বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: প্রত্যাবাসন বা ফেরত পাঠানোর কঠোর ব্যবস্থা রেখে ফ্রান্সের অভিবাসন আইনে বদল আনতে চান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন অভিবাসী ও শরণার্থীরা। নতুন এই বিলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে গোটা ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রান্তে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিলটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আইন হওয়ার জন্য উচ্চকক্ষ ও প্রেসিডেন্টের সই প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী বছরের গোড়ায় বিলটি আইনে পরিণত হতে পারে। ফরাসি রাজনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, বামপন্থিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আপস ও মীমাংসার মাধ্যমেই এই বিল তৈরি হয়েছে।
বিলে কী আছে, তা এখনো সম্পূর্ণ জানা যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া কিছু তথ্য অনুযায়ী, আইনে আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা হচ্ছে। আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে আপিলের জন্য অপেক্ষার সময়ও কমিয়ে আনা হবে। সেই সঙ্গে, পুনর্মিলন ভিসা প্রক্রিয়াও কঠিন করে তোলা হচ্ছে।
অর্থাৎ, ফ্রান্সে পরিবারের কোনো সদস্যকে রাখতে হলে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সামনে বাধা হয়ে দাড়াতে পারে নতুন এই আইন। এছাড়া ফ্রান্সে চিকিৎসার জন্য আসার রাস্তাও কঠিন করা হচ্ছে। আগে ১৩ বছরের কম বয়সীদের প্রত্যাবাসন বা ফেরত পাঠানো হতো না। এবার সেই আইনেও বদলের কথা বলা হয়েছে। আর এসব নিয়মকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীরা।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে দক্ষিণ প্যারিসে এক বিশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলের সামনে হাঁটছিলেন আহমেদ সিবি। মালি থেকে পাঁচ বছর আগে ফ্রান্সে আশ্রয় নিতে এসেছিলেন ৩৩ বছরের এই যুবক। দক্ষিণ প্যারিসে এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ তিনি।
আহমেদ সিবি জানান, ডাস্টবিন পরিষ্কার, অফিসে-বাড়িতে পরিচারিকার কাজ ও বাসন মাজার কাজ- এই ধরনের বিভিন্ন কাজে অংশ নিতে হচ্ছে আশ্রয়প্রার্থীদের। অথচ বিমা থেকে শুরু করে কোনোরকম সুযোগ-সুবিধা তারা পান না। তাদের কোনো কাগজও এখনো তৈরি হয়নি। ফরাসি নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সব নোংরা কাজ করেও অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন দুর্বিষহ। মিছিলের একাধিক প্ল্যাকার্ডে এ বিষয়টি লেখা ছিল।
তিনি আরও বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের দিয়ে আগামী বছরের প্যারিস অলিম্পিকের কাজও করানো হচ্ছে। স্টেডিয়াম তৈরি ও সংস্কারের কাজ করানো হচ্ছে, অথচ তাদের বৈধ কাগজপত্র দেওয়া হচ্ছে না।
বিজনেস আওয়ার/১১ডিসেম্বর/বিএইচ