ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দল বেধে খাওয়ার মধ্যে আটকে আছে ‘রোড শো’র কার্যকারিতা

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহের জন্য কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িকসহ সার্বিক অবস্থা জানাতে ‘রোড শো’ আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এর পরে বিডিংয়ের অনুমোদন পেতে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যাওয়ায় এরইমধ্যে ‘রোড শো’ কার্যকারিতা হারিয়েছে। এই সময়ের ব্যবধানের মধ্যে কোম্পানির অবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘রোড শো’তে তুলে ধরা চিত্র কাজে না লাগায় এমনটি হচ্ছে। তবে এই ‘রোড শো’ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন না হলেও ওই অনুষ্ঠানে দল বেধে খাওয়ার মানুষের ঘাটতি পড়ে না।

তবে এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘রোড শো’ অনুষ্ঠানের কার্যোরিতা আনতে এবং কোম্পানির ব্যয় কমানোর জন্য কমিশন কাজ করছে। এজন্য অনলাইনে ‘ওয়েব শো’ করার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আইপিও প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ে শেষ করার জন্য কাজ করা হচ্ছে।

একটি কোম্পানিকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ‘রোড শো’ ও বিডিংয়ের ২টি অতিরিক্ত ধাপ পার করতে হয়। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রথমে কোম্পানিগুলোর ‘রোড শো’ আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাতে টাকা সংগ্রহ করতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যাবতীয় বিষয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা অবহিত হতে পারেন। এর পরবর্তীতে নিলামের জন্য বিডিংয়ের অনুমোদন পেতে হয়।

এই রোড শো আয়োজনে একটি কোম্পানির ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়। অথচ যে উদ্দেশ্যে এই আয়োজন করা হয়, তা পূরণ হয় না। যাতে করে কোম্পানির এই ব্যয় সুফল বয়ে আনছে না। কারন সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বিডিংয়ের সময় আবারও বিভিন্নভাবে তাদের পরিবর্তিত অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরতে হয়।

এদিকে রোড শো অনুষ্ঠানটি এখন অনেকটা আনন্দ করার মতো হয়ে গেছে। যেনো শুধু খাওয়ার জন্যই উপস্থিতি। তবে এই খাওয়া উপভোগ করতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। যাতে ‘রোড শো’ দল বেধে খেতে যাওয়ার বাহিরে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিনিধিদের খাওয়া উপভোগ করার জন্য যেতে বলা হয়ে থাকে। এতে এক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহন করে।

আইডিএলসি ইনভেষ্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘রোড শো’ এর অনেক পরে বিডিং হলে, ওই সময়ের মধ্যে একটি কোম্পানির আর্থিক হিসাবসহ ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন হয়। যাতে বিডিংয়ে ‘রোড শো’র কার্যকারিতা কমে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে তোলার জন্য বিডিং অনুমোদন হওয়ার পরে ও বিডিং শুরু হওয়ার আগে ‘রোড শো’ আয়োজন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বর্তমানের এজিএমের ন্যায় অনলাইনে ‘ওয়েব শো’ করার সুযোগ রাখা যেতে পারে। এতে করে একটি কোম্পানির ব্যয় কমে আসবে।

এক মার্চেন্ট ব্যাংকের সিইও বিজনেস আওয়ারকে বলেন, শুরুতেই কোটি টাকা ব্যয় করে ‘রোড শো’ আয়োজনের কোন স্বার্থকতা দেখতে পাচ্ছি না। এখানে শুধুমাত্র কোম্পানির টাকা ব্যয় এবং কিছু মানুষের পেটপুরে খাওয়া ছাড়া কিছুই নেই। এই ‘রোড শো’ একান্তই করতে হলে, সেটা বিডিং অনুমোদনের পরে করা উচিত। এতে করে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের যথাসময়ে কোম্পানির চিত্র জানার মাধ্যমে দর প্রস্তাবে সহায়ক হবে।

প্রিমিয়ামসহ শেয়ারবাজারে আসতে চাইলে পাবলিক ইস্যু রুলস-২০১৫’তে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই পাবলিক ইস্যু রুলস জারি করা হয়েছে। এরপরে বেশ কিছু কোম্পানি ‘রোড শো’ সম্পন্ন করেছে। তবে বিডিং অনুমোদন পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে কয়েক বছর পর্যন্ত।

`রোড শো’ সম্পন্ন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে – ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এ্যাপোলো হাসপাতাল ‘রোড শো’ সম্পন্ন করে। এছাড়া একই বছরের ১২ এপ্রিল আমরা নেটওয়ার্ক, ৩০ জুন বসুন্ধরা পেপার মিলস, ২৪ জুলাই আমান কটন ফাইবার্স, ৯ অক্টোবর বেঙ্গলপলি অ্যান্ড পেপার স্যাক লিমিটেড, ১৯ অক্টোবর রানার অটোমোবাইলস, ২৪ অক্টোবর পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, ৬ অক্টোবর ডেল্টা হসপিটাল, ১৮ অক্টোবর ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ ‘রোড শো’ সম্পন্ন করে। এছাড়া ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল এ্যাস্কয়ার নিট কোম্পোজিট, ১৯ এপ্রিল শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের, ১৫ অক্টোবর এনার্জিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিজ, ১৯ অক্টোবর এডিএন টেলিকম ও ৫ ডিসেম্বর লুব-রেফ বাংলাদেশ রোড শো সম্পন্ন করে। আর ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বারাকা পতেঙ্গা, ২৯ মার্চ স্টার সিরামিকস ও ২২ এপ্রিল মডার্ন স্টিল মিলসের রোড শো সম্পন্ন হয়। এরপরেও কিছু কোম্পানির ‘রোড শো’ হয়েছে।

এই ‘রোড শো’ সম্পন্ন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪ বছর পরে সম্প্রতি বিডিংয়ের অনুমোদন পেয়েছে ইনডেক্স অ্যাগ্রো। তবে এখনো বিডিংয়ের তারিখ নির্ধারন হয়নি। এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানির আর্থিক অবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। যাতে করে ৪ বছর আগে ‘রোড শো’ এর মাধ্যমে তুলে ধরা চিত্র এখন বিডিংয়ে কোন কাজেই লাগবে না। এছাড়া ৪ বছর আগে দেখা একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক চিত্র এখন ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক।

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে এই দীর্ঘসূত্রিতার কারনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) থেকে গুটিয়ে নিয়েছে এ্যাপোলো হসপিটাল ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো দুটি ভালো কোম্পানি। দীর্ঘ ৩ বছরের যাত্রায় তা সংগ্রহ করা না গেলেও বিকল্প উপায়ে এরইমধ্যে কোম্পানি দুটির আইপিওতে আসার উদ্দেশ্য পরিপালন হয়ে গেছে। তাই আপাতত শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ প্রয়োজন পড়ছে না কোম্পানি দুটির।

আইডিএলসি ইনভেষ্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রোড শো’ করার পরে বিডিং অনুমোদনে দীর্ঘ সময়ের ক্ষেত্রে কোম্পানির উদ্দেশ্য অনেক সময় ব্যাহত হয়। একটি কোম্পানির টাকার দরকার এখন, কিন্তু শেয়ারবাজার থেকে যদি এক বছর পরে পায় তাহলে তা কাজে লাগানো কঠিন। এ ছাড়া আগে আইপিও পক্রিয়া শুরু করে কোম্পানিগুলো ঋণ নিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে। যা আইপিওর টাকা দিয়ে পরিশোধ করা হতো। কিন্তু এখন আইপিও’র টাকায় ঋণ পরিশোধে সীমাবদ্ধতা থাকায় তাও সম্ভব হচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/১৮ অক্টোবর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দল বেধে খাওয়ার মধ্যে আটকে আছে ‘রোড শো’র কার্যকারিতা

পোস্ট হয়েছে : ১২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২০

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহের জন্য কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িকসহ সার্বিক অবস্থা জানাতে ‘রোড শো’ আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এর পরে বিডিংয়ের অনুমোদন পেতে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যাওয়ায় এরইমধ্যে ‘রোড শো’ কার্যকারিতা হারিয়েছে। এই সময়ের ব্যবধানের মধ্যে কোম্পানির অবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘রোড শো’তে তুলে ধরা চিত্র কাজে না লাগায় এমনটি হচ্ছে। তবে এই ‘রোড শো’ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন না হলেও ওই অনুষ্ঠানে দল বেধে খাওয়ার মানুষের ঘাটতি পড়ে না।

তবে এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘রোড শো’ অনুষ্ঠানের কার্যোরিতা আনতে এবং কোম্পানির ব্যয় কমানোর জন্য কমিশন কাজ করছে। এজন্য অনলাইনে ‘ওয়েব শো’ করার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আইপিও প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ে শেষ করার জন্য কাজ করা হচ্ছে।

একটি কোম্পানিকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ‘রোড শো’ ও বিডিংয়ের ২টি অতিরিক্ত ধাপ পার করতে হয়। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রথমে কোম্পানিগুলোর ‘রোড শো’ আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাতে টাকা সংগ্রহ করতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যাবতীয় বিষয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা অবহিত হতে পারেন। এর পরবর্তীতে নিলামের জন্য বিডিংয়ের অনুমোদন পেতে হয়।

এই রোড শো আয়োজনে একটি কোম্পানির ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়। অথচ যে উদ্দেশ্যে এই আয়োজন করা হয়, তা পূরণ হয় না। যাতে করে কোম্পানির এই ব্যয় সুফল বয়ে আনছে না। কারন সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বিডিংয়ের সময় আবারও বিভিন্নভাবে তাদের পরিবর্তিত অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরতে হয়।

এদিকে রোড শো অনুষ্ঠানটি এখন অনেকটা আনন্দ করার মতো হয়ে গেছে। যেনো শুধু খাওয়ার জন্যই উপস্থিতি। তবে এই খাওয়া উপভোগ করতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। যাতে ‘রোড শো’ দল বেধে খেতে যাওয়ার বাহিরে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিনিধিদের খাওয়া উপভোগ করার জন্য যেতে বলা হয়ে থাকে। এতে এক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহন করে।

আইডিএলসি ইনভেষ্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘রোড শো’ এর অনেক পরে বিডিং হলে, ওই সময়ের মধ্যে একটি কোম্পানির আর্থিক হিসাবসহ ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন হয়। যাতে বিডিংয়ে ‘রোড শো’র কার্যকারিতা কমে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে তোলার জন্য বিডিং অনুমোদন হওয়ার পরে ও বিডিং শুরু হওয়ার আগে ‘রোড শো’ আয়োজন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বর্তমানের এজিএমের ন্যায় অনলাইনে ‘ওয়েব শো’ করার সুযোগ রাখা যেতে পারে। এতে করে একটি কোম্পানির ব্যয় কমে আসবে।

এক মার্চেন্ট ব্যাংকের সিইও বিজনেস আওয়ারকে বলেন, শুরুতেই কোটি টাকা ব্যয় করে ‘রোড শো’ আয়োজনের কোন স্বার্থকতা দেখতে পাচ্ছি না। এখানে শুধুমাত্র কোম্পানির টাকা ব্যয় এবং কিছু মানুষের পেটপুরে খাওয়া ছাড়া কিছুই নেই। এই ‘রোড শো’ একান্তই করতে হলে, সেটা বিডিং অনুমোদনের পরে করা উচিত। এতে করে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের যথাসময়ে কোম্পানির চিত্র জানার মাধ্যমে দর প্রস্তাবে সহায়ক হবে।

প্রিমিয়ামসহ শেয়ারবাজারে আসতে চাইলে পাবলিক ইস্যু রুলস-২০১৫’তে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই পাবলিক ইস্যু রুলস জারি করা হয়েছে। এরপরে বেশ কিছু কোম্পানি ‘রোড শো’ সম্পন্ন করেছে। তবে বিডিং অনুমোদন পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে কয়েক বছর পর্যন্ত।

`রোড শো’ সম্পন্ন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে – ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এ্যাপোলো হাসপাতাল ‘রোড শো’ সম্পন্ন করে। এছাড়া একই বছরের ১২ এপ্রিল আমরা নেটওয়ার্ক, ৩০ জুন বসুন্ধরা পেপার মিলস, ২৪ জুলাই আমান কটন ফাইবার্স, ৯ অক্টোবর বেঙ্গলপলি অ্যান্ড পেপার স্যাক লিমিটেড, ১৯ অক্টোবর রানার অটোমোবাইলস, ২৪ অক্টোবর পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, ৬ অক্টোবর ডেল্টা হসপিটাল, ১৮ অক্টোবর ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ ‘রোড শো’ সম্পন্ন করে। এছাড়া ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল এ্যাস্কয়ার নিট কোম্পোজিট, ১৯ এপ্রিল শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের, ১৫ অক্টোবর এনার্জিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিজ, ১৯ অক্টোবর এডিএন টেলিকম ও ৫ ডিসেম্বর লুব-রেফ বাংলাদেশ রোড শো সম্পন্ন করে। আর ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বারাকা পতেঙ্গা, ২৯ মার্চ স্টার সিরামিকস ও ২২ এপ্রিল মডার্ন স্টিল মিলসের রোড শো সম্পন্ন হয়। এরপরেও কিছু কোম্পানির ‘রোড শো’ হয়েছে।

এই ‘রোড শো’ সম্পন্ন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪ বছর পরে সম্প্রতি বিডিংয়ের অনুমোদন পেয়েছে ইনডেক্স অ্যাগ্রো। তবে এখনো বিডিংয়ের তারিখ নির্ধারন হয়নি। এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানির আর্থিক অবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। যাতে করে ৪ বছর আগে ‘রোড শো’ এর মাধ্যমে তুলে ধরা চিত্র এখন বিডিংয়ে কোন কাজেই লাগবে না। এছাড়া ৪ বছর আগে দেখা একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক চিত্র এখন ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক।

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে এই দীর্ঘসূত্রিতার কারনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) থেকে গুটিয়ে নিয়েছে এ্যাপোলো হসপিটাল ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো দুটি ভালো কোম্পানি। দীর্ঘ ৩ বছরের যাত্রায় তা সংগ্রহ করা না গেলেও বিকল্প উপায়ে এরইমধ্যে কোম্পানি দুটির আইপিওতে আসার উদ্দেশ্য পরিপালন হয়ে গেছে। তাই আপাতত শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ প্রয়োজন পড়ছে না কোম্পানি দুটির।

আইডিএলসি ইনভেষ্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রোড শো’ করার পরে বিডিং অনুমোদনে দীর্ঘ সময়ের ক্ষেত্রে কোম্পানির উদ্দেশ্য অনেক সময় ব্যাহত হয়। একটি কোম্পানির টাকার দরকার এখন, কিন্তু শেয়ারবাজার থেকে যদি এক বছর পরে পায় তাহলে তা কাজে লাগানো কঠিন। এ ছাড়া আগে আইপিও পক্রিয়া শুরু করে কোম্পানিগুলো ঋণ নিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে। যা আইপিওর টাকা দিয়ে পরিশোধ করা হতো। কিন্তু এখন আইপিও’র টাকায় ঋণ পরিশোধে সীমাবদ্ধতা থাকায় তাও সম্ভব হচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/১৮ অক্টোবর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: