স্পোর্টস ডেস্কঃ লখনৌ সুপার জায়ান্টস তুলেছিল ৪ উইকেটে ১৬৫। আইপিএলের এবারের আসরে যেভাবে রানবন্যা ছুটছে, তাতেই এই সংগ্রহকে ভালো বলার উপায় নেই। তাই বলে দশ ওভারের আগেই খেলা শেষ হয়ে যাবে?
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড আর অভিষেক শর্মা মিলে ৯.৪ ওভারেই ম্যাচ বের করে নেন। একটি উইকেটও ফেলতে পারলেন না, লখনৌ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে কথা হওয়া স্বাভাবিক।
অধিনায়কের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হতে পারে, লখনৌ মালিক রাগও করতে পারেন। কিন্তু সেটা মাঠের মধ্যে কেন? ম্যাচশেষে দেখা যায়, লখনৌ দলের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বেশ চটে গিয়েছেন রাহুলের ওপর। মাঠের মধ্যেই লোকেশ রাহুলকে বকতে দেখা যায় তাকে।
রাহুলের হাবেভাবে মনে হচ্ছিল, তিনি তার দলের মালিককে কিছু বোঝাতে চেষ্টা করলেও তিনি তা মোটেই শুনতে চাইছিলেন না। বরং বেশ রাগতভাবে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। তার বিরক্তি প্রকাশের সময় রাহুলের শুকনো মুখ দেখে ভীষণ বেদনাহত সমর্থকরা।
মালিকের এমন আচরণ নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাবেক পরিচালক জয় ভট্টাচার্জ তো বলেই ফেললেন, খেলোয়াড়দের জন্য ‘অপ্ট আউট’ কার্ডের ব্যবস্থা রাখা উচিত, যাতে তারা চাইলেই কোনো দল ছাড়তে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল মাঠের মধ্যে এক ক্রিকেটারের সঙ্গে কর্ণধারের বাক্য বিনিময় দেখছিলাম। অতীতেও এমন কিছু নিদর্শন অবশ্যই আছে। বোর্ড সেক্ষেত্রে একটু ক্রিকেটারদের কথাও যদি চিন্তাভাবনা করে, তাদের পছন্দ-অপছন্দ বাছার সুবিধা দেয় তাহলে কেমন হয়?’
এরপর নাইটদের সাবেক ডিরেক্টর জয় আরও লিখেছেন, ‘যদি সব প্লেয়ারের অপ্ট আউট কার্ড থাকে, তাহলে কেমন হয়? যার অর্থ সেই ক্রিকেটারের চাইলে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে না বলতে পারে। অন্য সব ফ্র্যাঞ্চাইজি সেই ক্রিকেটারকে চাইলে নিতে পারবেন, সেই একটি দল বাদ দিয়ে। আইপিএলের নিলামের আগেই বিসিসিআইকে ক্রিকেটাররা তা জানিয়ে দেবে এবং নির্দিষ্ট অপছন্দের ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও সে কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। বিসিসিআই এই বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখবে, সেক্ষেত্রে দুজনের সম্মান থাকবে।’
অনেকেই মনে করছেন, ম্যাচ হারের পর দলের মালিকের আবেগী হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অধিনায়কের সঙ্গে যে কোনো আলোচনা লোকসম্মুখে না হওয়াই ভালো।
জিও সিনেমায় নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার স্কট স্টাইরিস বলেছেন, ‘তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক, স্বাভাবিকভাবেই দল নিয়ে তিনি আবেগী। নিজের দলকে বেদম পিটুনি খেতে দেখেছেন। আবেগী হওয়া ঠিক আছে। তবে এই ধরনের আলোচনা গোপনে হওয়াই ভালো। স্টেডিয়ামে অনেক ক্যামেরা, তারা কোনো কিছুই মিস করে না।’
চেন্নাই সুপার কিংসের সাবেক ক্রিকেটার এস বদ্রিনাথ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আলোচনা সবসময়ই স্বাস্থ্যকর। তবে এটা গোপনে হতে পারতো।’
গত দুই বছরের মধ্যে অন্যতম ধারাবাহিক দল লখনৌ সুপার জায়ান্টস। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও শেষ দুবারই প্লে অফ খেলেছে তারা। এবারও লখনৌর সামনে প্লে অফে খেলার সুযোগ আছে। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা ষষ্ঠ স্থানে।
বিজনেস আওয়ার/০৯ মে/ রানা