ঢাকা , বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইয়েমেনে আমিরাতের অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগে সৌদির বিমান হামলা

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেশটির বন্দরনগরী মুকাল্লায় বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) চালানো এই হামলার পর রিয়াদ সতর্ক করে বলেছে, ইয়েমেনে আমিরাতের এমন পদক্ষেপকে তারা ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ হিসেবে দেখছে।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি, আমিরাতের ফুজাইরাহ বন্দর থেকে দুটি জাহাজ মুকাল্লায় পৌঁছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এসটিসি) জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক যান নামায়।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা প্রকাশিত এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়, জাহাজগুলোর ক্রু ট্র্যাকিং ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করে গোপনে অস্ত্র খালাস করে। এসব অস্ত্র ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য আসন্ন হুমকি’ বিবেচনায় নিয়ে সীমিত আকারে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়েমেনে সৌদি আরব ও আমিরাত–সমর্থিত শক্তিগুলোর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমিরাত–সমর্থিত এসটিসি ইয়েমেনের হাদরামাউত প্রদেশে অগ্রসর হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। সৌদি আরব–সমর্থিত কিছু গোষ্ঠী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেন থেকে আমিরাতি বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানালেও এসটিসি ও তাদের মিত্ররা আমিরাতের উপস্থিতির পক্ষে অবস্থান নেয়।

এদিকে, আমিরাত প্রথমে রিয়াদের অভিযোগ অস্বীকার করে সংযম ও প্রজ্ঞার আহ্বান জানায়। তবে পরে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও এর সম্ভাব্য পরিণতি বিবেচনায় তারা ইয়েমেনে থাকা অবশিষ্ট সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রত্যাহারের সময়সূচি স্পষ্ট করা হয়নি। আমিরাত এর আগেও কয়েক বছর আগে ইয়েমেন থেকে বড় পরিসরে সেনা প্রত্যাহার করেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের যুদ্ধে নতুন একটি ফ্রন্ট খুলে দিতে পারে। ইয়েমেন–বিশেষজ্ঞ ও ‘বাশা রিপোর্ট’-এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আল-বাশা বলেন, উভয় পক্ষই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় উত্তেজনা বাড়াতে পারে। তবে সৌদি আরব আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ করায় আমিরাত থেকে এসটিসির কাছে অস্ত্র সরবরাহ কমে আসতে পারে।

সাম্প্রতিক এই সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সৌদি আরব ও আমিরাত উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রথমবারের মতো এসটিসির সাম্প্রতিক অগ্রগতির জন্য সরাসরি আমিরাতকে দায়ী করে বলে, ‘ভ্রাতৃপ্রতিম সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেওয়া পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত বিপজ্জনক।’ তবে এসটিসির মিত্ররা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পিছু হটার কোনো সম্ভাবনা নেই।

সূত্র: এপি

ট্যাগস

ইয়েমেনে আমিরাতের অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগে সৌদির বিমান হামলা

আপডেট সময় ৪ ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেশটির বন্দরনগরী মুকাল্লায় বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) চালানো এই হামলার পর রিয়াদ সতর্ক করে বলেছে, ইয়েমেনে আমিরাতের এমন পদক্ষেপকে তারা ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ হিসেবে দেখছে।

সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি, আমিরাতের ফুজাইরাহ বন্দর থেকে দুটি জাহাজ মুকাল্লায় পৌঁছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এসটিসি) জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক যান নামায়।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা প্রকাশিত এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়, জাহাজগুলোর ক্রু ট্র্যাকিং ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করে গোপনে অস্ত্র খালাস করে। এসব অস্ত্র ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য আসন্ন হুমকি’ বিবেচনায় নিয়ে সীমিত আকারে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়েমেনে সৌদি আরব ও আমিরাত–সমর্থিত শক্তিগুলোর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমিরাত–সমর্থিত এসটিসি ইয়েমেনের হাদরামাউত প্রদেশে অগ্রসর হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। সৌদি আরব–সমর্থিত কিছু গোষ্ঠী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেন থেকে আমিরাতি বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানালেও এসটিসি ও তাদের মিত্ররা আমিরাতের উপস্থিতির পক্ষে অবস্থান নেয়।

এদিকে, আমিরাত প্রথমে রিয়াদের অভিযোগ অস্বীকার করে সংযম ও প্রজ্ঞার আহ্বান জানায়। তবে পরে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও এর সম্ভাব্য পরিণতি বিবেচনায় তারা ইয়েমেনে থাকা অবশিষ্ট সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রত্যাহারের সময়সূচি স্পষ্ট করা হয়নি। আমিরাত এর আগেও কয়েক বছর আগে ইয়েমেন থেকে বড় পরিসরে সেনা প্রত্যাহার করেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের যুদ্ধে নতুন একটি ফ্রন্ট খুলে দিতে পারে। ইয়েমেন–বিশেষজ্ঞ ও ‘বাশা রিপোর্ট’-এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আল-বাশা বলেন, উভয় পক্ষই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় উত্তেজনা বাড়াতে পারে। তবে সৌদি আরব আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ করায় আমিরাত থেকে এসটিসির কাছে অস্ত্র সরবরাহ কমে আসতে পারে।

সাম্প্রতিক এই সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সৌদি আরব ও আমিরাত উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রথমবারের মতো এসটিসির সাম্প্রতিক অগ্রগতির জন্য সরাসরি আমিরাতকে দায়ী করে বলে, ‘ভ্রাতৃপ্রতিম সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেওয়া পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত বিপজ্জনক।’ তবে এসটিসির মিত্ররা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পিছু হটার কোনো সম্ভাবনা নেই।

সূত্র: এপি