বিক্রি করছে। আড়ত ও মোকাম মালিকরা অস্বীকার করলেও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিল মালিক ও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়েছে। এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তারা শুধু মিনিকেট চালের ব্যাপারে মনিটর করছে।
চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে খুচরা চাল ব্যবসায়ী হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, মিলগুলো মোটা চাল দিতে পারছে না। সরবরাহ কমে যাওয়ায় আড়তগুলোতে সংকট তৈরি হয়েছে। সংকটের কারণে আড়তগুলোও নানা অজুহাতে দাম বেশি রাখছে চালের বস্তা প্রতি। আবার কোথাও কোথাও রয়েছে অদৃশ্য সিন্ডিকেট।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স হাজী ইসমাইল এন্ড সন্স রাইস আড়তের মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতি বছরের এ সময় চালের দাম কিছুটা বাড়েই। তবে, এবার বিগত বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা বেশিই দাম বেড়েছে। দাম যা বাড়ার তা বেড়েছে এখন আর বাড়বে না বলে আশা করি।
মিল মালিক ও আড়তদারদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের যে অভিযোগ সে ব্যাপারে এই আড়তদার বলেন, মূলত ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। ধরুন সিন্ডিকেট যদি থেকেই থাকে সেটা ভাঙা তো গভমেন্টের জন্য খুব সহজ কাজ। আজ সরকার ঘোষণা দিক আগামী সপ্তাহের মধ্যে এতো পরিমাণ চাল দেশে আমদানি করা হবে তাহলেই তো মজুদ রাখা চালগুলো ব্যবসায়ীরা বাহির করবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রনি বলেন, বর্তমানে মোটা চালের সরবরাহ কমে গেছে। বাজারে অনেকেই হাতে গোনা চালের আইটেম ছাড়া আনতে পারছে না। মিলাররা বলছেন, এবার মোটা ধানের উৎপাদন হয়েছে কম। তাই ধান সংকটে তারা চাহিদা মতো চাল সরবরাহ করতে পারছেন না।
চালের বাজারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ধান ও চাল কে কি দামে বিক্রি করছে সেটা আমাদের নলেজে আছে। গত সপ্তাহে চালের দাম যা ছিল এখনো সেটাই আছে। এটা ঠিক আমরা চালের দামটা আরও বৃদ্ধি হওয়ার হাত থেকে আটকাতে পেরেছি। অলরেডি চালের দাম কমে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে মিনিকেট চালের খুচরা ও পাইকারি বাজার মনিটরিং করছে ভোক্তা অধিকার। চালের দাম যেন না বাড়ে সেজন্য ভোক্তা অধিকার তাদের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে গুদামজাত ধান উদ্ধার করছে। আমাদের অভিযানে মিনিকেট চালের দামটা নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে।
বিজনেস আওয়ার/০৫ অক্টোবর, ২০২০/এ